কিশোরদের প্রতিদিন যে খাবার জরুরি

১২ থেকে ১৬ বছর হলো কৈশোরকাল। এ সময় ছেলেমেয়েদের শরীর দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এ বয়সে সঠিক পুষ্টি প্রয়োজন। শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশকে পুষ্টি প্রভাবিত করে। তাই কিশোরদের দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস।

কিশোরদের জন্য প্রতিদিন চাই পুষ্টিকর খাবারপ্রতীকী ছবি

প্রোটিন: পেশির গঠন ও বৃদ্ধি, হরমোন ও এনজাইম উৎপাদন এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডিম, মাংস, মাছ, দুধ, দই, ছানা, বাদাম, সয়া প্রোটিন—এগুলোতে প্রোটিন থাকে। দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা ছেলেদের ক্ষেত্রে ৫২ গ্রাম (প্রায়) এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ৪৬ গ্রাম (প্রায়)।

কার্বোহাইড্রেট: কার্বোহাইড্রেট দেহের শক্তির প্রধান উৎস এবং মস্তিষ্কের কার্যক্রম ঠিক রাখতে সহায়তা করে। ভাত, রুটি, আলু, ওটস, ব্রাউন ব্রেড, ফলমূল, সবজি থেকে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। দৈনিক মোট ক্যালরির ৫০-৬০ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট থেকে নিতে হবে।

চর্বি বা ফ্যাট: এটি স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে। ডিমের কুসুম, দুগ্ধজাত খাবার, মাছের তেল, বাদাম, অলিভ অয়েল থেকে আমরা ফ্যাট পেয়ে থাকি। দৈনিক মোট ক্যালরি চাহিদার ২৫-৩০ শতাংশ ফ্যাট থেকে নিতে হয়।

ক্যালসিয়াম: এটি দাঁত ও হাড়ের গঠনে সহায়তা করে এবং স্নায়ুতন্ত্র ও পেশির কার্যকারিতা বজায় রাখে। দুধ, দই, ছানা, ছোট মাছ, পালংশাক, বাদাম, ব্রকলি ইত্যাদি থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ক্যালসিয়ামের দৈনিক চাহিদা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ মিলিগ্রাম।

আয়রন: এটি রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। শক্তি উৎপাদন করে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। লাল মাংস, কলিজা, কচুশাক, ব্রকলি, ডাল, ডিমের কুসুম, কুমড়ার বীজ থেকে আয়রন পাওয়া যায়। দৈনিক চাহিদা ছেলেদের ১১ মিলিগ্রাম, মেয়েদের ১৫ মিলিগ্রাম (মেয়েদের মাসিক ঋতুচক্র শুরু হওয়ার কারণে)।

ভিটামিন: ভিটামিন–এ গাজর ও মিষ্টিকুমড়া ভিটামিন এ–র খুব ভালো উৎস। ভিটামিন-সি: ত্বক ও চুল ভালো রাখে এবং রোগ প্রতিরোধে ভালো ভূমিকা রাখে। লেবু, কমলা, কাঁচা মরিচ, আমলকী, লটকন ইত্যাদি থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন-ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। এ ছাড়া সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার জন্য সকালের নাশতা বাদ দেওয়া যাবে না। ফাস্ট ফুড ও প্রক্রিয়াজাত কাবার খেলে স্থূলতা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আর পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। এর বাইরে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি।

লেখক: কনসালট্যান্ট, ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান ও নিউট্রিশনিস্ট, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুন