গুজব নাকি সত্যি!

প্রায় প্রতিদিনই ছোট-বড় সবার মুখে নানান উপদেশ শোনা যায়। এই যেমন: ‘কালো বিড়াল অশুভ’ কিংবা ‘কাঁচা ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো’—এ রকম কত কী! আবার এটা ভালো, ওটা ভালো নয়। এটা করো, ওটা কোরো না। হেনতেন অনেক কিছুও হজম করতে হয় প্রতিদিন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এসব কথার সবই কি সত্যি! চলো, পরখ করে দেখি।

প্রচলিত ধারণা | কালো বিড়াল অশুভ

প্রকৃত ঘটনা | বিজ্ঞানের এই চরম উন্নতির যুগেও অনেকেই যাত্রাপথে কালো বিড়াল দেখা দুর্ভাগ্যের প্রতীক মনে করে। কয়েক হাজার বছর ধরে এটাই মানুষের বিশ্বাস। প্রাচীন মিসরীয় দেবী বাস্টের মাথা ছিল বিড়ালের মতো। তাই বিড়ালকে পবিত্রজ্ঞানে পূজা করা হতো। তাদের বিশ্বাস ছিল, বাস্ট দেবীর আত্মা নয়টি। সে জন্যই এখনো অনেকের বিশ্বাস, বিড়ালেরও নয়টি জীবন। প্রাচীন মিসরীয়রা কালো বিড়াল মারা গেলে মমি করে সংরক্ষণ করত। সেখানে মমিকৃত হাজার হাজার কালো বিড়ালের একটা কবরস্থান পাওয়া গেছে। মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা ডাইনিতে বিশ্বাস করতে শুরু করে। তখন থেকেই তারা কালো বিড়ালকে ডাইনির ছদ্মবেশী রূপ হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের ধারণা ছিল, কালো বিড়াল একবার মরলেও ডাইনি মরবে না। ইউরোপে মধ্যযুগীয়দের বিশ্বাস, ডাইনি এবং ডাকিনিবিদ্যা চর্চাকারীরা কালো বিড়ালের মগজ রান্না করে একধরনের তরল ওষুধ তৈরি করত। এসব ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় বেচারা নির্দোষ কালো বিড়ালকে হতে হয়েছে অশুভ ও দুর্ভাগ্যের প্রতীক। কিন্তু এ ধারণার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

প্রচলিত ধারণা

প্রকৃত ঘটনা | অনেকের ধারণা, ইঁদুর হাতির শুঁড়ের ভেতর ঢুকে যেতে পারে। তাতে ভীষণ বেকায়দায় পড়ে যায় হাতি। কারণ, শুঁড়ের মধ্যে ইঁদুর ঢুকলে হাতি হাঁচতে হাঁচতেই আধমরা হয়ে যাবে। সে কারণেই নাকি ইঁদুর দেখে হাতি ভীষণ ভয় পায় বলে ধারণা অনেকের। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মূলত ঘ্রাণ আর শ্রবণশক্তির জোরেই হাতি চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পায়। এদের স্পর্শ অনুভূতিও তীক্ষ। হাতি কয়েক মাইল দূরের শব্দ বেশ স্পষ্ট শুনতে পায়। পানির গন্ধও পায় অনেক দূর থেকে। কিন্তু হাতির দেহের তুলনায় তার চোখ ছোট আর কুতকুতে। তেমনি তার দৃষ্টিশক্তিও খুবই দুর্বল। তাই পুঁচকে ইঁদুর হাতির চোখেই পড়ে না বলতে গেলে। স্বাভাবিকভাবেই ইঁদুরকে ভয় পাওয়ারও কিছু নেই হাতির জন্য। একই কারণে ইঁদুরকে তারা গোনায়ও ধরে না। আর যেখানে বাঘ, সিংহ, গন্ডার কিংবা কুমির কাউকেই ছেড়ে কথা কয় না শক্তিমান হাতি, সেখানে পুঁচকে ইঁদুর তো কোন ছার!