‘আঙ্কেলের কোলে চড়ে স্টেজে উঠে পুরস্কার এনেছিলাম’ — মুহাম্মদ উল্লাহ

ভাবো তো এমন একটি ছেলের কথা, যে পুরস্কার নিয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, স্পিকারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির হাত থেকে! বলছি উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মুহাম্মদ উল্লাহর কথা। তার ডাক নাম মাহি। ২০০৯ সালে এক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে মাহি। এরপর শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় টানা তিন বছর প্রথম পুরস্কার লাভ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কার নেয় সে। ২০১৪ সালে সংসদ ভবনে আয়োজিত চিত্রাঙ্কনে প্রথম পুরস্কার লাভ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছ থেকে। একই বছর শিশু একাডেমীতে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে প্রথম পুরস্কার গ্রহণেরও গৌরব রয়েছে তার। এ ছাড়া জয়নুল আবেদিন জন্মবার্ষিকীতে স্বর্ণপদকসহ অসংখ্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় দেড় শতাধিক পুরস্কার রয়েছে মাহির। নরওয়ে, জাপান ও মিসরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পাঠানো তার ছবি জিতে নিয়েছে বিশেষ পুরস্কার। তার আঁকা ছবি দিয়ে ২০১০ ও ২০১৪ সালে তৈরি হয়েছে ক্যালেন্ডার।

ছবি আঁকার পাশাপাশি কাগজ, কাঠ ও ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে সে বানাতে পারে নানা কিছু। গান গেয়ে শিশু একাডেমী থেকে জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কার পেয়েছে ছায়ানটের এই শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১২ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সে। পটু সাঁতার, সাইক্লিং ও রোলার স্কেটিংয়েও। বিজিবি আয়োজিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় পুরস্কার রয়েছে তার। ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডের বিভাগীয় রানার্সআপের পুরস্কারের পাশাপাশি বিজ্ঞান মেলায় উদ্ভাবক হিসেবে প্রথম পুরস্কার।

অবসরে পোষা কচ্ছপ ও মাছের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসে মাহি। বড় হয়ে একই সঙ্গে বিজ্ঞানী ও চিত্রশিল্পী হতে চায় সে।

মুহাম্মদ উল্লাহর সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন :

তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য কী?

প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পর পর তিন বছর পুরস্কার পাওয়া।

প্রশ্ন :

ছবি এঁকে প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলে মাত্র তিন বছর বয়সে। তখনকার কথা মনে আছে?

হ্যাঁ, সবাই খুব অবাক হয়েছিল। এক আঙ্কেলের কোলে চড়ে স্টেজে উঠে পুরস্কার এনেছিলাম।

প্রশ্ন :

হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম ভেঙে দেখলে তুমি এলিয়েনদের দেশে চলে গেছ, তখন কী করবে?

সেখানে একটা আর্টের স্কুল খুলে এলিয়েনদের ছবি আঁকা শেখাব!

প্রশ্ন :

কার লেখা পড়তে ভালোবাসো?

মুহম্মদ জাফর ইকবালের।

প্রশ্ন :

আলাদিনের চেরাগ হাতে পেলে যা চাইতে—

আলাদিনের চেরাগ বলতে কিছু নেই। চেষ্টা থাকলে যেকোনো ইচ্ছা নিজেই পূরণ করা সম্ভব।

(কিশোর আলোর ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সংখ্যায় প্রকাশিত)