ইনফিনিটি স্টোনগুলো আসলে কী

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের বিভিন্ন মুভিতে ইনফিনিটি স্টোন নামে কিছু রহস্যময় ‘পাথর’-এর দেখা মেলে। যারা এমসিইউর কোনো মুভি বা টিভি সিরিজই দেখোনি, তারাও সম্ভবত এই স্টোনগুলোর নাম শুনেছ বা ছবি দেখেছ। কিন্তু এই স্টোনগুলো আসলে কী, আর কেনই-বা এদেরকে নিয়ে এত হইচই?

ইনফিনিটি স্টোনগুলো আসলে কী, বিভিন্ন সময়ে সেটা এমসিইউর বিভিন্ন চরিত্রের মুখ থেকে শোনা গেছে। সবচেয়ে সহজ ব্যাখ্যাটা পাওয়া যায় ‘অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার’-এর শুরুতে, সরসরার অং–এর মুখ থেকে। অং ইনফিনিটি স্টোনগুলোকে ‘এলিমেন্টাল ক্রিস্টাল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, যাদের সৃষ্টি হয়েছে বিগ ব্যাংয়ের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টির সঙ্গেই। মোট ছয়টি ইনফিনিটি স্টোন রয়েছে—স্পেস, মাইন্ড, রিয়েলিটি, পাওয়ার, সৌল এবং টাইম স্টোন। একেকটি স্টোন মহাবিশ্বের অস্তিত্বের একেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ন্ত্রণ করে। এই স্টোনগুলোর প্রতিটিই বেশ শক্তিশালী। যেকোনো একটি স্টোন ব্যবহার করে এর ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো কিছুকে পরিবর্তন বা ধ্বংস করা যেমন সম্ভব, তেমনি সম্ভব কোনো কিছুকে নতুন করে সৃষ্টি করাও। যেমন টাইম স্টোন ব্যবহার করে অতীত বা ভবিষ্যতের ঘটনাগুলো দেখা এবং সেসব ঘটনায় পরিবর্তন আনা সম্ভব।

যেকোনো ব্যক্তির মানসিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলা সম্ভব মাইন্ড স্টোন ব্যবহার করে। রিয়েলিটি স্টোনের মাধ্যমে চোখের সামনে বা চারপাশে যা দেখা যাচ্ছে, সেটাকে মনের ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে নতুন বাস্তবতা তৈরি করা সম্ভব। মহাবিশ্বের এক জায়গা থেকে অন্য কোনো জায়গায় মুহূর্তেই পাড়ি দেওয়া যায় স্পেস স্টোন ব্যবহার করে। আবার মাইন্ড স্টোন ব্যবহার করে সৃষ্টি করা যায় নতুন বুদ্ধিমত্তা। আল্ট্রন এবং ভিশন—দুজনই মূলত মাইন্ড স্টোন হতে তাদের বুদ্ধিমত্তা পেয়েছিল। আলাদাভাবে ব্যবহার করা হলেও এ জন্য এই ইনফিনিটি স্টোনগুলোর প্রতিটিই বেশ শক্তিশালী। ব্যবহারের ধরনের ওপর ভিত্তি করে বেশ বিধ্বংসীও হতে পারে এগুলো। যেমন পাওয়ার স্টোন ব্যবহার করে গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি রোনানকে ধ্বংস করেছিল।

২০১১ সালের মুভি থর-এর শেষে প্রথম ইনফিনিটি স্টোনটিকে দেখা যায়। টেসারেক্ট নামে একটা নীল রঙের ক্রিস্টালাইন কিউব গবেষণার উদ্দেশ্যে ডক্টর এরিক সেলভিগের হাতে তুলে দেন শিল্ড ডিরেক্টর নিক ফিউরি। এই কিউবের ভেতরেই যে স্পেস স্টোন ছিল, সেটা দেখা যায় অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার-এর শুরুতে। এমসিইউর ফেজ ওয়ান থেকে ফেজ থ্রি পর্যন্ত বিভিন্ন মুভিতে একে একে ছয়টি ইনফিনিটি স্টোনের দেখা মেলে। এই ইনফিনিটি স্টোনগুলোকে একসঙ্গে সংগ্রহ করার জন্যে লেগে ছিল এমসিইউর ‘ওভারআর্চিং ভিলেন’ থানোস। থানোস মনে করে যে মহাবিশ্বের সম্পদের তুলনায় এর জনসংখ্যা অনেক বেশি। এ কারণেই মহাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এত অশান্তি। যদি অর্ধেক প্রাণকে মেরে ফেলা হয়, তাহলে বাকি অর্ধেক প্রাণ এই সম্পদ নিয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। থানোস চাইছিল, পুরো মহাবিশ্বজুড়ে খুব দ্রুত এই কাজটা করতে। একটা গন্টলেটে ছয়টি স্টোন একসঙ্গে নিয়ে একটা তুড়ি মারলেই মহাবিশ্বের অর্ধেক প্রাণ মারা যাবে। সে জন্য এই ইনফিনিটি স্টোনগুলো জড়ো করতে শুরু করে থানোস। পৃথিবীসহ ‘নাইন রেলম’–এর প্রটেক্টর ওডিন মারা যাওয়ার পর থানোস চূড়ান্তভাবে তার এ কাজটি শুরু করে। থানোসের এই ছয়টি ইনফিনিটি স্টোন জড়ো করা এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ দেখা যায় অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার এবং অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম-এ।