অ্যাডভেঞ্চার, আমার মতে সেটাকেই বলে, যা কখনো পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হয় না। ‘হঠাৎ ভাবলাম আর তল্পিতল্পা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম’–এর মতো আরকি। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের বরিশাল ভ্রমণটিও খানিকটা এমনই ছিল। রাত নটা নাগাদ ঠিক করলাম, বরিশাল যাওয়া যায়। কিশোর আলোর নিয়মিত প্রদায়ক আলিমুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বরিশালের উদ্দেশে।
সরাসরি বাসে গেলে একঘেয়েমি লাগতে পারে ভেবে মাওয়াঘাট হয়ে বাস, ফেরি, আবার বাসযোগে পৌঁছে গেলাম বরিশাল। শীতকে অবজ্ঞা করে শীতের জামা না নেওয়া যে কতটা বোকামি, তা মাওয়ার ফেরির ছাদে বুঝতে পারছিলাম। অবশ্য পরপর কয়েক কাপ চা খানিকটা বাঁচিয়েছিল।
বরিশাল পৌঁছে শুরু হল আমাদের পদব্রজে ঘোরাঘুরি। গুগল ম্যাপ হাতে নিয়ে মাঠ, ঘাট, সাঁকো দিয়ে পৌঁছে গেলাম লাকুটিয়া জমিদার বাড়িতে। সিনেমার জমিদার বাড়ির মতো হবে ভাবলেও পৌঁছে আশাহতই হলাম। প্রধান ফটক দিয়ে ঢোকার পর একটা ভবনের ধ্বংসাবশেষ বাদে আর কিছুই চোখে পড়ল না। তবে এরপর যে জায়গাটিতে গেলাম, তা আমাদের নিরাশ করেনি। দূর্গাসাগর দিঘী, চন্দ্রদ্বীপের পঞ্চদশ রাজা শিবনারায়ণ এই বিশাল জলাধারটি খনন করেন। অন্যান্য দিঘীর সঙ্গে এটির মূল পার্থক্য যে এর মাঝবরাবর একটি দ্বীপের মতন রয়েছে।
বরিশাল কিআ বুক ক্লাবের সভায় অংশ নিয়ে, কেবিন না পেয়ে শীতের মধ্যে লঞ্চের ডেকে শুয়ে শুয়ে ফেরারও পরও বলব, হুট করে বরিশাল ভ্রমণ কিন্তু ব্যর্থ হয়নি!