আরভিংয়ের একা একা বিশ্বভ্রমণ

পাইলট ব্যারিংটন আরভিং সবচেয়ে কম বয়সে ও প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান হিসেবে একা বিমানে করে পুরো পৃথিবী চক্কর দিয়ে রেকর্ড করেছেন। চলো জেনে নিই এই দুঃসাহসী পাইলটের অ্যাডভেঞ্চারের গল্প।

স্কুলে পড়াশোনার সময়ই আরভিংয়ের মাথায় ভূত চাপে—একদিন তিনি পাইলট হয়ে পুরো দুনিয়া ঘুরে দেখবেন। সেই ভূতই তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় আমেরিকার ফ্লোরিডা মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশবিদ্যা বিভাগে। সেখানে পড়াশোনা শেষ করেই তিনি বিমানে ভাড়ার টাকা জোগাড় করতে ছোটাছুটি শুরু করলেন। নানান জায়গায় ঘুরে প্রায় তিন লাখ ডলারের বিমানের যন্ত্রাংশ অনুদান হিসেবে পেলেন। এরপর ‘কলম্বিয়া এয়ারক্রাফট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি’ একেবারে বিনামূল্যে আরভিংকে তৈরি করে দিল ‘কলম্বিয়া ৪০০’ নামের এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট বিমান। চারপাশের এত মানুষের সাহায্যে তৈরি হওয়া এ বিমানের নাম রাখলেন আরভিং ‘ইন্সপিরেশন’ অর্থাৎ অনুপ্রেরণা।

২০০৭ সালের ২৩ মার্চ মায়ামির বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন আরভিং। ভয়াবহ তুষারপাত, ধূলিঝড় কোনো কিছুই তাঁকে তাঁর স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে দমিয়ে রাখতে পারেনি। প্রায় ২৭টি দেশ আর চারটি মহাদেশের ওপর দিয়ে একদম একা পুরো পৃথিবী ভ্রমণ ২৩ বছর বয়সী কোনো তরুণের জন্য এটাই প্রথম। প্রায় দুই মাসের এ ভ্রমণ শেষ হয় সে বছরেরই জুনের ২৭ তারিখ। আবেগে আপ্লুত আরভিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি খুব খুশি প্রায় অসম্ভব এ স্বপ্নকে পূরণ করতে পেরেছি ভেবে। তুষারপাত আর ঝড়ের সময় অনেকবার নিজেকে অসহায় মনে হয়েছে। আকাশের ওপর একা জীবনটা সহজ না। নিজেকে অনেক বেশি একা মনে হয়। তুমি এত কাছ থেকে বিদ্যুৎ চমকানো শুনতে পারবে, যা তুমি কখনোই শোনোনি। মাঝেমধ্যে রাতের বেলা এতই অন্ধকার হয়ে যায় যে বোঝাই যায় না প্লেন কোন দিকে যাচ্ছে। মনের জোর আর আত্মবিশ্বাস থাকলে তরুণদের পক্ষে যেকোনো কিছু করাই সম্ভব, আমার এ বিশ্বভ্রমণ সেটারই প্রমাণস্বরূপ।’

পাইলট হতে চাও?

পড়াশোনা | গণিত, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও ভূগোল নিয়ে পড়তে হবে।

গেমস | ফ্লাইট সিমুলেটর অথবা এক্স প্লেনের মতো গেমগুলো খেলতে পারো।

পড়তে হবে | হাতের কাছে পড়ার মতো যা যা পাও সব পড়ো। পপুলার মেকানিকস-এর মতো ম্যাগাজিন পড়তে পারো, যাতে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারো। ইন্টারনেটে প্রযুক্তি দুনিয়ার খোঁজখবর রাখো।

তথ্যসূত্র: ন্যাটজিও কিডস, উইকিপিডিয়া

(কিশোর আলোর জুলাই ২০১৪ সংখ্যায় প্রকাশিত)