২০০৪ সালে সুপারমুনের এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে ভারত মহাসাগরে সুনামি হয়েছিল, সেটা অনেকেই মনে রেখেছেন। চাঁদ নিয়ে আমাদের দেশে অনেক কথা হয়। অমাবস্যায় বাতের ব্যথা বাড়ে, চন্দ্রগ্রহণের সময় কিছু খেলে অমঙ্গল হয়, তাই সাবধান! এ রকম কথা সব সময় বলা হয়। বিজ্ঞানীরা এসবের ভিত্তি খুঁজে পাননি।
সুপারমুনের সঙ্গে দুর্যোগ-দুর্ঘটনার কোনো সংযোগ নেই। কক্ষপথে ঘোরার সময় চাঁদ যখন পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসে, তখন পূর্ণিমায় তাকে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বড় দেখায়। এ জন্য এর নাম হয়েছে সুপারমুন। মহাকাশবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় পেরিজি-সিজাইজি (perigee-syzygy) বা পেরিজি, মানে পৃথিবীর কাছাকাছি। সিজাইজি বলতে বোঝায় সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদের এক সরলরেখায় অবস্থান, যেটা পূর্ণিমার সময় ঘটে। সুতরাং, খুব সোজা ব্যাপার। যেহেতু চাঁদ বৃত্তাকার নয়, উপবৃত্তাকার পথে ঘুরছে, তাই সে কখনো পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসবে, কখনো খুব দূরে চলে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কাছে এলে সুপারমুন, খুব দূরে চলে গেলে এর উল্টো, মাইক্রোমুন বা অ্যাপোজি! এ সময় পূর্ণিমার চাঁদ অপেক্ষাকৃত ছোট দেখায়। নাসার হিসাব অনুযায়ী সুপারমুনের সময় পূর্ণিমার চাঁদ মাইক্রোমুনের চেয়ে ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখায়।
পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব প্রায় তিন লাখ ৮২ হাজার ৯০০ কিলোমিটার। এই দূরত্ব কখনো কমে, কখনো বাড়ে। প্রশ্ন হলো কত কাছে এলে সুপারমুন আর কত দূরে গেলে মাইক্রোমুন বলা হবে? এর কোনো সর্বজনীন নিয়ম নেই। টাইমঅ্যান্ডডেইটডটকমের (timeanddate.com) সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোনো পূর্ণিমায় চাঁদের দূরত্ব যদি তিন লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারের চেয়ে কম হয়, তাহলে তাকে সুপারমুন বলা হবে। আর দূরত্ব বেড়ে যদি চার লাখ কিলোমিটারের বেশি হয়, তাহলে মাইক্রোমুন। হিসাব করে দেখা গেছে, প্রায় প্রতি ১৪তম পূর্ণিমায় সুপারমুন হয়।