‘কী নেই জীবনে!’ — ফারদিন মুশফিরাত

অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া কারও মাথায় সারাক্ষণ কী ঘুরঘুর করতে পারে? জেএসসি! বাসা থেকে অভিভাবকেরাও বলে দেন, ‘জেএসসির জন্য পড়ো। আপাতত আর কিছু ভাবতে হবে না।’ ফারদিন মুশফিরাতকেও এমন নির্দেশনা দেওয়া হলো। কিন্তু শুধু পড়ালেখার মধ্যে নিজেকে আটকে রাখতে চায়নি সে। মাথায় তার নানা রকম ব্যবসায়িক আইডিয়া ঘোরাঘুরি করে। সুযোগ পেয়েই তাই গত বছর সে অংশ নেয় ‘দৃষ্টি ব্রেইনস্টোর্মিং বিজনেস কনটেস্ট’-এ। সেখানে ব্যবসার আইডিয়া থেকে শুরু করে সেটির বাজার বিশ্লেষণ, বাজেট, বিপণন পরিকল্পনা ইত্যাদি নির্ধারণ করতে হয় তাকে। এ বয়সেই ব্যবসা নিয়ে সিলভার বেলস কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এই শিক্ষার্থীর এমন চমৎকার ধারণা মুগ্ধ করে সবাইকে। হয়ে যায় রানারআপ। শুধু ব্যবসায়িক আইডিয়াই না, ফারদিন স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও সেরা হয় বরাবরই। বিতর্ক করতেও ভালোবাসে সে। ইন্টারনেটভিত্তিক রিয়েলিটি শো i-gen-এর আঞ্চলিক পর্যায়ে ‘আই-জিনিয়াস’ হয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে চট্টগ্রামের। জেএসসি পরীক্ষায় কি তবে লাড্ডু-গুড্ডুই হয়েছিল ফারদিন? উহু, সেখানে ভালো ফল করে বৃত্তিও পেয়েছে সে।

উল্লেখযোগ্য অর্জন

  • জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় থানা পর্যায়ে চিত্রাঙ্কনে প্রথম, আবৃত্তিতে দ্বিতীয়, উপস্থিত বক্তৃতায় প্রথম ও উপস্থিত অভিনয়ে দ্বিতীয়

  • জাতীয় শিশু মৌসুমি প্রতিযোগিতায় উপস্থিত বিতর্কে দ্বিতীয়

  • বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে হোটেল আগ্রাবাদ আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় সেরা।

ফারদিনের সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন :

স্কুলের ভালো লাগা দিক...

ব্যাগভর্তি বই নিয়ে যাই, আর বের হই এত্তগুলো ভালো ভালো স্মৃতি নিয়ে।

প্রশ্ন :

মন খারাপ হয় কখন?

যখন চিন্তা করি দশম শ্রেণির পর স্কুল ছেড়ে চলে যেতে হবে। ইশ্! সারা জীবন যদি স্কুলে পড়তে পারতাম।

প্রশ্ন :

যে ঘটনা প্রায়ই মনে পড়ে...

আমাদের স্কুল আর নৌবাহিনী স্কুলের ইউনিফর্ম প্রায় একই, শুধু সোয়েটারের রং ভিন্ন। একবার সে স্কুলের অ্যাডজুট্যান্ট তার স্কুলের শিক্ষার্থী ভেবে শাস্তি দিয়েছিল সোয়েটারের জন্য! কিছুতেই বুঝল না আমি সেই স্কুলেরই না।

প্রশ্ন :

কী আছে জীবনে?

কী নেই জীবনে! যা আছে তার তালিকা সবগুলো ছায়াপথের চেয়েও বড়।

প্রশ্ন :

দিনের প্রিয় সময়...

ভোরবেলা। পৃথিবীটাকে তখন অনেক সুন্দর লাগে।

প্রশ্ন :

যারা ক্লাস পালায় তাদের কী শাস্তি হওয়া উচিত?

তাদের ক্লাস করাই নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত। তাহলে আর ক্লাস পালানোর সুযোগই পাবে না! হি হি...

প্রশ্ন :

অবসরে...

বই পড়ি, চলচ্চিত্র দেখি, রান্না করি, ছবি আঁকি আর যা ইচ্ছা তা-ই করি।

(কিশোর আলোর জুলাই ২০১৬ সংখ্যায় প্রকাশিত)