বেশি গরমে মেট্রোরেল চলাচল কি ব্যাহত হতে পারে

মেট্রোরেলফাইল ছবি

ঝড় হলে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঝড় হলে পদ্মা সেতুও বন্ধ করে দেওয়া হয়। রেললাইনের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে রেল চলাচলে সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। রেলগাড়ি ধীরে চলে। গরম বেশি হলে বা তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ঢাকার গণপরিবহনে অন্যতম সংযোজন মেট্রোরেল কী করবে?
এ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেনের কাছে জানতকে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তাপমাত্রা সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করছি।

আবহাওয়ার তাপমাত্রা আর রেলের তাপমাত্রা আলাদা। এখন পর্যন্ত রেলের তাপমাত্রা ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। ৫৫ ডিগ্রিতে যদি এই তাপমাত্রা উঠে যায়, তাহলে মেট্রোরেলের গতি কমিয়ে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে ট্রেন চলাচলের সংখ্যাও কমে যাবে।

প্রথম আলোয় (১৭ এপ্রিল ২০২৪) প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয়েছে, বৈশাখের গরমে চারদিকে হাঁসফাঁস অবস্থা। রাজধানী ঢাকাতেই তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই। এই গরমে দেশের রেললাইনগুলোতে তাপমাত্রা গিয়ে ঠেকছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি। এতে লাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ গতি কমিয়ে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, সারা দেশে স্থান ও রেললাইনের বয়স বিবেচনায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটাকে রেলের ভাষায়, স্ট্যান্ডিং অর্ডার বা স্থায়ী আদেশ বলা হয়। কারণ, প্রতিবছরই গরমের সময় এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে রেল কর্তৃপক্ষ। মূলত বেলা ১১ টাকা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গতি কমানো হয়। কারণ, এ সময়টাতেই রেললাইন বেশি গরম হয়।

ঢাকায় কালবৈশাখীর সময়ও মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বইলে পদ্মা সেতু কি চালু থাকবে? এ বিষয়ে কিশোর আলোয় ২৪ জুন ২০২২ প্রকাশিত হয়েছিল: এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ঝোড়ো বাতাস বইতে থাকে, তাহলে সেতুতে কি যানবাহন চলতে থাকবে?

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা সেতুর নকশা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এইসিওএম করপোরেশনের প্রকৌশলীদের প্রকাশিত প্রবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে, পদ্মা সেতু খারাপ আবহাওয়াতেও গাড়ি এবং ট্রেন চলাচলের উপযোগী করেই তৈরি করা হয়েছে। তবে চরম খারাপ আবহাওয়ায় যান চলাচলের ওপরে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। খুব জোরে বাতাস বইতে শুরু করলে প্রথমে বাস-ট্রাকের মতো ‘পাশে বড়’ (লার্জ সাইডেড) যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। ঝোড়ো বাতাসের সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য সীমা হলো ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার (যা বেড়ে ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার হয়)। অর্থাৎ তখন যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এ নিয়ম গাড়ির জন্য। অবশ্য বাস্তবে বাতাসের বেগ কত হলে যান চলাচল বন্ধ করা হবে, তার নিয়ম প্রণয়ন ও প্রয়োগ করবে বাংলাদেশ সেতু বিভাগ।

ট্রেনের জন্য নকশাকারেরা একই সীমা (ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার) পর্যন্ত বাতাসের বেগ গ্রহণীয় বললেও পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য অধ্যাপক আইনুন নিশাত জানাচ্ছেন, ৬০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে শুরু করলেই ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে এই নিয়ম তৈরি ও প্রয়োগ করবে রেলওয়ে বিভাগ। পদ্মা সেতুর রেললাইন একমুখী। কাজেই ট্রেন আসা-যাওয়া রেল বিভাগকে কঠোর শৃঙ্খলার সঙ্গেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।