আজ বাস্তিল দিবস, কী হয়েছিল এই দিনে
১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই। প্যারিস শহরের লোকজন রাস্তায় নেমেছে। রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে। তাদের লক্ষ্য বাস্তিল নামের এক পুরোনো দুর্গ।
বাস্তিল ছিল ফ্রান্সের একটি কারাগার। শোনা যায়, মাত্র সাতজন বন্দী ছিল তখন সেখানে। তবু বাস্তিল ছিল ক্ষমতার প্রতীক—একটা ভয়, একটা দুঃস্বপ্ন।
রাজা তাঁর ইচ্ছায়, বিচার না করেই, লোকজনকে ধরে এনে পাঠিয়ে দিতেন এই কারাগারে।
মানুষ কেন রাস্তায় নামল?
তখন ফ্রান্সের রাজা ছিলেন ষোড়শ লুই। তিনি রাজপ্রাসাদে রাজকীয় জীবন কাটাতেন—বড় বড় উৎসব, দামি খাবার, রাজসিক পোশাক।
আর সাধারণ মানুষ?
তারা দিনের পর দিন না খেয়ে থাকত। শিশুদের জন্য এক টুকরা রুটিও জোগাড় করতে পারত না।
খাদ্যের দাম আকাশচুম্বী, করের বোঝা অসহনীয়। অথচ ভোটাধিকার বা মতপ্রকাশের অধিকার ছিল না।
যেদিন জনগণ বাস্তিল আক্রমণ করল, সেদিন তারা শুধু একটি ভবন ভাঙেনি, তারা ভেঙেছিল ভয় আর অন্যায়ের প্রাচীর।
বাস্তিল দিবস কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বাস্তিল দখলের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ফরাসি বিপ্লব। এই বিপ্লবের মূল বার্তা ছিল—স্বাধীনতা, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব (Liberty, Equality, Fraternity)। এই তিনটি শব্দই পরে বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।
ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। তৈরি হয় নতুন সংবিধান, যেখানে নাগরিকদের অধিকারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
দিনটি এখন ফ্রান্সের জাতীয় দিবস। প্রতিবছরের ১৪ জুলাই উদ্যাপন করা হয় মহা আয়োজনে।
বাস্তিল দিবস শুধু ইতিহাস নয়, এটি ভবিষ্যতের একটা ইঙ্গিত। যখন মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে, তখন অত্যাচারীরা শক্তিশালী হয়। আর যখন মানুষ জেগে ওঠে, তারা শুধু দেয়াল নয়, পুরোনো শাসন, অন্যায়, অন্য ভাবনাগুলোও ভেঙে দেয়।
আমাদের ‘বাস্তিল’ কী?
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশেও শিক্ষার্থী ও জনতা সাহস দেখিয়েছে। তারা শুধু ন্যায্য ভোট চেয়েছিল, চেয়েছিল সত্য কথা বলার অধিকার, একটা সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন।
তরুণদের হাতেই ছিল সেই আন্দোলনের মূল শক্তি। কারও কারও হাতে বই, কারও হাতে প্ল্যাকার্ড। তারা দেখিয়েছে—এই দেশের কিশোর, তরুণেরা অন্যায় দেখে চুপ করে থাকে না।
বাস্তিলের গেট যেমন একদিন খুলে গিয়েছিল, তেমনি আমাদের ভবিষ্যতের পথও আমাদের হাতে তৈরি হবে। কারণ, আমরা সাহস করে বলব, ‘না, আমরা অন্যায় মানি না। আমরা চাই ন্যায্যতা, চাই বৈষম্য মুক্তি।’
[এআইয়ের সাহায্য নেওয়া হয়েছে]