নিষ্ঠুর নিয়তির অমোঘ সৈনিক
প্রবাসী বন্ধুর সঙ্গে সাপ্তাহিক পডকাস্টে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তেমন বিশেষ কোনো আয়োজন নয়; প্রতি সপ্তাহে কী কী অ্যানিমে, সিনেমা, সিরিজ দেখেছি, কোন কোন বই পড়েছি, কোন গেম খেলেছি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ঘণ্টাখানেক ভ্যাজর-ভ্যাজর। সেসব শুনতে সাধারণত শ্রোতাদের আনাগোনা থাকে না। আমরা নিজেরাই সপ্তাহের ফিরিস্তি দিয়ে, দুজন দুজনকে বিদায় জানিয়ে ভালোয় ভালোয় কেটে পড়ি। নয় মাসে–ছয় মাসে ইন্টারনেটের গলিপথে হারিয়ে গিয়ে দু–একজন পথিক সেখানে পা গলালে আমাদের ভীষণ আনন্দ হয়। এমনই এক শ্রোতা মাস কয়েক আগে হাজির হয়ে আরও একগাদা অ্যানিমের সঙ্গে তুলল জেনশু অ্যানিমের প্রসঙ্গ। তারও বেশ কিছুদিন আগে আমার প্রবাসী বন্ধুও এটা সম্পর্কে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছিল, আমি পাত্তাই দিইনি। আরও স্পষ্ট করে বললে, ভুলে গিয়েছিলাম।
তা বন্ধুদের কথা মাঝেমধ্যে অগ্রাহ্য করা যায়; কিন্তু যখন একাধিক মানুষ এসে কোনো এক বিষয় নিয়ে আওয়াজ তোলে, তখন কৌতূহল হয় বৈকি! তাই ক্রাঞ্চিরোল খুলে দেখতে শুরু করলাম নতুন এই ধারাবাহিক। বন্ধুর কল্যাণে আগেই জেনেছিলাম, এই গল্প মূলত এক অ্যানিমেটরকে নিয়ে, যিনি জাপানে অ্যানিমে তৈরির কাজ করেন। এর আগে বাকুম্যান-এর মতো ফাটাফাটি অ্যানিমে দেখে এ ধরনের অ্যানিমের প্রতি একধরনের সহজাত শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়েছিল। বাকুম্যান জানিয়েছিল, কীভাবে অগাধ স্বপ্ন নিয়ে সাফল্যের খোঁজে ছুটে চলে জাপানের অগণিত মাঙ্গা–আঁকিয়ে। তাদের ব্যর্থতা, সাফল্য, কাজ করার পদ্ধতি আর মাঙ্গা প্রকাশনা সংস্থার খুঁটিনাটি জেনে দারুণ কৃতজ্ঞ বোধ করেছিলাম। আর তাই জেনশুর থেকে প্রত্যাশা একচুল কম করার ক্ষমতা ছিল না।
প্রথম পর্ব দেখে থিতিয়ে গেলাম। নাহ্, যে বিরাট আশা নিয়ে জেনশু শুরু করেছিলাম, নির্মাতারা সে পথে একেবারেই হাঁটেননি। তাঁরা বরং এমন পথে হেঁটেছেন, যাতে আগ্রহ আনা কিঞ্চিৎ কঠিন। কাহিনির শুরুটা এমন—
নাৎসুকো হিরোসে একজন উদীয়মান জনপ্রিয় অ্যানিমেটর। পড়ালেখা শেষ করে খুব অল্প বয়সেই ঢুকে পড়েছে অ্যানিমে তৈরির চাঁছাছোলা জগতে। তবে এর পেছনে তার দীর্ঘদিনের অনুপ্রেরণা ছিল শৈশবে দেখা আ টেল অব পেরিশিং অ্যানিমেটা। ভয়ানক বিষণ্ন সেই অ্যানিমের প্রতিটি দৃশ্য আর সংলাপ তার মুখস্থ। এমনকি ওই অ্যানিমের নির্মাতা কামেতারো সুরুইয়ামা তাঁর এ জগতে আসার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ। আ টেল অব পেরিশিং অবশ্য অ্যানিমে হিসেবে ছিল সুপারফ্লপ, একেবারেই পছন্দ করেননি সাধারণ দর্শক। এ নিয়ে খুব একটা বিচলিত ছিল না নাৎসুকো, বরং বরাবর গল্পের চরিত্রদের ভেবে এসেছে প্রিয় বন্ধুর মতো।
নাৎসুকোর তৈরি প্রথম অ্যানিমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেল। ফলে নির্মাতা জগতে খ্যাতির জোয়ারে ভেসে গেল সে। স্টুডিও থেকে ঘোষণা দিয়ে দেওয়া হলো পরবর্তী অ্যানিমের—হাৎসুকোই: ফার্স্ট লাভ। আর সমস্যাটা বাধল এখানেই। নাৎসুকো একেবারেই আত্মকেন্দ্রিক। বেড়ে ওঠার সময় তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল কীভাবে আঁকাআঁকির বিষয়ে আরও দক্ষ হয়ে ওঠা যায়। জটিল দৃশ্য কল্পনা করা থেকে শুরু করে তা অ্যানিমেতে রূপান্তরের কারিগরি খুঁটিনাটি উদ্ধারের ব্যাপারে নিজেকে সে এতটাই আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল যে জীবনের মানবিক আনন্দ ও সংঘটনগুলো তাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেছে অনায়াসে। হাৎসুকোই অ্যানিমের মূল বিষয়টাই করার কথা ছিল প্রথম প্রেম। কিন্তু প্রেমে একেবারেই অজ্ঞ নাৎসুকো বিষয়টাকে কীভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলবে, তা–ই বুঝে উঠতে পারছিল না। ওপরন্তু একেবারে আত্মনির্ভর হওয়ায় দলের বাকিদের থেকে সাহায্য নিতেও তার বাধে। ছোটবেলা থেকেই যার সব একা একা করে অভ্যাস, সে হঠাৎ অন্যের ওপর নির্ভর করতে পারবে কীভাবে? এই মুখচোরা, একগুঁয়ে স্বভাবের কারণে অফিসের অন্যরাও তাকে ঠিক পছন্দ করতে পারে না, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে না।
ভেবে ভেবে হয়রান নাৎসুকো যখন পাতার পর পাতা কেটে ফেলছে, সহকারীকে ধমক দিয়ে তার কাজও নিজের কাঁধেই তুলে নিচ্ছে, আর বাকিদের পাত্তা দিতে সংকোচ বোধ করছে, এমনই এক সময় বাইরে থেকে খাবার নিয়ে হাজির হলো স্টুডিওর প্রেসিডেন্ট নাওমি। খাবার মুখে তোলার আগে ও মুঠোফোনে সংবাদ ঘাঁটতে গিয়ে দেখল প্রিয় অ্যানিমে নির্মাতা কামেতারোর মৃত্যুসংবাদ। বিষণ্ন নাৎসুকোর মনে পড়ে গেল প্রিয় অ্যানিমের পুরোনো সব দৃশ্য। খেতে খেতে ওই সবই ভাবছিল সে। হঠাৎ কী যেন হলো, মাটিতে লুটিয়ে পড়ল নাৎসুকো। ওপাশ থেকে ছুটে এল নাওমি, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
জ্ঞান ফিরে নাৎসুকো দেখল, সে চলে এসেছে ভিন্ন এক জগতে। বিস্তীর্ণ বালুকাবেলায় বসে আছে। চতুর্দিকে মৃত গাছপালা, নিমেষেই ওর দিকে তেড়ে এল এক বিচিত্র জন্তু। ঘাবড়ে গেল ও। একেবারে শেষ মুহূর্তে ওকে বাঁচাল এক বীর, তলোয়ারের আঘাতে ঘায়েল করল জন্তুটাকে। তারপরই একে একে বাকি আক্রমণকারী জন্তুদের থামাতে এই লড়াইয়ে যোগ দিল খুদে এক ইউনিকর্ন, উড়ন্ত রোবট আর এক এলফ-কন্যা। বিপদ কেটে যেতেই আগতদের দিকে চোখ রাখল নাৎসুকো এবং চমকে গেল! এ কী! এরা তো ওর সেই পছন্দের অ্যানিমে আ টেল অব পেরিশিং-এর চরিত্র! তবে কি ও এসে পড়েছে কাল্পনিক সেই দুনিয়ায়?
মূলত এখানেই আরম্ভ হয় জেনশুর কাহিনি, তারপর ডালপালা ছড়ায়। আ টেল অব পেরিশিং-এর এই জগৎ মূলত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সেখানে জীবিত ও সক্রিয় বীরদের মধ্যে এখন রয়েছে লুক ব্রেভহার্ট, মেমেলন, কিউ–জে, ইউনিও প্রমুখ। এদের ভবিষ্যৎ নাৎসুকো জানে। জানে, কিসের পর কী দুর্ঘটনা নেমে আসবে এই রাজ্যের বাসিন্দাদের ওপর। এই পৃথিবীর বাকি রাজ্যগুলো এর মধ্যেই ধ্বংস হয়ে গেছে। বাকি আছে এই একটাই রাজ্য। পূর্বের বীরেরা এখন আর নেই। কেউ মরে গেছে, কেউবা জখম হয়ে চলে গেছে অন্তরালে, কেউ আবার এখনো যোগ দেয়নি দলে। তবে এদের প্রত্যেকের মৃত্যুই নাৎসুকো স্বচক্ষে দেখেছে সিনেমা হলের বড় পর্দায়। কিন্তু, চোখের সামনে তো এদের আবার মরতে দেখতে পারবে না ও, এ বড় কষ্টের। একসময় কথা বলে ওঠে নাৎসুকোর পেগবার। তোমরা যারা ভাবছ, পেগবার জিনিসটা আবার কী? তাদের বলছি, এ হলো কাগজ আটকে রাখার জন্য একধরনের স্কেল, যা অ্যানিমেটররা ব্যবহার করেন। মূলত একই চরিত্র ও দৃশ্যপট বহুবার বহু আঙ্গিকে আঁকতে হয় বলে কাগজ যেন একটার ওপর আরেকটা একেবারে নিখুঁতভাবে বসে থাকতে পারে, সে জন্য কাগজের ওপর বা নিচের দিকে সমান্তরাল কিছু ছিদ্র করে তা বসিয়ে দেওয়া হয় পেগবারে। তারপর পরবর্তী দৃশ্যপট কাগজে আঁকেন অ্যানিমে–আঁকিয়েরা। একসঙ্গে অনেকগুলো ছবি আঁকা হয়ে গেলে তাঁরা সেগুলো উল্টেপাল্টে দেখতে পারেন। দৃশ্যগুলো পরপর ঠিকঠাক মিলেছে কি না, সেটা নিশ্চিত হতে পারেন।
যা–ই হোক, প্রসঙ্গে ফিরি। প্রিয় চরিত্রগুলোর ওপর আবার আক্রমণ হতে দেখে নাৎসুকো যখন ভেঙে পড়েছে প্রায়, ঠিক তখন তার পকেটে রাখা পেগবার বলল, ‘আঁকো নাৎসুকো, তুমি আঁকো; তোমার আঁকাই ওদের বাঁচাতে পারে।’
আঁকার সিদ্ধান্ত নিতেই ভোজবাজির মতো হাজির হয় টেবিল–চেয়ার আর আঁকার সব সরঞ্জাম। একমনে পেগবারে কাগজ সেঁটে আঁকতে থাকে নাৎসুকো। তুফানি গতিতে চলে ওর হাত, এগিয়ে চলে আঁকা। কাজ শেষ করে পুরো সৃষ্টিটা টেবিলে রাখলেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসে নাৎসুকোর তৈরি ছবিগুলো, যোগ দেয় যুদ্ধে।
তোমাদের হয়তো শুরুতে মনে হতে পারে, এ নিখাদ ই-সেকাই অ্যানিমে। কিছুটা তো বটেই, দ্বিমত করব না খুব বেশি। তবে যেখানে এসে জেনশু স্বতন্ত্র, তা হচ্ছে, ই-সেকাইয়ের সঙ্গে ম্যাজিক্যাল গার্ল ধারার এক মেলবন্ধন এতে আছে। নাৎসুকো আঁকা শুরু করার আগে তার যেভাবে রূপান্তর ঘটে, যেভাবে টেবিল-চেয়ারসহ বাকি সব সরঞ্জাম হাজির হয়, তার সঙ্গে তোমরা অনায়াস মিল খুঁজে পেতে পারো কার্ডক্যাপটর সাকুরা অ্যানিমের সাকুরার রূপান্তরের। ফলে একের ভেতর তোমরা দুই মজা পাবে। তবে হ্যাঁ, যদি ভেবে থাকো যে ম্যাজিক্যাল গার্ল বলে অ্যানিমের কাহিনি একেবারে ছেলেমানুষি হবে, তাহলে এই বেলায় তোমাদের সাবধান করে দেওয়া আমার কর্তব্য। উঁহু, জেনশুর কাহিনি আরও অনেক গভীর, মূলত এখানেই আমাকে অ্যানিমেটা দখল করে ফেলেছে। যতই পর্ব পেরিয়েছে, একটু একটু করে অ্যানিমের ভক্ত হয়েছি। আর হব নাই–বা কেন? এখানে সম্পর্ক আর বন্ধুত্বকে যেসব আঙ্গিক থেকে দেখানো হয়েছে, তা অধিকাংশ অ্যানিমেই চিন্তাও করে না। বিশেষ করে ভালোবাসার ব্যাপারটা তো নির্দিষ্ট করেই বলা যায়। ঠিক যেভাবে ভালোবাসা হয়ে গেছে কিছু চরিত্রের মধ্যে, আর যেভাবে তা তারা গ্রহণ করার চেষ্টা করেছে, তা আমাকে ভাবিয়েছে। এ ছাড়া বৃহত্তর স্বার্থে নিজেকে বিসর্জন দেওয়ার যে দৃষ্টান্ত বারবার এখানে দেখানো হয়েছে, তা–ও বেশ কঠোর। আবার আছে ক্ষমার মাহাত্ম্যও। ফলে সব মিলিয়ে আয়োজনটা বেশ গাঢ়। মোটাদাগে বুঝিয়ে দিয়ে যায় বেশ কিছু তীক্ষ্ণ অনুভূতি। এতে হাসি–মজাও আছে, কিন্তু একটু একটু করে কাহিনির গাম্ভীর্য ছাপিয়ে গেছে হাস্যরসকে। তাই তোমরা যদি কেবল আনন্দ পাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে এই অ্যানিমে দেখতে বসো, তাহলে হতাশ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
প্রশ্ন করতে পারো, এত যে ওকালতি করছি, অ্যানিমেশনের মান নিয়ে কেন কিছু বলছি না? তা ছাড়া মূল মাঙ্গার লেখকের কোনো ফিরিস্তি এখনো কেন দিইনি?
প্রথমেই বলব, এই গল্পের কাহিনি লিখেছেন কিমিকো উয়েনো। তিনি মূলত একজন স্ক্রিপ্ট রাইটার। তোমরা জানো, যখন কোনো গল্প থেকে অ্যানিমে বা চলচ্চিত্র তৈরি হয়, তখন শুরুতেই তার একটা স্ক্রিপ্ট, অর্থাৎ চিত্রনাট্য লেখা হয়। অভিনেতারা বা অ্যানিমেটররা এই চিত্রনাট্য দেখেই সংলাপ বলেন, অভিনয় বা অ্যানিমেশন করেন। চিত্রনাট্যকার কিমিকোর এই জেনশু মূলত একটা মৌলিক চিত্রনাট্য বা গল্প। এটা কোনো মাঙ্গার কাহিনির ওপর তৈরি হয়নি। বর্তমানে জাপানের বিখ্যাত অ্যানিমে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাপ্পা সরাসরি কিমিকোর লেখা থেকে তৈরি করেছে এই মৌলিক অ্যানিমে। ফলে একেবারে খাঁটি অ্যানিমে হিসেবেই দেখতে পারো জেনশু। মাঙ্গা থেকে অ্যানিমে তৈরির সময় অনেক ক্ষেত্রেই টুকিটাকি বহু বর্ণনা হারিয়ে যায়, জেনশুতে তা হয়নি। আর মাপ্পার অ্যানিমেশনের মান তো তোমরা জানোই। যারা জানো না, তাদের বলছি, অ্যাটাক অন টাইটান, জুজুৎসু কাইসেন, চেইনস ম্যান, হেলস প্যারাডাইস—এগুলো মাপ্পার সাম্প্রতিক কিছু অ্যানিমে। আশা করি, মান নিয়ে মনে আর বিশেষ প্রশ্ন নেই। তবে গান নিয়ে তোমরা প্রশ্ন করতে পারো। পর্বগুলোর শুরুর গানটা হচ্ছে ‘জেন’, যা গেয়েছে জাপানিজ রক সংগীত ব্যান্ড—মেইড। ২০১৩ সালে গঠিত এই ব্যান্ডের সদস্যরা মূলত জাপানি মেইডদের পোশাক পরে পারফর্ম করে থাকেন বিভিন্ন লাইভ শোতে। আর সিরিজের শেষ গান ‘তাদা, কিমি নো মামা দে’ গেয়েছেন জে-পপ শিল্পী সৌ। গানগুলো আমার ব্যক্তিগতভাবে অত বিশেষ কিছু লাগেনি, তবে তোমাদের ভালো লাগতেও পারে, সবার পছন্দেই কিছু ভিন্নতা থাকা স্বাভাবিক।
জেনশুর হয়ে বেশ খানিকটা ওকালতি তো করলাম, তবু অনেক কিছুই বলা বাকি থেকে গেল। যেমন ধরো, বেশ কিছু ভালো চরিত্র নিয়ে বলতে পারলাম না। কারণ, এদের ধাপে ধাপে আবিষ্কার করাটাও তোমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার অংশ হওয়া জরুরি। এরা যখন আসবে আর গল্পের সঙ্গে জুড়ে যাবে, তা গল্পের দিক বদলে দেবে সামান্য হলেও।
শেষ করার আগে আরেকটা কথাও স্বীকার করে নেওয়া শ্রেয়। সিরিজটা অর্ধেক অবধি দেখেও আমার মনে হয়নি যে অ্যানিমে–কথনে এটা নিয়ে তোমাদের জন্য লিখব। কতই তো অ্যানিমে দেখা হয়, সব নিয়ে তো আর লেখা হয় না। এই যেমন গত মৌসুমেই প্রায় ১৫টা ধারাবাহিক অ্যানিমে আমি নিয়মিত দেখেছি, তা ছাড়া এদিক–ওদিক আরও টুকিটাকি বেশ কিছু পুরোনো অ্যানিমে তো আছেই। কিন্তু গল্পটা শেষ হতে হতে মনে হলো, জেনশু নিয়ে তোমাদের বলা যায়। আর দশটা কিংবদন্তি অ্যানিমের মতো জনপ্রিয় না হলেও এতে এমন কিছু আছে, যা ভাবতে বাধ্য করে। তবে আমাকে যেভাবে ভাবিয়েছে, তোমাদেরও যে সেভাবেই ভাবাবে, এমনটা জরুরি নয়। আর ভালো গল্পের গুণ এখানেই, একেকজন একেক আঙ্গিক থেকে তা উপভোগ করে। আমি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করব, তোমাদের অ্যানিমেটার কোন আঙ্গিক ভালো লেগেছে, সে কথা জানার জন্য। কিআতে চিঠি দিয়ে তোমাদের সেই সব অনুভূতি জানাতে ভুলো না যেন!