আনন্দঘণ্টার উদ্বোধন হলো উদয়ন স্কুলে

এখনকার শিশু-কিশোরদের আনন্দ-বিনোদনের অনেকটাই মুঠোফোন বা কম্পিউটার-নির্ভর। স্ক্রিনের বাইরেও যে আনন্দের অনেক উপকরণ আছে, সে কথা তারা ভুলতে বসেছে—এমন অভিযোগও নতুন কিছু নয়। আর তাই নতুন প্রজন্মের ভাবনার জগৎটা আরও একটু প্রসারিত করতে মাসিক ম্যাগাজিন কিশোর আলো দেশের বিভিন্ন স্কুলে চলে যাচ্ছে ‘আনন্দঘণ্টা’ নিয়ে! অনলাইন নয়, এই আয়োজনে গুণীজনেরা শিক্ষার্থীদের কাছে সরাসরি উপস্থিত হচ্ছেন অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্য, শিক্ষামূলক কর্মশালা, জাদু, গান আর কুইজ নিয়ে। এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়ে গেল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

ড্যান কেকের সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির একঝাঁক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর, ড্যান কেকের হেড অব মার্কেটিং শাহীদ বিন সারওয়ার ও উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম।

কিশোর আলোর সহকারী সম্পাদক পাভেল মহিতুল আলমের সঞ্চালনায় শুরু হওয়া এই আয়োজনের প্রথমেই বক্তব্য দেন জহুরা বেগম। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে তিনি গানও পরিবেশন করেন। আহ্বান জানান ভুবনজুড়ে আনন্দধারা বইয়ে দেওয়ার। ভাষাবিষয়ক কর্মশালায় অধ্যাপক তারিক মনজুর বাংলা বানান নিয়ে কিছু মজার কৌশল শিখিয়ে দেন। কে জানত, হাতের পাঁচ আঙুলের সাহায্যে বাংলা ব্যাকরণের কঠিন নিয়ম মনে রাখা যায়! ধাঁধা কিংবা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা এ সময় কিশোর আলো ও ড্যান কেকের সৌজন্যে পুরস্কার জিতে নিতে শুরু করে।

কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক নিজের বক্তব্যে প্রচুর বই পড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বই পড়লে মানুষের কল্পনাশক্তি বাড়ে। আনিসুল হকের সঙ্গে সব শিক্ষার্থী উচ্চ স্বরে তিনটি ‘ম’কে ‘না’ বলে। মিথ্যা, মাদক এবং না বুঝে মুখস্থ করা, এই তিন ‘ম’ থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করেন তিনি। তিনি বক্তব্যের মধ্যেই কুইজের মতো প্রশ্ন করেন, যার সঠিক উত্তর দিতে পারায় পুরস্কৃত হয় শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া কয়েকজন ছাত্রছাত্রী গান গেয়ে কিংবা কবিতা আবৃত্তি করে জিতে নেয় আকর্ষণীয় পুরস্কার।

আনন্দঘণ্টার অন্যতম আকর্ষণ ছিল জাদুকর স্বপন দিনারের জাদু। চোখের সামনে আগুন বা তাপ ছাড়াই চাল থেকে মুড়ি হয়ে গেল তাঁর জাদুতে! সেই মুড়ি আবার খেয়ে পরখও করে দেখে ছাত্র-ছাত্রীরা। জমজমাট জাদু প্রদর্শনের পর শাহীদ বিন সারোয়ার বক্তব্য দেন। সবাইকে শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও যত্ন নিতে বলেন তিনি।

ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মেহরাবের গান ছিল সর্বশেষ। সবার সঙ্গে গলা মিলিয়ে গান করেন তিনি। তাঁর গানের পর গ্রুপ ছবি আর অটোগ্রাফের মাধ্যমে শেষ হয় আনন্দঘণ্টা। ১ অক্টোবর কিশোর আলোর জন্মদিনে এই আয়োজনের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে।