যখন কিআর ‘ভূতসংখ্যা’র জন্য গল্প লিখতে বসতে যাব, ঠিক তখনই ভূতটা হাজির হলো! ভূতটা ভীষণ বোকা। নাহলে দিনে-দুপুরে কোনো ভূত এভাবে কারও বাসায় এসে বসে? অবশ্য তাকে দেখে আমার প্রথমে মনেই হয়নি যে সে ভূত! মনে হয়েছিল, বাসায় বুঝি চোর-ডাকাত ঢুকে পড়েছে!
পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে বাসায় এসেছি। গোসল করে, ‘ভূতসংখ্যা’র জন্য লেখা তৈরি করতে বসতে যাব, তখনই আমার টেবিলের নিচ থেকে ভূতটা বের হলো। ভূতটার পরনে বোরকার মতো একটা কালো জামা। তার আপাদমস্তক তা দিয়ে ঢাকা। তাই চেহারা দেখা যাচ্ছে না। ও যখন বের হলো, আমি মারাত্মক রকম ভয় পেয়ে গেলাম। এমনিতেই বাসায় আমি একা, তার ওপর টেবিলের নিচ থেকে এমন আপাদমস্তক ঢাকা একজন বের হলে কে না ভয় পায়? আমি আরেকটু হলে অজ্ঞানই হয়ে যেতাম। কিন্তু ভূতটা তখনই বলল, ‘ভয় পেয়ো না। আমি তোমাকে সাহায্য করতে এসেছি।’ আমি মনে মনে বললাম, ‘খাইছে আমারে! এ তো দেখি কথাও বলে!’ আর মুখে বললাম, ‘ম-ম-মানে?’ ভূত বলল, ‘আমি চোরও না, ডাকাতও না। আমি ভূত!’ ওর এই কথাটা শুনে কেন যেন বেশ হাসি পেল। অনেক কষ্টে হাসি চেপে বললাম, ‘তুমি ভূত? আমি তো জানতাম, ভূত রাতে দেখা দেয়। তুমি দিনে এখানে কী করছ? তাও আবার টেবিলের নিচে?’ ভূতটা বলল, ‘তুমি কিআর ভূতসংখ্যায় গল্প পাঠাবে, তা জানতে পেরেছি আমি। তাই ভাবলাম তোমাকে একটু সাহায্য করি!’ আমি আর কী বলব! আমার মাথা তখন প্রায় হ্যাং হয়ে গেছে! আমার অবস্থা দেখে ভূতটা বলল, ‘সমস্যা নাই। গল্পটা কিআতে ছাপা হবে।’ আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘তুমি কীভাবে বুঝলে?’ ভূত বলল, ‘তুমি ভাবছ আগে ছাপায়নি বলে এখনো ছাপাবে না? কে বলেছে? একবার না ছাপিলে, লেখা পাঠাও যত খুশি ততবার! দেখো, আমি বললাম তোমার লেখা ছাপাবে।’ বলেই ভূতটা উধাও। কোন দিক দিয়ে, কীভাবে উধাও হলো তাও বুঝলাম না! আমি কিছুক্ষণ হাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। ভাবলাম, ‘ধুত্তরি ছাই! কী ছাতা-মাথা! পরীক্ষা দিতে দিতে মনে হয় মাথাটাই গেল!’ পরমুহূর্তেই কী ভেবে যেন এই অভিজ্ঞতাই লিখতে বসলাম। কিআতে গল্পটা ছাপা হলে বুঝব ভূতটা সত্যিই...!!!