এক মাইল হাঁটতে কত সময় লাগে? হাঁটার গতি বাড়ানোর সহজ উপায়
তুমি কি জানো, একজন মানুষের এক মাইল হাঁটতে গড়ে সময় লাগে ১৫ থেকে ২২ মিনিট? এটা নির্ভর করে হাঁটার গতি আর জায়গার ওপর। কেউ যদি নিয়মিত সমতল পথে হাঁটে, তার এক মাইল পাড়ি দিতে সময় লাগতে পারে ১৫ মিনিটের কম। আবার কেউ যদি ব্যায়ামে নতুন হয় বা উঁচু-নিচু পথে হাঁটে, তাহলে সময়টা ২২ মিনিটের কাছাকাছি, এমনকি তারও বেশি হতে পারে।
চলো, জেনে নেওয়া যাক কী কী কারণে হাঁটার গতি বাড়ে বা কমে আর কী করলে তুমি আরও দ্রুত হাঁটতে পারবে।
হাঁটার গতি কোন কোন কারণে বদলায়—
• ফিটনেস বা শারীরিক সক্ষমতা: যাদের হৃদ্যন্ত্র আর পেশি ভালোভাবে কাজ করে, তারা সাধারণত দ্রুত হাঁটে। নিয়মিত ব্যায়াম করা কেউ নতুনদের তুলনায় অনেক দ্রুত হাঁটতে পারে।
• পথের ধরন: উঁচু বা অসমতল পথে হাঁটলে গতি কমে যায়, কিন্তু সমতল ও মসৃণ পথে হাঁটা তুলনামূলকভাবে সহজ ও দ্রুত হয়।
• আবহাওয়া: খুব গরম, ঠান্ডা বা ঝোড়ো বাতাসের সময় হাঁটার গতি কমে যেতে পারে।
• মনোভাব ও শক্তি: শরীর ক্লান্ত থাকলে বা মন চাঙা না থাকলে গতি কমে যায়। অসুস্থ লাগলে বা হরমোনের প্রভাবে শক্তি কম থাকলেও হাঁটা ধীর হয়ে যেতে পারে।
বয়স বাড়লে গতি কেন কমে যায়
বয়স বাড়লে শরীরের পেশি আর জোড়ার নমনীয়তা কিছুটা কমে যায়। পেশির শক্তি কমলে প্রতিটি পদক্ষেপ একটু ধীর হয়। আবার জোড়া শক্ত হয়ে গেলে হাঁটার ভঙ্গি বদলে যায়।
এ ছাড়া স্নায়ুতন্ত্রেও কিছু পরিবর্তন আসে, যার ফলে ভারসাম্য ও সমন্বয় কিছুটা কমে যায়—তখন মানুষ হাঁটে একটু সাবধানে, ধীরে।
কিন্তু ভালো খবর হলো নিয়মিত ব্যায়াম করলে এসব পরিবর্তন অনেকটাই কমানো যায়। নিয়মিত শক্তি বাড়ানোর আর নমনীয়তা বাড়ানোর ব্যায়াম করলে বয়স বাড়লেও তুমি আগের মতো দ্রুত হাঁটতে পারবে।
কীভাবে হাঁটার গতি বাড়ানো যায়—
গতি বাড়াতে চাইলে ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং করতে পারো।
মানে, কিছুক্ষণ দ্রুত হাঁটো, তারপর একটু ধীরে হাঁটো। এভাবে গতি বদলে হাঁটলে হৃদ্যন্ত্র ও পায়ের পেশি দুই-ই শক্ত হয়।
হাঁটার ভঙ্গিটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ—
• সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাঁটো, কোমর ও কাঁধ সোজা রাখো।
• পেট টানটান রাখো, সামনে তাকিয়ে হাঁটো।
• কাঁধ পেছনে রাখো, নাক দিয়ে শ্বাস নাও, মুখ দিয়ে ছাড়ো।
• হাত ৯০ ডিগ্রি কোণে বাঁকিয়ে ছন্দমতো দোলাও। এতে শরীর সামনের দিকে দ্রুত এগোয়।
হাঁটার গতি বাড়াতে সাহায্য করে যে ব্যায়ামগুলো
হাঁটার গতি বাড়াতে পায়ের পেছনের অংশ অর্থাৎ গ্লুটস (নিতম্বের পেশি) আর হ্যামস্ট্রিংস (ঊরুর পেছনের পেশি) শক্ত করা দরকার। এগুলোই প্রতিটি পদক্ষেপে শক্তি জোগায়। নিয়মিত নিচের ব্যায়ামগুলো করলে দারুণ ফল পাওয়া যায়—
• স্কোয়াট: পায়ের সামনের আর পেছনের পেশি শক্ত করে।
• লাঞ্জ: এক পা করে কাজ করায় ভারসাম্য ও সমন্বয় বাড়ে।
• ক্যাফ রেইজেস: পায়ের নিচের অংশের পেশি শক্ত করে।
এই ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করলে শুধু হাঁটার গতি নয়, পায়ের শক্তিও অনেক বেড়ে যাবে।
তাই নিয়মিত হাঁটো, ভঙ্গি ঠিক রাখো আর ব্যায়াম করো—তাহলেই এক মাইল পথ শেষ হবে আরও দ্রুত!