তখন আমি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। আমার ছোট মামার বিয়ে। বিয়ের দিন বেশি রাত হয়ে যাওয়ায় কনের বাড়িতেই রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। বড়দের ঘুমানোর জায়গা করে দেওয়া হলো। ছোটরা সিদ্ধান্ত নিল সবাই মিলে গল্প করে রাত কাটানোর। কিন্তু খুব ঘুম পাচ্ছিল আমার। পুরো বাড়ি খুঁজেও জায়গা পেলাম না কোথাও। হঠাৎ দেখি একটা ঘরে ডিম লাইট জ্বলছে, আর সবচেয়ে বড় কথা বিছানাটা খালি। বিছানা খালি পেয়ে পৃথিবীর আর কোনো কিছু নিয়ে না ভেবে টুপ করে সেখানেই শুয়ে পড়লাম আমি। আহ্! কী নরম বিছানা, যেন তলিয়ে গেলাম একেবারে। একটু শীত শীত লাগছিল, তাই চাদর দিয়ে পুরো শরীর ঢেকে দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ঘুম। একটু পরই ঘটল ঘটনাটা। এই ঘরটা যিনি দখল করে ছিলেন, বাথরুম থেকে বের হলেন তিনি। নরম বিছানা পেলে যাদের লাফিয়ে পড়ার শখ থাকে, তিনিও সেই দলের অন্তর্ভুক্ত। শখ পূরণের জন্য তিনি তাঁর নাদুসনুদুস শরীর নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন বিছানায়, একেবারে ঠিক আমার ওপর। তারপর যা হওয়ার তা-ই হলো। গলা ফাটানো এক চিৎকার দিলাম আমি। আর মহিলাটি ‘ভূত...! ভূত...! করে চিৎকারর করতে করতে ঘর থেকে বের হলেন। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সটকে পড়লাম আমি। সবাই যখন ভূত দেখতে এল, তখন আমিও যোগ দিলাম তাদের সঙ্গে। কেউ বুঝতেও পারল না যে ভূতটা আমি। শুধু যখন আমি কোমর ব্যথা নিয়ে বিছানায় পড়ে ছিলাম, তখন আম্মু একটু সন্দেহ করেছিলেন। সবার চোখ ফাঁকি দিলেও মায়ের চোখ তো আর ফাঁকি দেওয়া যায় না, ভূত হলেও না।