এখনই বন্ধ হচ্ছে না কার্টুন নেটওয়ার্ক

কার্টুন নেটওয়ার্ক—শুধু এই দুটোই শিশু-কিশোরদের কাঠে আবেগের এক নাম। কয়েক প্রজন্ম ধরেই শিশু-কিশোরদের বড় হওয়ার সঙ্গী এ চ্যানেলটি। কার্টুন চ্যানেলের মধ্যে কার্টুন নেটওয়ার্ক সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোর একটি। বছরের পর বছর ধরে টম অ্যান্ড জেরি, ডেক্সটার্স ল্যাবরেটরি, জনি ব্রাভো, পাওয়ার পাফ গার্লস, বেন টেন, স্কুবি ডু, কারেজ দ্য কাওয়ার্ডলি ডগের মতো দারুণ সব মজার কার্টুন উপহার দিয়ে এসেছে কার্টুন নেটওয়ার্ক। এসব কার্টুন দেখে বড় হওয়া প্রজন্মের সবাই বড় একটা ধাক্কা খায়। কারণ, আমেরিকান জায়ান্ট প্রোডাকশন হাউস ও স্টুডিও ওয়ার্নার ব্রোস পিকচারের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে কার্টুন নেটওয়ার্ক। নেটিজেনরা হতাশ হয়ে ভাবলেন, এই বোধ হয় কার্টুন নেটওয়ার্কের শেষ, সবার প্রিয় চ্যানেলটি হয়তো আর থাকছে না।

তাই একীভূত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঝড় বয়ে যায় ফেসবুক, টুইটারে। টুইটারে তো ‘RIP Cartoon Network’ হ্যাশট্যাগটি ট্রেন্ডিংয়ে চলে আসে। যে চ্যানেল দেখে বড় হওয়া, প্রিয় সেই চ্যানেলের এমন বিদায় মেনে নিতে পারছিলেন না কেউই।

ভক্তদের এমন আহাজারি দেখে আর চুপ করে থাকতে পারেনি কার্টুন নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ। ‘একীভূত হওয়া’ মানেই যে চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়, সে বিষয়টি পরিষ্কার করে টুইট করে তারা। অনেকটা মজার ছলে টুইট করে তারা সবাইকে আশ্বস্ত করে, এখনই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না কার্টুন নেটওয়ার্ক, ‘সবার উদ্দেশে বলতে চাই, আমরা মারা যাইনি। বরং এ বছর আমরা ৩০ বছরে পা দিয়েছি। আমাদের ভক্তদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমরা কোথাও যাচ্ছি না। আমরা সব সময় আপনাদের মজার সব কার্টুন উপহার দিয়ে এসেছি। সামনেও আরও অনেক নতুন কার্টুন আসতে যাচ্ছে।’

কার্টুন নেটওয়ার্কের এই টুইট ভক্তদের সাময়িক স্বস্তি দিলেও দীর্ঘ মেয়াদে এটি চ্যানেলটির ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে এখনো সন্দিহান অনেকেই। কারণ, প্রযুক্তির এই যুগে শিশুরা বিনোদনের জন্য আর আগের মতো টেলিভিশনের ওপর নির্ভরশীল নয়। এ জন্য স্বাভাবিকভাবেই কমে এসেছে টেলিভিশনের জনপ্রিয়তা। পাশাপাশি ওয়ার্নার ব্রোস পিকচার্সের এই আচমকা আগমন কার্টুন নেটওয়ার্ক চ্যানেলটির স্বকীয়তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে বলেই অনেকের ধারণা। এই ধারণাও অমূলক নয়। কার্টুন নেটওয়ার্কের সঙ্গে একীভূত হয়েই চ্যানেলটির প্রায় ২৬ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করেছে ওয়ার্নার ব্রোস। তবে কার্টুন নেটওয়ার্ক বিলুপ্ত হচ্ছে না বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেছে ওয়ার্নার ব্রোস। শুধু এখন থেকে ওয়ার্নার ব্রোস অ্যানিমেশন এবং কার্টুন নেটওয়ার্ক স্টুডিও একই সঙ্গে কাজ করবে, কিন্তু আলাদা আলাদা নামে।

মার্কিন উদ্যোক্তা টেড টার্নারের হাত ধরে ১৯৯২ সালের ১ অক্টোবর যাত্রা শুরু হয় কার্টুন নেটওয়ার্কের। এরপর থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি, অল্প সময়েই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যায় চ্যানেলটি। এখনো জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে চ্যানেলটি, বর্তমানে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রায় ৯৪ মিলিয়ন সাবস্ক্রিপশন রয়েছে চ্যানেলটির।

তাই আপাতত চ্যানেলটি যে বন্ধ হচ্ছে না, তা জেনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন ভক্তরা। টুইটারে কেউ কেউ পুরোনো কার্টুনগুলোকে আবারও ক্ল্যাসিক কার্টুন হিসেবে প্রচার করার অনুরোধ জানাচ্ছেন, আবার অনেকে পুরোনো কার্টুন দেখানোর পাশাপাশি নতুন নতুন কার্টুন নিয়ে আসার জন্য কার্টুন নেটওয়ার্কের প্রতি আহ্বান জানান। তবে নতুন কার্টুন হোক বা পুরোনো—সবার প্রিয় কার্টুন নেটওয়ার্ক যে থাকছে, আপাতত এতেই খুশি সবাই।