বনমালীর মণিবাবা

পুরাতন ভৃত্য নিয়ে রবি ঠাকুরের আস্ত কবিতা আছে। পড়লে চোখ ভিজে যায় যে কারও। রবি ঠাকুরের একজন বিশ্বস্ত ভৃত্য ছিলেন। নাম বনমালী। কবিতার মতোই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গোটা ভারত ভ্রমণ করেছেন বনমালী। লোকটা রবি ঠাকুরকে বাবামশায় বলে ডাকতেন। সরল ও কিছুটা বোকাও ছিলেন। ঠকবাজ কবিরাজ-তান্ত্রিকদের কথায় ভুলে যেতেন বনমালী। সত্যি-মিথ্যের ফারাক বুঝতেন না।

সেসব বোকামির গল্প রবীন্দ্রনাথকে শোনাতেন আর ভাবতেন কবি বুঝি এসব গল্প শুনে অবাক হবেন। একদিন তিনি শোনালেন মণিবাবার গল্প। বনমালীর গ্রামের তান্ত্রিক। অবিশ্বাস্য সব কাণ্ড ঘটাতে পারেন। যেকোনো রোগ সারিয়ে তুলতে পারেন তন্ত্রমন্ত্রের সাহায্যে। এমনকি তাঁকে যদি সময়মতো না-ও পাওয়া যায়, তার নাম জপলেই মুশকিল আসান।

বনমালী রবীন্দ্রনাথকে বললেন, ‘বাবামশায়, সে বিরাট তান্ত্রিক। মণিবাবা, মণিবাবা, মণিবাবা বলে তিনবার তাঁর নাম জপলেও সাপে কাটা রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।’

রবীন্দ্রনাথ কিন্তু সে কথা শুনে অবাক হলেন না। বরং অনিল চন্দ নামে এক লোককে হেঁকে বললেন, ‘যা তো অনিল, একটা কেউটে সাপ জোগাড় করে নিয়ে আয়। ওটা লেলিয়ে দে বনমালীকে। কামড়াক ওকে। তারপর দেখি নাম জপে মণিবাবা কীভাবে রেহাই পায়!’

বনমালীর তখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।