তারুণ্যের শূন্য

(বাঁ থেকে) শাকের, লাবিব, মাইকেল ও এমিল
(বাঁ থেকে) শাকের, লাবিব, মাইকেল ও এমিল

 ২০০৬ সালের কথা। এমিল ও শাকের দুই বন্ধু। সময় পেলেই তাঁরা বসে যেতেন অনুশীলনে। হঠাৎ করেই তাদের মাথায় ভাবনা এলো, আচ্ছা নিজেদের এই সুরগুলোতো সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এরই মধ্যে ড্রামার হিসেবে যোগ দিলেন লাবিব। সঙ্গে মাইকেলও যোগ দিলেন বেস গিটারিস্ট হিসেবে। শুরু হলো চারজনের একসঙ্গে পথচলা। কিছুদিন পর অ্যালবাম প্রকাশের ইচ্ছেও হয় তাঁদের। ২০০৭ সালে চারজন মিলে গান তৈরি করে ফেলেন। কিন্তু ব্যান্ডের নাম তখনো ঠিক হয়নি। ‘প্রত্যাশা’ শিরোনামের একটি গান ফুয়াদের  বন্য অ্যালবামের জন্য তৈরি করা হয়। এদিকে অ্যালবাম প্রকাশের শেষ মুহূর্তে ফুয়াদ জানালেন, ব্যান্ডের নাম ঠিক করতে না পারলে অ্যালবামে গান রাখা সম্ভব হবে না। এরপর সবাই মিলে ভেবেচিন্তে ব্যান্ডের নাম দেন ‘শূন্য’। সময়ের সঙ্গে শূন্য এখন তরুণদের কাছে জনপ্রিয় একটি ব্যান্ড।

ব্যান্ডের নাম শূন্য রাখা প্রসঙ্গে এমিল বলেন, ‘এমন একটা নাম দিতে চাচ্ছিলাম, যা একবার শুনলেই সবার মুখস্থ হয়ে যায়। আমরা যেহেতু সবাই শূন্য থেকে পথচলা শুরু করেছি, তাই এ নামটি নির্বাচন করি।’

প্রথম গানেই শ্রোতাদের হৃদয়ে জায়গা করে নেয় ‘শূন্য’। এর পরই শুরু হয় একক অ্যালবামের কাজ। গান তৈরির পাশাপাশি চলতে থাকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে কনসার্টে অংশ নেওয়া। ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত হয় তাদের প্রথম একক অ্যালবাম  নতুনস্রোত। এমিল বলেন, ‘নতুন ব্যান্ড বলে অনেকেই আমাদের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশে রাজি হয়নি। তাতেও হার মানিনি আমরা। নিজেরাই “মেরুন মিউজিক” নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চালু করি।’

মাইকেল বলেন, ‘প্রথম অ্যালবাম নিয়ে আমাদের অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। নিজেরাই ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দোকানে দোকানে অ্যালবাম পৌঁছে দিয়েছি। প্রকাশের পর এ অ্যালবামের বেশ কয়েকটি গান শ্রোতারা ভালোভাবে গ্রহণ করেন। আর তখনই পাকিস্তানের সাফকাত আলী খানের সঙ্গে ন্যাম সম্মেলন কেন্দ্রে কনসার্ট করার সুযোগ পাই আমরা। অনুষ্ঠানে আমাদের পরিবেশনা বেশ প্রশংসিত হয়।’

শুরুটা অনেক কষ্টের হলেও স্বীকৃতি পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় অ্যালবাম  শতআশার জন্য শূন্য সেরা ব্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পায় সিটিসেল-চ্যানেল আই সংগীত পুরস্কার আসরে।

২০১১ সালে প্রকাশিত হয় শূন্য ব্যান্ডের তৃতীয় একক অ্যালবাম  গড়বোবাংলাদেশ। এই অ্যালবামের জন্যও ব্যান্ডটি সিটিসেল-চ্যানেল আই সংগীত পুরস্কার আসরে জনপ্রিয় ব্যান্ড নির্বাচিত হয়।

অ্যালবামের গানের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় কনসার্ট নিয়ে ব্যস্ত এখন শূন্য। পাশাপাশি চলছে নিজেদের চতুর্থ একক অ্যালবামের কাজ। গিটারিস্ট শাকের বলেন, ‘আমরা কনসার্ট খুব উপভোগ করি। কারণ সেখানে শ্রোতার খুব কাছে চলে যাওয়া যায়। আর বেশি ভালো লাগে তখন, যখন দেখি শ্রোতারা আমাদের গানের সঙ্গে কণ্ঠ মেলাচ্ছেন। এটা সত্যিই ম্যাজিক্যাল মনে হয়।’ 

শূন্যর বর্তমান লাইনআপ 

এমিল (ভোকাল), মাইকেল (বেজ গিটার), শাকের (লিড গিটার), লাবিব (ড্রামস)।

শূন্যর অ্যালবাম

নতুন স্রোত ২০০৮

শত আশা ২০০৯

গড়বো বাংলাদেশ ২০১১

শূন্যর জনপ্রিয় কিছু গান

শত আশা, প্রত্যাশা, নতুন স্রোত, বেদনা, শেষ বিকেল, কেউ জানে না, গোধূলির ওপারে, গড়ব বাংলাদেশ, নিঝুম রাতে, জ্যোৎস্নার পরে, শূন্য হাতে, স্বাধীনতার প্রান্তরে ও সে ভাব