ল্যান্ডমাইন শনাক্তে ইঁদুর রনিনের রেকর্ড

কম্বোডিয়ায় ল্যান্ডমাইন শনাক্তকারী একটি ইঁদুর শনাক্ত করেছে ১০০টিরও বেশি মাইন। এ ছাড়া বিপজ্জনক যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করেছে ইঁদুরটি। এককভাবে কোনো ইঁদের এত পরিমাণ ল্যান্ডোমাইন খুঁজে বের করা নতুন বিশ্ব রেকর্ড।

আফ্রিকান জায়ান্ট পাউচড ইঁদুর রনিন ২০২১ সাল থেকে ১০৯টি ল্যান্ডমাইন এবং ১৫টি অবিস্ফোরিত যুদ্ধাস্ত্র খুঁজে বের করেছে। এই তথ্য জানিয়েছে শনাক্তকারী প্রাণীকে প্রশিক্ষণদানকারী দাতব্য সংস্থা অ্যাপোপো।

১৯৯৮ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রায় ২০ বছর পরেও কম্বোডিয়াজুড়ে লক্ষ লক্ষ অবিস্ফোরিত যুদ্ধাস্ত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস জানিয়েছে, রনিনের 'গুরুত্বপূর্ণ কাজ' হলো সে মানুষের জীবনে প্রকৃত পরিবর্তন এনেছে। যারা ভয়ে ভয়ে বসবাস করছেন, যারা ভাবছেন, প্রতিদিনের জীবনে মাত্র একটি ভুল পদক্ষেপই হয়তো তাঁদের শেষ পদক্ষেপ হতে পারে, তাদের জন্য কাজ করছে রনিন।'

বর্তমানে তানজানিয়া-ভিত্তিক সংস্থাটির অ্যাপোপোর ১০৪টি ইঁদুর প্রশিক্ষণাধীন আছে। যাদেরকে 'হিরো র‍্যাটস' বলে ডাকে অলাভজনক এই সংস্থাটি। এই ইঁদুরগুলোকে ল্যান্ডমাইন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে পরিত্যক্ত অন্যান্য অস্ত্রের মধ্যে থাকা রাসায়নিক পদার্থ শুঁকে বের করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে ইঁদুরের তেমন কোনো ঝুঁকি নাই। কারণ এগুলো আকারে ছোট। ইঁদুরগুলো ল্যান্ডমাইনের ওপর উঠে পড়লেও মাইন বিস্ফোরণ হয় না। কারণ বিস্ফোরণের জন্য এগুলো যথেষ্ট ভারী না।

দাতব্য সংস্থাটি বিবিসিকে জানিয়েছে, ইঁদুরগুলো প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে একটি টেনিস কোর্টের সমান এলাকা পরীক্ষা করতে পারে। একই পরিমাণ এলাকা একটি মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরিষ্কার করতে চার দিন সময় লাগতে পারে।

প্রতিটি ইঁদুরকে অবিস্ফোরিত ল্যান্ডমাইন শনাক্ত করা শেখাতে প্রায় এক বছর সময় লাগে।

২৫ বছর ধরে মাইন শনাক্তের কাজ করছে অ্যাপোপো। সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী ১,৬৯,৭১৩টি ল্যান্ডমাইন এবং অন্যান্য বিস্ফোরক পরিষ্কার করেছে। এর মধ্যে ৫২,০০০টিরও বেশি শনাক্ত করা হয়েছে কম্বোডিয়ায়। এই দাতব্য সংস্থা ইউক্রেন, দক্ষিণ সুদান এবং আজারবাইজানের মতো যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অন্যান্য দেশেও কাজ করে।

ল্যান্ডমাইন মনিটরের তথ্য অনুযায়ী, কম্বোডিয়ায় এখনও আনুমানিক ৪০ থেকে ৬০ লক্ষ ল্যান্ডমাইন এবং অন্যান্য বিস্ফোরিত যুদ্ধাস্ত্র মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে।

সূত্র: বিবিসি

আরও পড়ুন