সাধারণত বাসায় ডায়েরি লিখি আমি। কিন্তু এসএসসি দিয়ে বেকার সময় কাটাচ্ছি এখন। তাই ভাবলাম, আমার জীবনের একটা মজার ঘটনা তো লিখতেই পারি। তখন আমার বয়স ৫ কিংবা ৬ হবে। আমাদের পাশের বাসার এক বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে। নতুন বউ আসবে বলে বাসায় আনা হলো নতুন ফ্রিজ, টিভি। সবার মতো আমিও বিয়ে দেখতে গেলাম। আসার সময় ফ্রিজের নিচের শোলার কাঠামোটা আমার খেলনা চুলা বানানোর জন্য নিয়ে এলাম। শোলাগুলো খুলে খুলে যায়। তাই খেলার সময় শোলার টুকরাগুলো আগ্রহ নিয়ে দেখতে লাগলাম। কী মনে করে শোলার গন্ধ নেওয়ার জন্য নাকের কাছে ধরলাম। অমনি নিশ্বাসের সঙ্গে শোলার টুকরোটা কীভাবে যেন নাকের ভেতর ঢুকে গেল। আমি ভয় পেয়ে কাউকে কিছু বললাম না। সর্দি লাগলে যেমন মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিই, সেভাবেই মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিতে থাকলাম। এভাবে দুপুরে ঘুমিয়ে গেলাম। আম্মু বিকেলে অফিস থেকে এসে দেখলেন নাক ফুলে লাল হয়ে আছে। আমার দেখাশোনার কাজে রাখা আপুকে আম্মু জিজ্ঞেস করলেন, কী হয়েছে। সে বলল, ঠান্ডা লেগেছে হয়তো। কিন্তু মায়ের মন তো মানে না। আম্মু নাক দেখতেই বুঝে গেলেন কাহিনি কী। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। আমি তখনো বুঝতে পারছি না, এতে এত মাথাব্যথার কী আছে। হাসপাতালে যাওয়ার পর যখন ডাক্তার-নার্স ছুরি-কাঁচি নিয়ে আমার কাছে এল, তখন বুঝলাম অবস্থা সুবিধার না। ছোটবেলা থেকেই আমার ইনজেকশনে দারুণ ভয়। ভয় পেয়ে ডাক ছেড়ে কান্না শুরু করলাম। একটু পরে শুনি সবাই হাসছে। কান্না বন্ধ করে ব্যাপার বোঝার জন্য চোখ খুললাম। দেখি কান্নার দমকে নাক থেকে শোলা এমনিই বের হয়ে এসেছে। ছুরি-কাঁচি ধরাই লাগেনি। কী একটা অবস্থা!