কত হাসির খবর বলে যাই!

হাসি আসলে কী, সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে কত বিজ্ঞানীর যে মাথার কলকবজার বারোটা বেজেছে তার ইয়ত্তা নেই! তবু হাসি রহস্যের কোনো সমাধান মেলেনি। থামেনি নানা কারণে আমাদের হাসাহাসিও। কত কিছুতে যে আমাদের হাসি পায়। হাসির গল্প পড়লে, হাসির সিনেমা দেখলে, হাসির গান শুনলে। চলো আজকে আমরা এমন কিছু চলচ্চিত্রের নাম জেনে রাখি যেগুলো দেখতে বসলে তোমার হাসি আসবেই আসবে।

হাসির ছবির কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসবে হীরক রাজার দেশে ছবিটির কথা। বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। তাঁর ছেলে খেয়ালখুশির রাজা সুকুমার রায়। আর এই সুকুমার রায়ের ছেলে হলেন জনপ্রিয় সাহিত্যিক এবং চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তাঁরই বানানো ছবি হীরক রাজার দেশে। দুই বন্ধু গুপী গাইন আর বাঘা বাইনের অত্যাচারী হীরক রাজার দেশে যাওয়া নিয়ে চলচ্চিত্রটির গল্প সাজানো। এ ছবির মজাটা হচ্ছে এখানে সব চরিত্রের সংলাপ ছড়ায় ছড়ায়, একমাত্র শিক্ষকের চরিত্রটি ছাড়া। এই ছবিটির পরে সত্যজিৎ এই দুই জনপ্রিয় চরিত্র নিয়ে গুপী গাইন বাঘা বাইন নামে দ্বিতীয় আরেকটি চলচ্চিত্র বানিয়েছিলেন। সেটিও বেশ মজার।

বাংলাদেশে সেই ১৯৮০ চলচ্চিত্রনির্মাতা বাদল রহমান নির্মাণ করেছিলেন এরিখ কাস্টনারের উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী। এই চলচ্চিত্রটি হলো স্বাধীন বাংলাদেশের শিশুদের জন্য নির্মিত প্রথম ছবি। পুরস্কার জিতে এমিল আসে ঢাকা শহরে, পকেটে ৫০০ টাকা। কিন্তু ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়ার পর পকেট থেকে টাকাটা হাপিস করে দেয় চোর। এবার সেই চোর ধরার জন্যই এমিল আর তার গোয়েন্দা দল নামে অভিযানে। টানটান কাহিনি, মজার সংলাপ আর তার চাইতেও মজার কিছু গান; এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী ছবিটি না দেখে থাকলে এখনি দেখে ফেলো!

ভারতীয় বাঙালি নারায়ণ দেবনাথের আঁকা জনপ্রিয় কমিক স্ট্রিপ হচ্ছে ‘হাঁদা ভোঁদা’। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই কমিক প্রকাশিত হয়ে আসছে কলকাতায়। এই দুটি চরিত্রকে নিয়েই ২০১০ সালে নির্মিত হয়েছে হাসির চলচ্চিত্র হাঁদা ভোঁদা। প্যাকাটি হাঁদা আর মোটা ভোঁদার মজার খুনসুটি নিয়েই এই ছবির গল্প এগিয়েছে।

বলিউডেও কিন্তু শিশুদের জন্য মজার চলচ্চিত্র কম হয়নি। এই তালিকার অন্যতম একটি হচ্ছে অমিতাভ বচ্চন-শাহরুখ খান জুটির ভূতনাথ। ভূতের সঙ্গে এক ছোট্ট বালকের কাহিনি নিয়ে গড়ে উঠেছে ছবিটি। ভূতটি ভয় দেখিয়ে তার বাংলো থেকে একটি পরিবারকে তাড়াতে চায়। এর ফাঁকেই ঘটতে থাকে মজার সব ঘটনা। এ ছাড়াও দেখতে পারো হলিউডের ছবি মিসেস ডাউটফায়ার-এর অনুকরণ চাচি ৪২০। মজার এক ডাইনিকে নিয়ে নির্মিত মাকড়ি ছবিটিও তোমাদের ভালো লাগবে।

হলিউডে নির্মিত হাস্যরসে ভরপুর একটি ছবি হচ্ছে হোম অ্যালোন। বাড়ির সবাই যখন ফ্রান্সে ছুটিতে, তখন আট বছরের কেভিন দুর্ঘটনাক্রমে আটকা পড়ে যায় নিজেদের যুক্তরাষ্ট্রের বাড়িতে। বাড়িতে আসে দুই ডাকাত, আর নিজের দুষ্টুমি বুদ্ধিতে সেই ডাকাতদের কাবু করে ফেলে ছোট্ট কেভিন। কিন্তু কী সেই দুষ্টুমি বুদ্ধি, সেটি জানতেই দেখতে হবে ছবিটি!

আরেকটি মজার ছবি হচ্ছে বেবিস ডে আউট। বাবা-মায়ের আদরের সন্তান ছোট্ট বেবি বিঙ্ক। কঠোর নিরাপত্তার ভেতরেও যে একদিন হামাগুড়ি দিতে দিতে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। পিছে লেগে যায় তিন কিডন্যাপার। কিন্তু কিডন্যাপের পর ঝামেলা বাধে অন্যখানে। তিন কিডন্যাপার হাড়ে হাড়ে টের পেতে থাকে, বাচ্চা হলেও বিঙ্ক একদম আলাভোলা নয়!

অ্যানিমেশন পছন্দ করলে সেখানেও আছে দম ফাটানো হাসির বেশ কিছু ছবি! ড্রাকুলা নিয়ে মজার ছবি হোটেল ট্রানসিলভেনিয়া, কুখ্যাত কিন্তু হাস্যকর ভিলেন গ্রুকে নিয়ে ডেসপিকেবল মি, খেলনাদের মজার জগৎ নিয়ে টয় স্টোরি কিংবা রূপকথাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বানানো শ্রেক

দম আটকানো হাসির জন্য আরও দেখতে পারো বেব, ডায়রি অব আ উইম্পি কিড, এলফ, ফ্রিকি ফ্রাইডে, দ্য স্যান্ডলট, হানি আই শ্রাঙ্ক দ্য কিডস, অ্যানি, মিনিয়নস, জুটোপিয়া, হোম, মাদাগাস্কার, শ্রেক, কুংফু পান্ডা, মেরি পপিনস, দ্য মাপেটস, দ্য প্যারেন্ট ট্র্যাপ। দেখে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেলে যেন আমাকে দোষ দিয়ো না!

তাই মুখ গোমড়া করে থাকার দিনে তুমিও দেখে ফেলতে পারো মজার মজার এসব চলচ্চিত্র! কারণ, হাসির চেয়ে বড় ওষুধ তো আর কিছু নেই।