একটুখানি অদ-ভূত

জনপ্রিয় হ্যারি পটার সিরিজেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা

বিখ্যাত লেখক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট রচনা থেকে শুরু করে আধুনিক ‘হ্যারি পটার’-এও ভূত আর ভুতুড়ে সব কাণ্ড দেখা যায়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সারা বিশ্বের ৪৫ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে ভূতে বিশ্বাস করে।

অনেকেই বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনকে ভূতের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার দার্শনিক হিসেবে মনে করেন। বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে যেহেতু শক্তির ধ্বংস বা বিনাশ নেই, শুধু রূপ বদলায়, তাহলে মৃত মানুষের আত্মা ভূত হবেই বলে মনে করেন তাঁরা। প্রাচীন মিসরের মানুষেরা ব্যাপকভাবে ভূতে বিশ্বাস করত। সে সময় ধর্মগুরুরা মূর্তির পেছনে দাঁড়িয়ে এমনভাবে কথা বলতেন যেন মনে হয়, ভূত মূর্তির মধ্যে প্রবেশ করেছে। সবচেয়ে পুরোনো ভূতের কথা জানা যায় এক ভাঙা মাটির পাত্র থেকে। লাইভ সায়েন্স জানায়, প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছরের পুরোনো সেই পাত্রের গায়ে ভূতের ছায়াচিত্র আঁকা আছে। ১৯১৫ সালে গ্যাস্টর মাসপেরো প্রাচীন মিসরের ভূতের গল্প নামে এক বইয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দের সেই মাটির পাত্রে ভূতের কথা আঁকা ছিল।

প্রাচীন চীনেও ভূতের উপদ্রবের কথা শোনা যায়। সবচেয়ে পুরোনো চীনা ভূতের নাম টু-পো। সে বেঁচে থাকতে চীনা সম্রাট হসুয়ানের মন্ত্রী ছিল। সম্রাটের সঙ্গে বিতর্কের জন্য তাকে হত্যা করা হয়। মৃত্যুর পরে টু-পো আবার ভূত হয়ে ফিরে আসে। সম্রাট হসুয়ান টু-পোর দেহাকৃতির এক যোদ্ধার তিরে মারা যান তিন বছরের মধ্যে। চীনা দার্শনিক মো জু খ্রিষ্টপূর্ব ৪৭০ অব্দে এই ভূতের কথা লিখে যান। প্রাচীন রোমেও ভূতের দেখা মিলত। ১১৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রাচীন রোমের সিনেটর পিলিনি দ্য ইয়ংগার এক ভূতের কথা জানান। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভূতের উপদ্রবের কথা জানা যায়। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সে মধ্যযুগে ভূতের অত্যাচারের কথা গল্পে জানা যায়। ১৬০০ শতকে জলপথের ভূতের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। ক্যারিবীয় সাগরের ভূতরা জলদস্যুদের হয়ে নাকি কাজ করত বলে বিশ্বাস করে অনেকেই।

ব্রিটেনের রেনহাম হলের সিঁড়িতে তোলা একটি ছবি। ছবিটি তুলেছিলেন ক্যাপ্টেন হার্বাট। ছবিটি পরে ১৯৩৬ সালে কান্ট্রি লাইফ ম্যাগাজিনেও ছাপা হয়। এটিই ভূতের প্রথম ছবি বলে দাবি করা হয়। আসলেই কি তাই!

হলিউড অভিনেতা নিকোলাস কেইজেরও ভূত দেখার অভিজ্ঞতা আছে। জীবনে বেশ কয়বার ভূতের দেখা পেয়েছিলেন এই তারকা। যুক্তরাষ্ট্রের নাপা ভ্যালিতে থাকার সময় এক নারী ভূত তার সঙ্গে দেখা করেছিল। কেইজ প্রথমে সেই নারীকে নিজের চাচি মনে করেছিলেন, কিন্তু কাছে যেতেই সেই ছায়া হাওয়া হয়ে যায়। ম্যাট্রিক্সখ্যাত অভিনেতা কিয়ানু রিভস সেই ছোটবেলা থেকে ভূতে বিশ্বাস করেন। পাঁচ বছর বয়সে প্রথম তাঁর ভূতের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁর বোনও ভূত দেখতেন। সেই ভূতের নাকি পা ছিল না বলে দাবি করেন রিভস।

লাইভ সায়েন্স অবলম্বনে