শান্তিতে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে নিরলস প্রচেষ্টা এবং ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণভাবে স্বৈরশাসনের উৎখাত করে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রামের জন্য মাচাদোকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, এক বছর ধরে আত্মগোপনে আছেন মাচাদো। তাঁর জীবন গুরুতর হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও তিনি দেশেই আছেন, যা লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি দেশের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করেছেন। ভেনেজুয়েলায় সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন। শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সব সময় ছিলেন অটল। নোবেল কমিটি বলেছে, স্বৈরশাসকেরা যখন ক্ষমতা দখল করেন, তখন যাঁরা স্বাধীনতা রক্ষায় সাহসী ভূমিকা রাখেন, তাঁদের চিহ্নিত করা এবং তাঁদের উদ্দীপনা ও প্রতিরোধকে স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫৮ বছর বয়সী মাচাদো শুধু রাজনীতিক নন, তিনি শিল্প প্রকৌশলীও। ভেনেজুয়েলায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলা মাদুরোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন তিনি। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে মাচাদো নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। ফলে বিরোধীদলীয় প্রার্থী হিসেবে এদমুন্দো গোনসালেস উররুতিয়াকে সমর্থন দেন এবং তাঁর পক্ষে প্রচার চালান তিনি।
তবে ওই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ব্যাপক বিরোধ দেখা দেয়। প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। তবে বিরোধীরা এই ফলাফল নাকচ করে দেয়। ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে তারা দাবি করে যে নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী এদমুন্দো গোনসালেস জয়ী হয়েছেন। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর তা বাতিলের দাবিতে ভেনেজুয়েলাজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট মাদুরো কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমনের পথে হাঁটেন। এতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
সরকারি দমন-পীড়নের মুখে বিরোধী নেতা গোনসালেস আত্মগোপনে থাকার পর দেশ ছেড়ে চলে যান। জীবনের ঝুঁকি থাকায় আত্মগোপনে যেতে হয় কোরিনা মাচাদোকেও।