পয়সা কেমন হাঁটতে জানে

জাদুকে আমরা নিজের অজান্তেই কখনো কখনো অলৌকিক কিছু বলে ভেবে থাকি। অলৌকিকতার মোড়কে এই যে জাদু, তোমরা জানো কি, এর পুরোটা জুড়েই কিন্তু বিজ্ঞান। আর বাদবাকি যা তা হলো জাদুকরের বুদ্ধিমত্তা, বাক্পটুতা আর অভিনয়।

আজকের জাদু

দুটি দেশলাই বাক্স, দুটিই সাধারণ। তবে এর কোনোটির ভেতরেই কাঠি নেই, একদম ফাঁকা। জাদুকর এবার তাঁর দর্শকদের কাছ থেকে একটা কয়েন, অর্থাৎ ধাতব মুদ্রা চেয়ে নিলেন। দর্শকদের যে কারো কাছ থেকে চিহ্ন নিয়ে নিলেন তাতে। সেটাকে তিনি এবার দর্শকদের দেখিয়েই রেখে দিলেন যেকোনো খালি একটা দেশলাই বাক্সের ভেতরে। এবং দর্শকদের বললেন তাঁরা যেন ভালোভাবে খেয়াল রাখেন কোন বাক্সটিতে কয়েনটি রাখা হলো। এবার জাদুকর দুটি বাক্সকেই মুখোমুখি করে একত্র করে রাখলেন। বিড়বিড় করে বললেন, ‘ইলি ইলি, গিলি গিলি। হোকাস ফোকাস। অ্যাবরা কা ড্যাবরা। ছু-মন্তর-ছু।’ এরপর কেমন বিচিত্র ভঙ্গিতে হাত নাড়ালেন তিনি। ধীরে ধীরে কয়েন রাখা বাক্সটি খুললেন। অবাক ব্যাপার, কয়েনটি তার মধ্যে নেই! বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতেই তিনি এবার খুললেন দ্বিতীয় বাক্সটি, যেটি ছিল ফাঁকা।

কীভাবে সম্ভব? দ্বিতীয় ফাঁকা বাক্সটিতেই জাদুর কোনো মন্ত্রবলে দর্শকদের স্বাক্ষর করা কয়েনটিই অবলীলায় চলে এল।

তবু তো কৌশল

জানি, সঙ্গে দেওয়া ছবিগুলো দেখেই তোমরা সহজে আঁচ করে নিতে পেরেছ ব্যাপারটি। তবু বলি, শোনো...

দু-দুটি খালি দেশলাই বাক্স জোগাড় করে নাও এই জাদুটি দেখানোর জন্য। চিত্র-২ অনুযায়ী বাক্স দুটির ড্রয়ারগুলোর ঠিক নিচে যেকোনো এক দিকটায় কয়েন আসা-যাওয়া করতে পারে মতো করে খাঁজ কেটে নাও। চিত্র-১ দেখো, ঠিক সেইমতো। এবার যে বাক্সেই কয়েনটি রাখো না কেন, ঠিক খালি বাক্সটির খাঁজকাটা অংশের সঙ্গে কয়েন রাখা বাক্সটির খাঁজকাটা অংশটি মুখোমুখি করে রাখো। রাখার সময় সাধারণভাবে না রেখে যদি একটু ঝাঁকিয়ে রাখতে পারো, তবে তুমি নিজেই অনুভব করবে যে কয়েনটি খাঁজকাটা ফুটো দিয়ে অন্য বাক্সে চলে গেছে। তেমনটি যদি না পারো, তবে চিত্র-৩-এর মতো করে নিচে খালি বাক্সটি এবং খাঁজকাটা ফুটোটি মিলিয়ে ওপরে কয়েনভর্তি বাক্সটি রাখো।

মন্ত্র বলা, হাত নাড়ানো—এসব কিছুই না, কার্যসিদ্ধির জন্য এটি কেবল তোমার অভিনয়। যে যত ভালো করে চর্চা করবে, অভিনয় করতে পারবে—সে-ই হবে তত বড় জাদুকর।

জাদুর পরশে জেগে উঠুক সবাই। শুভকামনা তোমাদের সবার জন্য।