নিজের একটা ল্যাবরেটরি

ছোটবেলায় ভাবতে খুবই ভালো লাগত, একদিন আমিও বিজ্ঞানী হব। মাঝেমধ্যে আবার খুব হতাশ লাগত, বিজ্ঞানী হয়ে কী আবিষ্কার করব? সবকিছু তো আবিষ্কার হয়ে গেছে। টেলিভিশন, রেডিও, ঘড়ি, কম্পিউটার, টেলিফোন, মোবাইল, বাস, ট্রাক, রেলগাড়ি, রকেট, ফটোকপি মেশিন, ভিডিও গেম—কিছুই তো আবিষ্কার করতে বাকি নেই। বুঝতেই পারছ, ছোটবেলায় বিজ্ঞানী মানে কী বুঝতাম। যাঁরা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেন।

আরেকটু বড় হয়ে বুঝলাম, বিজ্ঞানীরা আরও কিছু আবিষ্কার করেন। যেমন পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, প্রত্যেক ক্রিয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে, চাঁদের কারণে জোয়ার-ভাটা হয়। কিন্তু হতাশা আগের মতোই। এগুলোও সব আবিষ্কার হয়ে গেছে! আরেকটু বড় হওয়ার পর সে হতাশা কেটে গেছে। কীভাবে, তা বলছি। তার আগে একটা প্রশ্ন, তোমারও কি বিজ্ঞানী হতে ইচ্ছা করে?

তবে আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও, তোমার কাছে বিজ্ঞানী আসলে কে? কে একজন বিজ্ঞানী? ডাক্তার কি বিজ্ঞানী? তোমার স্কুলের বিজ্ঞান স্যার কি বিজ্ঞানী? চাঁদে গিয়েছিলেন নিল আর্মস্ট্রং। তিনি কি বিজ্ঞানী?

সত্যিকার বিজ্ঞানী অনেকটা গোয়েন্দাদের মতো। তিনি নানান জিনিস খুঁজে বের করেন। সবচেয়ে বেশি বের করেন অজানা প্রশ্নের উত্তর। চিন্তা করে দেখো তো, কত অজানা প্রশ্নের উত্তরই তো তুমি খুঁজে বের করো, সেই হিসেবে কি তুমিও একজন বিজ্ঞানী নও? এই লেখাতে বিজ্ঞানী হওয়ার বুদ্ধিটা তোমাকে আমি বলে দেব। তুমিও হয়ে যাবে বিজ্ঞানী। খুদে বিজ্ঞানী, খুদে মানে ছোট বিজ্ঞানী, কিন্তু একেবারে খাঁটি বিজ্ঞানী। নিউটন, আইনস্টাইন, জগদীশচন্দ্র বসুর মতো সত্যিকারের বিজ্ঞানী।

একজন খাঁটি বিজ্ঞানী কী করেন? তিনি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নতুন নতুন বুদ্ধি করেন। তবে একটা বুদ্ধি সব সময়েই কাজে লাগে, হাতে-কলমে এক্সপেরিমেন্ট করা। সব বিজ্ঞানী সব কাজেই একটা এক্সপেরিমেন্ট করেন। এক্সপেরিমেন্টগুলো দিয়েই খুঁজে বের করেন তাঁর প্রশ্নের উত্তর। তাই তোমাকেও করতে হবে এক্সপেরিমেন্ট। এক্সপেরিমেন্ট করার কিছু বুদ্ধিও আমি বলে দেব।

তোমার বিজ্ঞান জার্নাল

সব বিজ্ঞানীর থাকে একটা জার্নাল বই, অর্থাৎ একটা বাঁধাই করা খাতা। যেখানে তিনি লিখে রাখেন নানা কাজকর্ম, নতুন কোনো প্ল্যান, কারও পরামর্শ, নতুন কোনো আবিষ্কার বা তথ্য। তুমি বিজ্ঞানী হতে চাইলে অবশ্যই তোমারও একটা শক্তপোক্ত বাঁধাই করা খাতা থাকতে হবে এবং অবশ্যই থাকতে হবে। বিজ্ঞানী হতে তাই একটা শক্তপোক্ত খাতা বানিয়ে ফেলো।

কী লিখবে এই খাতায়? তুমি নতুন কোনো একটা এক্সপেরিমেন্ট করলে, তা লিখবে, নতুন একটা প্ল্যান করলে লিখবে। হঠাৎ কোনো ঘটনা চোখে পড়ল, তা লিখে রাখবে। নতুন কিছু দেখলে, যেমন আকাশে একটা তারা বা নতুন ধরনের একটা গাছ, তা–ও লিখে রাখবে। কখনোই ভাবা যাবে না, আরে, এ ঘটনা বা এ ব্যাপার আমার তো অবশ্যই মনে থাকবে, এটা লেখার দরকার নেই। তাহলে কিন্তু আর তুমি খাঁটি বিজ্ঞানী হতে পারব না। আর যখন এক্সপেরিমেন্ট করবে, তার খুঁটিনাটি তো অবশ্যই লিখবে, তখন বাদ দেওয়া যাবে না কিছুই।

একটা জার্নাল খাতা কি তুমি বানিয়েছ? যদি বানিয়ে থাকো, তবে এবার উত্তর দাও আগের প্রশ্নের। বিজ্ঞানী মানে তোমার কাছে কী? তুমি যা ভাবো এ বিষয়ে, তা টুকে রাখো তোমার বিজ্ঞান জার্নালে।

দেখতে শেখো চারপাশ

একটা খাতা হলো, তারপর? তোমাকে হতে হবে চমৎকার একজন পর্যবেক্ষক। একজন দর্শক। অনেকটা গোয়েন্দাদের মতো; যা দেখছ তার খুঁটিনাটি দেখতে হবে। যেমন দেখলে একদল পিঁপড়া সারি দিয়ে পথ চলছে। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে তুমি কী করবে? তুমি পিঁপড়ার চলাচল খুব ভালো করে লক্ষ করবে। তুমি কি কখনো খুঁজে দেখেছ কোত্থেকে পিঁপড়াগুলো আসছে? আবার কোথায়ই বা যাচ্ছে? দুটিই খুঁজে বের করো। এবার দেখো, পিঁপড়ার রাস্তা কত চওড়া? কয়েকটা পিঁপড়া কি এদিক–সেদিক ঘোরাঘুরি করছে, নাকি সবাই এক সারিতেই চলছে? পিঁপড়া চলার সময় সামনের পিঁপড়াকে কি ওভারটেক করে? নাকি সুন্দর একজনের পেছনে একজন চলে? এমন আরও অনেক কিছু তুমি এখানে দেখতে পারো। কী কী দেখলে, লিখে ফেলো জার্নাল বইয়ে।

এখানে একটা কথা, তুমি কিন্তু চাইলে পিঁপড়া নিয়ে ইন্টারনেটে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে অনেক তথ্যই বের করে ফেলতে পারবে। কিন্তু বিশ্বাস করো, তুমি যদি নিজে এভাবে খুঁজে পিঁপড়ার কর্মকাণ্ড দেখো, তোমার এতে আনন্দ হবে। একবার চেষ্টা করেই দেখো।

হাতে-পায়ে মাপতে শেখো

এবার আসি মাপামাপিতে। বিজ্ঞানী হতে হলে তোমাকে মাপতে হবে সবকিছু। তুমি বিজ্ঞান বই খুললে দেখবে সবকিছু একদম হিসাব করা। একটা অধ্যায় শেষ হলে বিজ্ঞান বইয়ে অঙ্ক কষতে হয় অনুশীলনী থেকে। এর কারণ হলো বিজ্ঞান মানেই মাপামাপি। বিজ্ঞানীরা কী কী মাপেন? মাপেন সবকিছুই। তুমি কি জানো, খেলতে গিয়ে যখন তুমি ব্যথা পাও, ওই ব্যথার পরিমাণ মাপার বুদ্ধিও বিজ্ঞানীরা বের করে ফেলেছেন। তাই তোমাকেও মাপতে হবে সবকিছু। কী মাপবে? প্রথমেই মাপবে তোমার হাত-পা।

একটা স্কেল বা ফিতা নাও। এরপর তোমার হাতটা কতটুকু লম্বা মেপে ফেলো। তোমার হাত যদি হয় ১২ বা ১৬ ইঞ্চি লম্বা এবং তা যদি তুমি জানো, তবে আশপাশের অনেক কিছুই তুমি হাত দিয়েই মেপে ফেলতে পারবে।

বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে গেছ। তখন গোলপোস্টের দৈর্ঘ্য ঠিক করো কী দিয়ে? আমরা ছোটবেলায় পা দিয়ে মাপতাম। কখনো ১০ পা, আবার কখনো ১২ পা। বড়রা কিন্তু স্কেল বা ফিতা দিয়ে মেপে ঠিক করেন। ২৪ ফুট হলো আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ম। এখন তুমি কীভাবে তোমার পা দিয়েই ২৪ ফুট মেপে ফেলতে পারো? খুব সহজ, তোমার পা কত ফুট বা কত ইঞ্চি, তা মেপে ফেলো। এরপর কত পা লাগবে হিসাব করলেই পেয়ে যাবে। এই যে আন্তর্জাতিক নিয়মের গোলপোস্টের সমান গোলপোস্ট বানালে পা মেপে, এটাই কিন্তু তোমার বৈজ্ঞানিক মনোভাব।

একটু খেয়াল করলে দেখবে, হাঁটার সময় প্রতিবার পা ফেলে কমবেশি একই দূরত্ব যাও তুমি। এটা দিয়েও কিন্তু অনেক সময় লম্বা জায়গার দৈর্ঘ্য মেপে ফেলা যায়। এ জন্য তোমাকে জানতে হবে সাধারণভাবে হাঁটার সময় তুমি প্রতিবার পা ফেলে কতটুকু যাও। কীভাবে মাপবে? প্রথমে একটা ফাঁকা জায়গায় স্বাভাবিকভাবে ২০ কদম হেঁটে যাও। এরপর কত মিটার বা সেন্টিমিটার গেলে, সেটা মেপে ফেলো একটা ফিতা দিয়ে। এখন এটা ২০ দিয়ে ভাগ দিলে পেয়ে যাবে তোমার প্রতিবার পা ফেলার দূরত্ব। ব্যাপারটা আরও বেশি বৈজ্ঞানিক করতে এভাবে কয়েকবার বের করো তোমার পদক্ষেপের দূরত্বও। এরপর সেগুলোর গড় নাও।

যেহেতু তুমি জানো, প্রতিবার পা ফেলে তুমি কত দূর যাও, তাই বন্ধুর সঙ্গে গল্প করতে করতে মাঠের এক মাথা থেকে অন্য মাথায় হেঁটে গিয়ে মাঠের দৈর্ঘ্য বলে বন্ধুকে তাক লাগিয়ে দিতে পারো। সে জন্য মনে মনে তোমাকে শুধু হিসাব রাখতে হবে যে তুমি কয় কদম হেঁটেছ, এরপর পদক্ষেপের দৈর্ঘ্য দিয়ে গুণ করে দিলেই হবে।

নোট রাখো সাজিয়ে–গুছিয়ে

তুমি এই যে পদক্ষেপের দৈর্ঘ্য, হাত-পা মাপলে, তোমার খাতায় লিখে ফেলেছ তো? না লিখে থাকলে এখনই লিখে ফেলো। তবে লেখার সময় একটু সাজিয়ে–গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করো। বিজ্ঞানীরা এমন তথ্য সাজিয়ে লেখেন ছক করে। একটা ছক বানিয়ে এগুলো লিখে ফেলো। তুমি নিচের ছকটা পূরণ করে রাখতে পারো স্কেল ফিতা দিয়ে মেপে। কাজে লাগবে নানা সময়।

সময় যখন জব্দ

এবার চলো, তোমাকে শিখিয়ে দিই সময়কে জব্দ করার বুদ্ধি। ধরো, তোমার বন্ধুকে একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছ। উত্তর করতে হবে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে। ২০ সেকেন্ড চুপ করে থেকে ঘড়ি না দেখেই তুমি বলে দিলে, তোমার সময় শেষ। ব্যাপারটা কেমন হয়?

ভাবছ, ব্যাপারটা হয়তো খুব কঠিন। কিন্তু আসলে তা না। ‘এক হাজার এক’ বলতে আমাদের মোটামুটি এক সেকেন্ড লাগে। তুমি যদি মনে মনে ১০০১ থেকে ১০২০ পর্যন্ত গোনো, দেখবে ২০ সেকেন্ড সময় লাগছে। এভাবে ১২ সেকেন্ড বের করতে হলে ১০০১ থেকে ১০১২ পর্যন্ত গুনতে হবে।

ঠিকঠাক করতে চাইলে তোমাকে কিন্তু একটু অনুশীলন করতে হবে। ঘড়ি ধরে কয়েকবার করে দেখো। একটু তাড়াতাড়ি বললে তুমি সময়ের আগেই শেষ করে ফেলবে, আবার বেশি ধীরে গুনলে বেশি সময় লাগবে। কয়েকবার চেষ্টা করলে দেখবে তুমি ঠিকঠাকই করতে পারছ। এরপর আর চিন্তা কী, সময় হিসাব করতে বারবার ঘড়ি ধরে বসে থাকা লাগবে না।

তোমার নিজের ল্যাবরেটরি

বিজ্ঞানীদের থাকে নিজের ল্যাবরেটরি বা গবেষণাগার। অনেকে আবার কয়েকজন মিলে বানান একটা ল্যাবরেটরি। যেমন আমি নিজে কাজ করি আমার স্যারের ল্যাবরেটরিতে। তুমিও বানাতে পারো এমন একটা। চাইলে তোমার বন্ধু বা তোমার ছোট ভাইবোনের সঙ্গে মিলে একসঙ্গেও বানাতে পারো একটা গবেষণাগার। তোমার গবেষণাগারের একটা চমৎকার নামও থাকা উচিত।

কীভাবে বানাবে? গবেষণাগার বানানোর জন্য হয়তো তুমি একটা আলাদা রুম পাবে না, তবে চাইলেই একটা বাক্স জোগাড় করতে পারো, অথবা কাগজের কার্টন। যেখানে থাকবে তোমার সব বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি।

কিন্তু কোথায় পাবে যন্ত্রপাতি? একটু চোখ–কান খোলা রাখলে দেখবে খুব কঠিন নয়। আমি কিছু জিনিসের নাম বলি, যা সহজেই জোগাড় করতে পারবে। একটা স্কেল, পেনসিল, কলম, কাগজ, গজফিতা (যা দিয়ে দৈর্ঘ্য মাপা যায়), একটা ঘড়ি, পুরোনো নষ্ট হয়ে যাওয়া দেয়ালঘড়ির মেশিন, কতগুলো স্ট্র, কোমল পানীয়র প্লাস্টিকের বোতল, কতগুলো বেলুন, কতগুলো আলপিন, একটা কাচের গ্লাস, কয়েকটা বিজ্ঞানের বই, বিভিন্ন রঙের কাগজ, কয়েকটা রঙিন পলিথিন, ভাঙা খেলনা, ড্রপার, একটা স্ক্রু ড্রাইভার, দুটি ব্যাটারি, কিছু পরিমাণ চিকন বৈদ্যুতিক তার, একটা-দুইটা ছোট্ট বাল্ব বা এলইডি লাইট, পুরোনো চশমার কাচ, একটা ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাস, যাকে অনেকে বলে আতশি কাচ বা এমন নানা কিছু।

একটু চেষ্টা করলেই দেখবে এগুলো জোগাড় করা খুব কঠিন নয়। শুরু করার কিছুদিন পর তোমারই বিশ্বাস হবে না যে তোমার আছে এত কিছু! এই জিনিসগুলো জোগাড় করতে পারলে তুমি শত শত এক্সপেরিমেন্ট করে ফেলতে পারবে। আমরা আস্তে আস্তে সেগুলো শিখিয়ে দেব। আর যদি এই এক্সপেরিমেন্টগুলো তুমি করো, এরপর তা তোমার বিজ্ঞান জার্নালে লেখো, তবেই তুমি বিজ্ঞানী।

শেষ করা যাক তোমাকে একটা এক্সপেরিমেন্টের বুদ্ধি দিয়ে। ধরো তুমি পানি খাচ্ছিলে, এক ফোঁটা পানি পড়ল ফ্লোরে। একটু পর কী হবে? পানির ফোঁটাটা বাষ্প হয়ে যাবে। তুমি কি জানো কতক্ষণ লাগবে পানির ফোঁটাটা বাষ্প হতে? ফ্লোরে না পড়ে কাঠের টেবিলে পড়লে কি বেশি সময় লাগত? টাইলসে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করো। তোমার বের করা উত্তর পাঠিয়ে দিতে পারো কিশোর আলোর ঠিকানায়। অন্যদের সঙ্গে তোমার উত্তরের কি পার্থক্য হবে?

এক্সপেরিমেন্ট

এক্সপেরিমেন্ট ১.১: বিজ্ঞানী কে?

তোমার বিজ্ঞান জার্নালে লিখে ফেলো বিজ্ঞানী কারা, তাঁরা কী করেন।

এক্সপেরিমেন্ট ১.২: পিঁপড়ার গোপন কথা

পিঁপড়াদের চলাচল, কোত্থেকে আসে, কোথায় যায়, কী খায়, দলছুট হয় কি হয় না, খুঁজে বের করো। পিঁপড়াদের ওপর গবেষণা করে তুমি লিখে ফেলতে পারো একটা আর্টিকেলই। এরপর পাঠিয়ে দাও কিশোর আলোতে। তোমার পিঁপড়া গবেষণা ইন্টারেস্টিং হলে আমরাও ছাপিয়ে দেব।

এক্সপেরিমেন্ট ১.৩: মাপতে শেখা

তুমি নিশ্চয়ই হাত-পায়ে মাপতে শিখে গেছ। এবার স্কেল, ফিতা ব্যবহার না করে তোমার ঘরের ক্ষেত্রফলটা বের করে ফেলতে পারবে না? তাহলে বের করে ফেলো।

এক্সপেরিমেন্ট ১.৪: সময়কে জব্দ করা

তুমি কি এখন ঘড়ি না দেখে কতটুকু সময় গেল বলে দিতে পারো? যদি পারো, তবে একটা পরীক্ষা করতে পারো, তোমার বন্ধুকে একটা কিছু পড়তে দাও। আর তুমি মনে মনে হিসাব করো ওই লেখা পড়তে তার কত সময় লাগল। এরপর গুনে দেখো ওই লেখায় কয়টা শব্দ আছে। এবার বলো তো তোমার বন্ধু প্রতি মিনিটে কতটি শব্দ পড়ে?

এক্সপেরিমেন্ট ১.৫: পানির ফোঁটার বাষ্প হওয়া

একটা পানির ফোঁটা মেঝেতে ফেললে কিছুক্ষণ পরে বাষ্প হয়ে উড়ে যায়। একটা ড্রপার দিয়ে ফ্লোরে, কাঠের ওপর, প্লাস্টিকের ওপর, কাচের ওপর, স্টিলের ওপর আরও যেসব জায়গায় পারো পানির ফোঁটা ফেলো। দেখো বাষ্প হয়ে পুরোটা শুকাতে কতক্ষণ লাগছে? সব জায়গায় কি একই সময় লাগে? আরও দুই দিন একই এক্সপেরিমেন্ট করো। প্রতিদিন কি একই উত্তর পাচ্ছ? যদি না পাও, তাহলে কেন এমন হচ্ছে বলতে পারবে? এ ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানীদের মতো ছক করে ফেলো।