স্পেন এবং পর্তুগালে বিদ্যুৎ নেই, মাদ্রিদে জরুরি অবস্থা
মাদ্রিদ ওপেন টেনিস টুর্নামেন্টের খেলা চলছিল। খেলছিলেন গ্রিগর দিমিত্রভ ও জ্যাকব ফানলি। খেলার মধ্যে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল। স্কোরবোর্ড ও ক্যামেরাগুলো বন্ধ হয়ে গেল। দর্শকেরা প্রথমে বুঝতে পারেননি, কী ঘটছে। পরে জানা গেল, স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৩৪ মিনিটে স্পেন এবং পর্তুগালের বড় অংশে বিদ্যুৎ চলে গেছে। ফলে এই অঞ্চলের গণপরিবহনে অচল অবস্থা তৈরি হয়েছে। রাস্তায় বড় ধরনের যানজট দেখা গেছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিলম্বিত হয়েছে কিছু ফ্লাইট।
বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো গ্রিড পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। তবে স্পেনের বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন অপারেটর রেড এলেকট্রিকা জানিয়েছে, বিভ্রাটের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। বাসিন্দাদের বিদ্যুৎবিহীন ছয় থেকে দশ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকা লাগতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাইবার হামলার কারণে এই অচলবস্থা তৈরি হতে পারে। তবে সাইবার হামলা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় পর্তুগাল এবং স্পেনের কিছু অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, রাস্তার ট্রাফিক লাইট কাজ করছে না। ফলে রাস্তাগুলোতে লেগে গেছে ভয়াবহ যানজট। গাড়ি চলা বন্ধ হয়ে গেছে। হাসপাতালে বিদ্যুৎ নেই। লোকজন মেট্রো রেল এবং লিফটে আটকে পড়েছেন।
মাদ্রিদে শত শত মানুষকে অফিস ভবনগুলোর বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবনের পাশে পুলিশের ব্যপক উপস্থিতি দেখা গেছে। রাস্তায় হাতের নির্দেশে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।
স্পেন ও পর্তুগালের সরকার বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। স্পেনে একটি সংকট ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট সাময়িকভাবে ফ্রান্সেরও কিছু অংশে প্রভাব ফেলেছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বিদ্যুৎ সংযোগ অপারেটর রেড এলেকট্রিকার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে পরিদর্শনে গিয়েছেন।
রেড এলেকট্রিকা আঞ্চলিক বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের কাজ করছে। পর্তুগালের বিদ্যুৎ অপারেটর আরইএন জানিয়েছে, তারা ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ সরবরাহ আবারও চালু করার পরিকল্পনা করছে।
মাদ্রিদে চলছে জরুরী অবস্থা। চারপাশে পুলিশের সাইরেনের শব্দ আর মাথার ওপরে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। মাদ্রিদের মেয়র হোসে লুইস মার্টিনেজ-আলমেইদা রাজধানীবাসীকে যতটা সম্ভব কম ভ্রমণ করতে অনুরোধ করেছেন। বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, যেখানে আছে সেখানেই থাকতে।
বিমানবন্দরগুলো থেকে বিমান উড্ডয়নে দেরির খবর জানা গেছে। ‘এইএনএ’ স্পেনের ৪৬টি বিমানবন্দর পরিচালনা করে। তারা কিছু ফ্লাইট দেরিতে ছাড়ার খবর জানিয়েছে।
এত বড় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ইউরোপে বিরল। ২০০৩ সালে ইতালি ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যকার একটি জলবিদ্যুৎ লাইনের সমস্যার কারণে পুরো ইতালি প্রায় ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।