‘সভা’ শব্দটি শুনলে চট করে মাথায় আসে মুখ গোমড়া একদল লোকের ছবি। একত্র হয়ে যারা গুরুগম্ভীর আলোচনা করছে। কিন্তু কিশোর আলোর মাসিক সভায় থাকে ঠিক এর বিপরীত চিত্র। প্রতি মাসের মতো জুন মাসের সভায়ও ছোটদের মধ্যে ছিল গুণীজনের আনাগোনা।
টুকটাক যেকোনো সমস্যা সমাধানে ‘মাথানষ্ট’ বুদ্ধি কিন্তু বাসার ছোট সদস্যরাই দিতে পারে। গত ১৭ জুন কিশোর আলোর নিয়মিত মাসিক সভা শুরু হয় কিআ সম্পাদক আনিসুল হকের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা দিয়ে। কিআ পাঠকেরা জানায় কীভাবে আরও বেশি পাঠকের হাতে পৌঁছাতে পারে কিশোর আলো। কিআর ভালো-মন্দ নিয়ে কথা নিজেদের মতামত জানায় সভার প্রায় সবাই। আড্ডার এক পর্যায়ে আনিসুল হকের ফেসবুক পেজে শুরু হয় লাইভ। সেখানে জুন মাসের কিশোর আলোর লাইভ রিভিউ দেয় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মনীষা, সঙ্গে দুজন খুদে শিল্পী শোনায় গান। লেখালেখি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সভা থেকে বিদায় নেন আনিসুল হক।
কার্টুন মাস্টারের সঙ্গে গল্প হবে, হবে ছোটখাটো এক কর্মশালা! বুঝতেই পারছ, কোনো এক কমিকস গুরুর কথা বলছি। জুন মাসের কিআড্ডার দ্বিতীয় পর্বে এসেছিলেন ঢাকা কমিকসের প্রতিষ্ঠাতা ও কার্টুনিস্ট মেহেদী হক। শোনান তাঁর কার্টুনিস্ট হওয়ার গল্প। নগর পরিকল্পনা নিয়ে পড়াশোনা করা সত্ত্বেও নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন কার্টুনিস্ট হিসেবে। আরও জানান, ‘কার্টুনের মাধ্যমে গল্প বলা’ নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে শিগগিরই তিনি পাড়ি জমাতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। হাল না ছেড়ে নিজের স্বপ্নপূরণে চেষ্টা চালানোর অনুপ্রেরণা দেন মেহেদী হক।
কার্টুনের আড্ডা শেষে শুরু হয় স্বল্পদৈর্ঘ্যের কর্মশালা। হাতে-কলমে ছবি আঁকতে বসে যায় সবাই। কেউ আবার বানিয়ে ফেলে কমিকসের উদ্ভট সব গল্প। এক এক করে প্রায় সবাই জিতে নেয় ঢাকা কমিকসের পক্ষ থেকে কমিকসসহ নানা উপহার!
‘ফেরা’, ‘বোকা পাখি’ কিংবা ‘ছোট পাখি’র মতো গানগুলো পকেটে করে কিআড্ডায় হাজির হয়েছিল ‘সহজিয়া ব্যান্ড’। দারুণ সব গানের মধ্য ব্যান্ড নিয়ে তাদের নানা প্রশ্ন করে কিআ পাঠকেরা। কঠিন সব প্রশ্নের সহজ সহজ উত্তরের মধ্য দিয়ে নিজেদের গান ও ব্যান্ডের গল্প শোনান তাঁরা। এই ব্যান্ডের বিশ্বাস, ‘জীবন এক উৎসব’। গান ও কথায় পাঁচ সদস্যের সহজিয়া ব্যান্ড কিআড্ডায় দারুণ এক আমেজ তৈরি করে!
সভার শেষ পর্যায়ে ছিল কুইজ। কিশোর আলোর চলতি সংখ্যা থেকে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পাঁচজন জিতে নেয় সেভয়ের সৌজন্যে আইসক্রিমের বিশাল বক্স। ঘটনাবহুল দিনের ইতি কি আর দল বেঁধে ছবি না তুলে টানা যায়? ছবি তোলা আর আইসক্রিম বিতরণের মাধ্যমে শেষ হয় ৮৬ নম্বর কিআড্ডা।