বুনো হাতির ডাক

রাঙামাটিতে একবার বন্য হাতির সামনে পড়েছিলাম। ভয়ংকর বুনো হাতি দশ হাত সামনে, ঠক ঠক করে কাঁপা ছাড়া কিছুই করার ছিল না আমার; সে এক অদ্ভুত রোমহর্ষ অভিজ্ঞতা, মনে পড়লে এখনো কলজে কেঁপে ওঠে। পাহাড়ের এসব বন্য হাতি প্রায়ই লোকালয়ে ঢুকে ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি করে, কখনো জ্যান্ত মানুষ আছড়ে কিংবা পিষে মেরে ফেলে। এ রকম ভয়ংকর বুনো জন্তুর সামনে পড়েও যে বেঁচে ফিরেছিলাম, তার জন্য নিজেকে কতটা সৌভাগ্যবান মনে করা যায়, সেটা মাপার সাধ্য আমার নেই।

কৈশোরে হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের অ্যালান কোয়াটারমেইন পড়ে নিজেকে এতটাই বড় বীর ভাবতাম যে বাড়ির পেছনের নিমগাছের ডালে পা ঝুলিয়ে বসে কল্পনায় কতশত বুনো হাতি ও গন্ডার যে মেরেছি, তার ইয়ত্তা নেই। জিম করবেট আর কেনেথ অ্যান্ডারসনের রোমাঞ্চকর সব শিকারকাহিনি পড়ে পড়ে বুনো জন্তু-জানোয়ারকে রীতিমতো নস্যি মনে করতাম। সামনে পড়লে যে দু-চারটে জলহস্তী আমি এক হাতেই রুখে দিতে পারব—এ রকম একটা বিশ্বাস আমার মনে এসে গিয়েছিল। টারজান আমাকে স্যালুট দিচ্ছে, ঘুমের মধ্যে এমন স্বপ্ন দু-একবার যে দেখিনি, সে বয়সে তা অস্বীকার করা ঠিক হবে না।

সেই আমি যখন একেবারে জ্যান্ত বুনো হাতির সামনে পড়ে গেলাম, তখন আমার ওসব বীরত্ব যে ধপাস করে কোথায় আছড়ে পড়েছিল, সেটা বিশেষ মনে করতে পারি না।

ঘটনাটা বছর পাঁচেক আগের এক মে মাসের। ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চার নামের এক অভিযাত্রী দলের সঙ্গে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে গেছি ঘুরতে। ঘোরাঘুরির জন্য কাপ্তাই বেশ মনোরম জায়গা। পাহাড়ের বুক চিরে অসংখ্য নয়নাভিরাম হ্রদ যেমন আছে, তেমনি কাপ্তাইজোড়া পাহাড়ি বুনো এলাকার কমতি নেই। তবে কাপ্তাইয়ে নামার পর থেকেই শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি, একবার যে শুরু হলো আর থামার নাম নেই, পাড়ার মুরব্বিদের দেওয়া তরুণদের প্রতি অভিযোগের মতো একনাগাড়ে চলতেই থাকল। পাহাড়ি বুনো ছাগলের মতো পাহাড়ে পাহাড়ে মোগলি হয়ে ঘুরব আর লেকের পানিতে আলেকজান্ডার বেলায়েভের উভচর মানব হয়ে জলকেলিতে মাতব, এই আশায় লেক ভরা কাপ্তাইয়ের পাহাড়ে গিয়েও বৃষ্টির চক্করে আমরা হয়ে গেলাম গৃহপালিত ছাগলের মতো খোঁয়াড়ে বন্দী।

আবহাওয়া অফিসও বেরসিকের মতো জানিয়ে দিল ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের কথা। এই ৭ নম্বর বিপৎসংকেতটা আমার পিছু ছাড়তেই চায় না। মনে পড়ে, একবার দুই দিনের জন্য সেন্ট মার্টিনে গিয়ে এই ৭ নম্বরের পাল্লায় পড়ে আমাকে পাক্কা আট দিন আটকে থাকতে হয়েছিল। সে–ও এক রোমাঞ্চকর ‘আটকে’ পড়া! সে গপ্পো আরেক দিন হবে, আপাতত হাতির সঙ্গে হাতাহাতির ব্যাপারটাতেই আটকে থাকা যাক।

উঠেছিলাম কাপ্তাই বন বিভাগের ছাত্র হোস্টেলে। বৃষ্টির তাণ্ডবে করিডরেই ঘুরঘুর করতে হচ্ছে আমাদের।

মায়া করে যদি বৃষ্টি ভাইয়া একটু ছাড় দেয় তো আশপাশটা ঘুরে দেখার জন্য বের হই। সেটাও খুব সুখকর হয় না। একদিন আকাশ একটু পরিষ্কার হওয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বেরিয়েছিলাম আসামবস্তির রাস্তায়, কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরই দেখা গেল, ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। টিমটিমে বৃষ্টির মাঝেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নেমে সেই ভেঙেপড়া গাছ রাস্তা থেকে নিজেরাই সরিয়ে আবার এগিয়ে গেলাম। কিন্তু সেই পরিশ্রমও বৃথা গেল। কিছু দূরেই বিরাট এক অজগর পেটপুরে ঠেসে খেয়ে রাস্তার ওপরেই বৈকালিক নিদ্রায় আছে। শুনেছিলাম, অজগর প্রজাতির প্রাণী একবার পেটপুরে খেয়ে টানা কয়েক দিন এক জায়গাতেই চোখ মুদে পড়ে থাকে, পাশ ফিরে একবার আড়মোড়াও ভাঙে না। এখানে সেটা টের পেলাম ভালোমতোই। খেয়েদেয়ে ফোলাপেটে পাহাড়ের মাঝের রাজপথে তিনি এমনভাবে শুয়ে আছেন যেন দেশের নেতামন্ত্রী, নির্বাচনের সময় জনগণের কাছে ভোট চেয়ে নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছরের জন্য শীতনিদ্রায় গেছেন।

জ্যান্ত অজগর তো কোনো গাছ নয় যে নিজেরাই ঠেলে সরিয়ে দেওয়া যাবে। আর নিজ থেকে সরে যাওয়ার মর্জি ওনার কখন হবে, তারও কোনো ঠিকঠিকানা নেই। অতএব ঘোরাঘুরিকে ছুটির ঘণ্টা শুনিয়ে আমাদের উল্টো ফিরতে হয়।

অতএব করার আর কিছু না পেয়ে আঙুলের কড়ায় বিদ্যুতের চমক গুনে আর লুডু খেলে সময় কাটাই। অতি সুস্বাদু পাহাড়ি মুরগি আর কাপ্তাই লেকের অতি স্বাদু মাছের ডাক উপেক্ষা করতে না পেরে অবশ্য মাঝে মাঝে পাকস্থলীর ওপর করুণা করে দু–চার লোকমা গিলে নিই অনেকটা বাধ্য হয়েই, একমাত্র ব্যস্ততা বলতে এটাই।

তো এ রকম এক হাই তোলা রাতেই ঘটল সেই রোমহর্ষ ঘটনাটা। আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল ছাত্র হোস্টেল থেকে একটু দূরের একটা টিলা মতন জায়গায়, ছোট্ট একটা বাড়িতে। ছাত্র হোস্টেল থেকে আমাদের রোজ তিন বেলা ওখানেই খেতে যেতে হতো।

সে রাতে খাওয়ার সময় হতেই দলের সবাই হোস্টেল থেকে দল বেঁধে খাবারের উদ্দেশে বেরিয়ে গিয়েছিল, আমি কোনো এক কারণে বের হতে দেরি করে ফেলেছিলাম।

হোস্টেলের প্রধান ফটক দিয়ে বের হলেই পিচঢালা রাস্তা, সেই রাস্তা ধরে শ খানেক গজ দূরে খাবার জায়গাটা। হোস্টেল আর খাবার জায়গার মাঝামাঝি পথটা সত্তর–আশি ডিগ্রি বাঁক নিয়ে উঠে গেছে। বাঁকের ঠিক পাশেই রাস্তার বাঁ দিকে নেমে গেছে বিরাট খাদ, মিশে গেছে কাপ্তাইয়ের জল ও জঙ্গলে। কাপ্তাইয়ের এ রকম জায়গাগুলোতে বন বিভাগ জনসাধারণকে সাবধান করতে ‘বন্য প্রাণীদের চলাচলের স্থান’ নোটিশ বোর্ড লাগিয়ে রাখে। কারণ, এসব জায়গা দিয়ে সাধারণত বনের প্রাণী যাতায়াত করে।

বুনো হাতির পায়ের ছাপ
ছবি: আব্দুল্লাহ মামুর

রাত নয়টার মতো বাজে। আমি হোস্টেলের ফটক দিয়ে বেরিয়ে রাস্তা ধরে কিছুদূর এগোতেই হঠাৎ ডালপালা দলামোচড়ার শব্দ শুনতে পেলাম। শব্দটা আসছে বাঁকের যে পাশ দিয়ে খাদ নেমে গেছে, সেদিক থেকেই। মনে হলো, ঝোপঝাড় দলে কিছু একটা উঠে আসছে রাস্তার ওপরে। প্রথমে ব্যাপারটা ঠিক ধরতে পারিনি, ভাবলাম হয়তো বানর-টানর কিছু একটা লাফালাফি করছে। এদিকে বানরের বেশ উৎপাত দেখা যায় সব সময়ই।

ল্যাম্পপোস্ট আর হোস্টেলের আলোয় বৃষ্টিভেজা রাতের রাস্তা মোটামুটি ঝকমক করছে। তাই ব্যাপারটাকে আমলে না নিয়ে আরও কয়েক গজ এগিয়ে গেলাম। তখনই আমার ভুল ভেঙে গেল। খাদের দিক থেকে বানর নয়, ঝোপঝাড় মটমটিয়ে অতিকায় একটা বুনো হাতি উঠে এল একেবারে আমার হাত পনেরো সামনে। তার পিছে আরও এক জোড়া!

আমি এ রকম কোনো অবস্থার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। একেবারে চোখের সামনে অতিকায় জন্তু দেখে খুবই ভড়কে গেলাম, নিরেট আতঙ্কে স্থবির হয়ে গেলাম! আমি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, আমার পনেরো হাত সামনে একাধিক বিরাটাকার বুনো হাতি। এ রকম অবস্থায় কী করা উচিত, সেটা বোঝার মতো বোধ–বুদ্ধি আমার ভেতরে তখন নেই। আমি সম্মোহিতের মতো শুধু তাকিয়ে আছি হাতির দিকে, হাত-পা পুরোপুরি অবশ হয়ে গেছে!

বাস্তবে হয়তো মাত্র কয়েক সেকেন্ড পেরিয়েছিল, কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছিল, অনন্তকাল ধরে আমি ওখানেই স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।

আমাকে এভাবে কেবলাকান্ত হয়ে নট নড়নচড়ন রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সামনের হাতিটা হয়তো চরম বিরক্ত হয়েছিল, শুঁড় উঁচিয়ে তাই এমন জোরে সে ডাক ছাড়ল যে আমার কলজে কাঁপিয়ে দিল। সেই ডাকে লাভ যেটা হলো আমার, সেটা হলো হুঁশ ফিরে এল। পনেরো হাত সামনের বুনো হাতির দল যে ভয়ংকর ব্যাপার, সেই বোধ ফিরে পেলাম। সামনে হাতি, পাশে হোস্টেলের দেয়াল আর পেছনে ফাঁকা অন্ধকার রাস্তা। এই অবস্থায় আমার পেছন ফিরে ঝেড়ে দৌড় দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই, সেটা বুঝতে সময় লাগল না। তবে ঝেড়ে দৌড় দিলে যে বিপদ ঘটতে পারে, সেই বোধটা ততক্ষণে এসে গেছে আমার ভেতরে। বইয়ে বা পত্রিকায় পড়েছি, এ রকম অবস্থায় ভয় পেয়ে দৌড় দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বুনো জানোয়ার এতে ভড়কে গিয়ে আক্রমণ করে বসে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ রকম পরিস্থিতিতে সরাসরি আক্রমণও করে। শুঁড় দিয়ে তুলে আছাড় মারে, নইলে পায়ের নিচে পিষে ফেলে।

আমার তখন উভয়সংকট অবস্থা। উল্টো দিকে দৌড় দিতেও পারছি না, আবার ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব নয়। তবু কিছু তো একটা করা লাগবে। শেষমেশ তাই সাহস সঞ্চয় করে হাতির দিক থেকে চোখ না সরিয়েই ধীরে ধীরে রাস্তা ছেড়ে নেমে গেলাম হোস্টেলের দেয়ালের দিকে, একেবারে দেয়ালে পিঠ লাগিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম।

এখন হাতি যদি এসে আমাকে শুঁড় দিয়ে তুলে রোলার কোস্টারের অনুভূতি দিয়ে সপাটে আছাড় মেরে দেয়, তাতে আমার কিছুই করার নেই। আমার সবকিছুই হাতির মর্জির ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে হাতিটা তার অতিকায় বপু দুলিয়ে থ্যাপ থ্যাপ পায়ে এগোতে শুরু করল, তার চোখ আমার দিকে নিবদ্ধ, অন্য কোনো দিকে সে না তাকিয়ে রাস্তা ধরে সোজা এগিয়ে যাচ্ছে, তার পেছনে আরও এক জোড়া। যেন আমাকে চোখে চোখে রেখে সে শাসাচ্ছে, কোনো ঝামেলা দেখলেই একেবারে তুলে আছাড় দেবে।

ব্যাপারটা বেশ কাজে দিচ্ছে, আমি কাঠ হয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে ঠক ঠক করে কাঁপছি, মাথার ভেতর শুধু কোথায় কবে কীভাবে বুনো হাতি পায়ের তলায় পিষে মানুষ মেরেছে, সেসব খবর ফিল্মের ছবির মতো ঘুরছে। পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে স্লো মোশনের ভিডিওর মতো অবস্থায় ঘটছে, দশ সেকেন্ডই যেন দশ ঘণ্টার সমান!

হাতি প্রতিবার পা ফেলছে আর সেই শব্দে আমার অন্তরাত্মা কেঁপে কেঁপে উঠছে। অ্যাডগার রাইজ বারোজের উপন্যাসে আফ্রিকার জংলিরা শত্রুদের বুকে কাঁপন ধরাতে এভাবেই বুঝি যুদ্ধের দামামা বাজায়। অবিরত মনে হচ্ছে, এই বুঝি হাতিটা আমার দিকে ধেয়ে এসে পিষে ফেলবে আমাকে। কয়েক হাত সামনেই যেন মৃত্যু দেখতে পাচ্ছি আমার। লেকের পানিতে ডোবাডুবি করতে এসে শেষকালে হাতির ছেঁচা খেয়ে মরতে হবে, সেটা কল্পনাতেও ছিল না।

কিন্তু আমার মতো লিকলিকে পটাশকে পায়ের নিচে পিষে ফেলার মতো অতটা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে হাতিটা বোধ হয় নেয়নি। আমার গোবেচারা ভাব দেখে আমি তাদের জন্য কোনো বিপদ নয়, এটা বুঝে নিয়েই হয়তো আমার ঠিক বরাবর থেমে রাস্তার মাঝখানে কয়েক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে শুঁড় উঁচিয়ে বিরাট এক বৃংহিত ঝেড়ে আমার অন্তরাত্মা আরেকবার কাঁপিয়ে দিয়ে, ‘মনে রাখিস ব্যাটা, আই এম দ্য বস’, ধাঁচের একটা লুক দিয়ে হাতিটা সোজা নাক বরাবর এগিয়ে যেতে থাকল, তার পিছে জোড়া হাতিও।

ঐরাবতের এমন শান্তিপূর্ণ প্রস্থানে আমার ওষ্ঠাগত প্রাণপাখি স্বভাবতই দেহের ভেতর ফিরে এল। আমার ভেতর থেকে বিরাট একখানা স্বস্তির নিশ্বাস বেরিয়ে শরীরের কাঁপাকাঁপি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দিল। আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম আরকি।

হাতির দল হোস্টেলের পাশের জঙ্গল দিয়ে অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়ার পর সবকিছু নিরাপদ হয়ে গেলে দলের সবাই ওই জায়গায় হাজির হয়ে গেল। হাতির ডাক আর ছোটাছুটির শব্দ শুনে ওরা খাবারের জায়গার সামনে থেকেই ব্যাপার দেখতে ফিরে এসেছে। দূর থেকে বুনো হাতিদের প্রস্থান করতে দেখেই তারা যা বোঝার বুঝে নিয়েছে। ততক্ষণে কোত্থেকে যেন ওখানে হাজির হয়ে গেছে কিছু স্থানীয় লোক। পুরো ব্যাপারের কিছুটা দেখে এবং আমার কাছে বিস্তারিত শুনে সবাই একবাক্যেই মত দিয়েছে, আমি বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। এ রকম ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই নাকি বুনো হাতি আক্রমণ করে বসে। নাগালে পাওয়া মানুষদের হয় মেরে ফেলে, না হয় মারাত্মক জখম করে রেখে যায়। আমাকে যে হাতিগুলো কোনো আক্রমণ না করেই পাশ কাটিয়ে চলে গেছে, সেটা আমার পরম সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়! কদিন আগেও নাকি ওই এলাকায় হাতির আক্রমণে মানুষ মারা গেছে।

বুনো হাতির সামনে পড়েও ভাগ্যের জোরে জ্যান্ত বেঁচে যাওয়ার পর বারবার শুধু মনে হতে থাকল, টারজান ভাইয়ের অ্যাডগার রাইজ বারোজ, অ্যালান কোয়াটারমেইনের হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড কিংবা ছোট ভাই মোগলির রুডইয়ার্ড কিপলিং আসলে বোগাস লোক, আমার মতো কোনো দিন বুনো হাতির সামনে পড়লে ও রকম উষ্টুম ধুষ্টুম লেখা বেরিয়ে যেত তাঁদের!