ব্যালিস্টিক মিসাইল আকাশে ধ্বংস করা হয় কীভাবে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ছোড়া রকেট প্রতিহত করে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আয়রন ডোম।

ইসরায়েলি ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মতে ২০ এপ্রিল শনিবার গভীর রাতে একটি আক্রমণে ইরান যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন মেরেছিল, তা আটকানো হয়েছে। অস্ত্রগুলোকে আঘাত করতে ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মোট ১৭০টি ড্রোন, ৩০টির বেশি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১২০টির বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। এগুলোকে ইসরায়েলে পৌঁছানোর ১৭৭০ কিলোমিটার দূরে আটকে দেওয়া হয়েছিল। ৯৯ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আঘাত করেছে।

কীভাবে আটকে দেওয়া হলো? পেন্টাগনের কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, মার্কিন নৌবাহিনী পূর্ব ভূমধ্যসাগরে দুটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারে থাকা এজিস ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে কমপক্ষে তিনটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে আঘাত করেছে।

ইসরায়েল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে সব আক্রমণকে ঠেকাতে বিভিন্ন সিস্টেম পরিচালনা করে। বায়ুমণ্ডলের ওপরে বা ভেতরে উড়ন্ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেটকে ধ্বংস করতে পারে।

প্রায়ই ইসরায়েলের আয়রন ডোম সিস্টেমের কথা শোনা যায়। দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সংস্থা (আইএমডিও) অনুসারে, আয়রন ডোম ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একদম নিচের বা প্রাথমিক স্তর। তাদের কমপক্ষে ১০টি আয়রন ডোম ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটিতে আছে একটি রাডার, যা রকেট শনাক্ত করে। শনাক্ত করার পর একটি ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম’ ব্যবহার করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় খুব দ্রুত হিসাব করা হয়, আগত রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি সৃষ্টি করবে নাকি জনবসতিহীন এলাকায় আঘাত করবে। রকেট যদি হুমকি সৃষ্টি করে, তবে আয়রন ডোম ভূমি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বাতাসে আগত ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়।

আরও পড়ুন

ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার পরের ধাপ ‘ডেভিডস স্লিং’। এটি স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার হুমকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। ডেভিডস স্লিং ইসরায়েলের রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেম এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা জায়ান্ট রেথিয়নের একটি যৌথ প্রকল্প। ১৮৬ মাইলের মধ্যে লক্ষ্যবস্তু ‘হিট টু কিল’ প্রযুক্তি দিয়ে ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়।

ডেভিডস স্লিং
সিএসআইএস

ডেভিডের স্লিংয়ের ওপরে আছে ইসরায়েলের অ্যারো টু এবং অ্যারো থ্রি সিস্টেম। এগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করা। অ্যারো টু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে ঝাঁপ দেয়। অ্যারো টু সর্বোচ্চ ৫৬ মাইল দূর এবং ৩২ মাইল উচ্চতায় ছুটে যেতে পারে। অ্যারো থ্রি হিট-টু-কিল প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহাকাশে আগত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে পারে। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের আগেই আগেই ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দিতে পারে।

সূত্র: সিএনএন ও টিউটোরিয়ালস

আরও পড়ুন