‘আমার পোষা প্রাণীগুলোর ভাষা বুঝতে চাই’ — শ্রাবন্তী সাহা

স্বরলিপির ডায়েরি, ছবি আঁকার স্কেচবুক—দুটোই ভীষণ প্রিয় মেয়েটির। মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকা শব্দগুলো নিয়ে আপন সুরে গাইতে যেমন সে ভালোবাসে, তেমনি ভালোবাসে রঙের সঙ্গে রং মিশিয়ে নিজের স্বপ্নগুলো ফুটিয়ে তুলতে। তিন বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে গলা মেলাতে মেলাতেই গানে হাতেখড়ি শ্রাবন্তীর। ২০০৭ সালে গান শেখা শুরু করে ছায়ানট সংগীত বিদ্যায়তনে। সে বছরই আট বছরের ছোট্ট শ্রাবন্তী জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্রসংগীত বিভাগে জিতে নেয় দ্বিতীয় পুরস্কার। গানের পাশাপাশি চলতে থাকে ছবি আঁকাও। গান ও আঁকাআঁকিতে তার অসামান্য দক্ষতার জোরেই ২০১২ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ ডে’ প্রতিযোগিতায় সংগীত ও চিত্রাঙ্কন বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয় সে। তার অর্জনের ঝুলিতে আরও রয়েছে রবীন্দ্রসংগীত, দেশাত্মবোধক গান ও চিত্রাঙ্কনের জন্য বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমী আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার। সম্প্রতি ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার’ প্রতিযোগিতায়ও তেজগাঁও থানা থেকে গান ও চিত্রাঙ্কনে প্রথম হয়েছে সে। হলি ক্রস স্কুলের নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শ্রাবন্তী কিবোর্ড, হারমোনিয়াম আর তানপুরাও বাজাতে পারে। জড়িত রয়েছে গার্লস গাইড ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ‘বইপড়া কর্মসূচি’র সঙ্গেও। একাধিকবার সেই কর্মসূচির আওতায় জিতে নিয়েছে ‘সেরা পাঠক’ পুরস্কার।

এত কিছু করার পরও ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাসে প্রথম হয়ে আসছে সে। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং অষ্টম শ্রেণিতে জেএসসিতে এ প্লাসও পেয়েছে। প্রতিভাময়ী এই মেয়েটি তাই স্কুল ক্যাম্পাসেও ভীষণ জনপ্রিয়। অবসরে সে পোষা পাখি, গোল্ডফিশ ও খরগোশের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসে। মৃদু সুরের যেকোনো গান এবং রবীন্দ্রসংগীত শুনতেও ভীষণ পছন্দ করে সে। বড় হয়ে বিশ্বসেরা স্থপতি হওয়ার স্বপ্ন তার।

শ্রাবন্তীর সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন :

অনুপ্রেরণা...

মা ও শিক্ষকেরা।

প্রশ্ন :

যা করতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি...

ছবি আঁকা, গান গাওয়া, গান শোনা।

প্রশ্ন :

যা করতে ভালো লাগে না...

একটানা অনেকক্ষণ পড়াশোনা করতে।

প্রশ্ন :

স্কুলের যে ব্যাপারটি ভীষণ পছন্দের...

গার্লস গাইডের বার্ষিক ক্যাম্পিং, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাপারগুলো বেশ গুরুত্বের সঙ্গে আয়োজন করা হয়, যা আমাদের উৎসাহিত করতে ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে।

প্রশ্ন :

আলাদিনের চেরাগের দৈত্যকে যে তিনটি ইচ্ছা পূরণ করতে বলব...

আরও একবার এই স্কুলজীবনটি ফিরে পেতে চাই, এক দিনের জন্য শিক্ষক হতে চাই, আমার পোষা প্রাণীগুলোর ভাষা বুঝতে চাই।

প্রশ্ন :

কিশোর আলোর বন্ধুদের উদ্দেশে যা বলতে চাই...

স্বপ্ন দেখো আর তা বাস্তবায়নের সর্বাত্মক চেষ্টা করো। হাল ছেড়ো না কখনোই।