বায়ান্নর ৭১ বছর, একাত্তরের ৫২ বছর

বিজয় দিবস পালিত হলো ১৬ ডিসেম্বর। তোমরা কে কীভাবে দিনটি উদ্‌যাপন করলে, বলো তো। একসময় বার্ষিক পরীক্ষা শেষে দিনটি উদ্‌যাপন করার জন্য আগ্রহ নিয়ে বসে থাকতাম আমি। কত পরিকল্পনা, কত আয়োজনের চিন্তা যে করতাম। ছোট ছোট কাগজের পতাকা কিনতাম, সেগুলো আঠা দিয়ে ছাদের দেয়ালে লাগাতাম। ভোরবেলায় উঠে যেতাম তোপধ্বনি শোনার জন্য। আরও কত কী! সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাজ বাড়তে লাগল, ব্যস্ততা বাড়ল। সেগুলো আর আগের মতো করতে না পারলেও দিনটির তাৎপর্য আমার কাছে আছে আগের মতোই। আমি না করতে পারলেও ছোট ভাই-বোনদের সেগুলোতে উৎসাহ দিই। জানান দিই ইতিহাসের, স্বাধীনতার, বিজয়ের।

এবারের বিজয় দিবস নিয়ে মজার একটি বিষয় কি লক্ষ করেছ? এই লেখার শিরোনাম পড়েই অবশ্য অনেকেই বুঝে ফেলেছ কী বলতে চাইছি।

১৯৫২ সালে এ দেশের মানুষ তাঁদের মায়ের ভাষা, বাংলা ভাষার জন্য লড়াই করেছিলেন। সেই লড়াইয়ে বিজয়ীও হয়েছিলেন। বাংলা স্বীকৃতি পেয়েছিল রাষ্ট্রভাষার। এই জয় আমাদের এক হওয়া শিখিয়েছে, জুগিয়েছে সংকল্পের শক্তি। আমাদের দেখিয়েছে, প্রতিকূলতা থাকলেও আমরা যদি একটি লক্ষ্য নিয়ে একসঙ্গে কাজ করি, তবে আমরা সফল হতেই পারি।

১৯৭১ সালে সংঘটিত হয় বাংলাদেশ স্বাধীন করার যুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে জয়ী হয় বাংলাদেশ। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি সেনারা। এই জয় আমাদের অধিকারের জন্য লড়াই করা আর অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর গুরুত্ব শিখিয়েছে। এই জয়ের ফলে আজ আমরা স্বাধীন দেশের মানুষ।

আরও পড়ুন

এই বিজয়ের ৫২ বছর হয়ে গেল। ১৯৭১ সাল থেকে ২০২৩—মুক্তিযুদ্ধ আর আমাদের বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ হলো। একই সঙ্গে এ বছর পূর্ণ হলো ভাষার জন্য জীবন দেওয়ার ৭১ বছরও। ১৯৫২ ও ১৯৭১ সালের এই দুই বিজয় আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবান্বিত দিক। এই দুই জয় থেকে শেখা আমাদের একতা, দৃঢ় সংকল্প, লড়াকু মানসিকতা আমাদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে সব বাধা দূর করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। পৃথিবীর বুকে আজ যে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে, ৫২ আর ৭১-এর চেতনাই তার মূল শক্তি।