খেয়ালখুশির অদ্বিতীয় রাজা

সুকুমার রায় (৩০ অক্টোবর ১৮৮৭ - ১০ সেপ্টেম্বর ১৯২৩)

সুকুমার রায় হচ্ছেন সেই শিশুসাহিত্যিক, বাংলা শিশুসাহিত্যের ভান্ডার তো বটেই, একই সঙ্গে বিশ্বসাহিত্যের প্রেক্ষাপট বিচারেও তাঁর তুলনা মেলা ভার। বহু ভাষাভাষী পণ্ডিত, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রম্য রচনাকার সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ধূপছায়া বইয়ে ‘সুকুমার রায়’ শীর্ষক নিবন্ধে কোনো রকম রাখঢাক না করেই বলেছেন, ‘সুকুমার রায়ের মতো হাস্যরসিক বাংলা সাহিত্যে আর নেই, সে কথা রসিকজনমাত্রেই স্বীকার করে নিয়েছে, কিন্তু এ কথা অল্প লোকেই জানেন যে, তাঁর জুড়ি ফরাসি, ইংরেজি, জর্মন সাহিত্যেও নেই, রাশানে আছে বলে শুনিনি। এ কথাটা আমাকে বিশেষ জোর দিয়ে বলতে হল, কারণ আমি বহু অনুসন্ধান করার পর এই সিদ্ধান্তে এসেছি।’ অনেকেই অবশ্য এ কথা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে জার্মান সাহিত্যের দিকপাল শিশুসাহিত্যিক ভিলহেলম বুশ সুকুমার রায়ের সমগোত্রীয়, স্বশ্রেণির না হলেও। তিনিও সুকুমারের মতো নিজের লেখার সঙ্গে নিজেই ছবি আঁকতেন। তবে ভিলহেলম বুশের সঙ্গে সুকুমার রায়ের মৌলিক পার্থক্যটা এখানেই যে বুশের বেশির ভাগ গল্প বা পদ্য বা ছড়া ঘটনাবহুল। অনেকেই বলেছেন, সে কাজটি তেমন কঠিন নয়। কিন্তু সুকুমার রায়ের বেশির ভাগ লেখাই ননসেন্স রাইম বা আবোলতাবোল–গোছের। তাতে গল্প নেই, ঘটনা নেই, আছে শুধু অফুরন্ত হাসির ঝরনা। এ কথাও প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে যে সুকুমার রায় এডওয়ার্ড লিয়র ও লুইস ক্যারলের কাছ থেকে কিছু চরিত্র ধার করেছেন। শব্দেরও বাংলায়ন করেছেন। কিন্তু তার পরিমাণ অঙ্গুলিমেয়। সুকুমার রায়ের রচনা, বিশেষ করে ছড়া, পদ্য বা কবিতা আপন মৌলিকত্বে ভাস্বর। যেটুকু তার ঋণ, তাকে আত্তীকরণ বলা যেতে পারে। কিন্তু সেই আত্তীকরণের পরিমাণ তাঁর সমগ্র রচনার শতকরা মাত্র এক ভাগ। যেমন তাঁর ‘কাঠবুড়ো’, ‘কুমড়োপটাশ’, ‘সত্পাত্র’, ‘বাপুরাম সাপুড়ে’, ‘গোঁফ চুরি’, ‘শব্দকল্পদ্রুম’, ‘বুড়ির বাড়ি’, ‘ছায়াবাজি’ ইত্যাদি ছড়া-কবিতা এতটাই মৌলিকতায় ভাস্বর যে অনুবাদে এসবই বিশ্বসাহিত্যের ভান্ডারে নতুন কিছু শুধু যোগই করবে না, নতুন করে মূল্যায়িতও হবেন তিনি। নিজের উদ্ভট বা ননসেন্স–জাতীয় লেখা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তাঁর আবোল তাবোল বইয়ের ভূমিকায় তিনি লিখেছেন, ‘যাহা আজগুবি যাহা উদ্ভট যাহা অসম্ভব তাহাদের লইয়াই এই পুস্তকের কারবার। ইহা খেয়াল রসের বই। সুতরাং সে রস যাঁহারা উপভোগ করিতে পারেন না, এ পুস্তক তাঁহাদের জন্যে নহে।’ স্বীকার করতেই হবে, সুকুমার রায়ের রচনা উদ্ভট ও আজগুবি মালমসলায় ঠাসা বলেই আজও পাঠকদের কাছে সমান জনপ্রিয়।

১৯০৬ সালে কলেজজীবনের ইতি ঘটে সুকুমারের। এ সময়ই প্রতিষ্ঠা করেন ‘ননসেন্স ক্লাব’। মেতে ওঠেন নাটক লেখা ও অভিনয় নিয়ে। ভবিষ্যতে তাঁর লেখার চরিত্র বা ধারা কোন খাতে বইবে, তার সূচনা বলতে গেলে এই ননসেন্স ক্লাব প্রতিষ্ঠাগত প্রবণতার ভেতর দিয়েই।

এমন যে মহান শিশুসাহিত্যিক তাঁর পৈতৃক নিবাস বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার মসুয়া গ্রামের বিখ্যাত রায় পরিবারে। তাঁর বিখ্যাত বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এই পরিবারের মধ্যমণি। তিনিও শিশুসাহিত্যিক, সংগীতসাধক, চিত্রশিল্পী ও মুদ্রণশিল্পে মৌলিক অবদানের জন্য বিশ্বস্বীকৃত ব্যক্তিত্ব। ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। রবীন্দ্রনাথদের পরিবার যেমন গুণী মানুষে ভরা, তেমনি উপেন্দ্রকিশোরের বড় ভাই সারদারঞ্জনকে বাংলার ক্রিকেটের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। বাংলা শিশুসাহিত্যের সম্রাজ্ঞী বলে যাঁকে অভিহিত করা হয়, সেই লীলা মজুমদারও এই বংশের মেয়ে। সুখলতা রাও, সুকুমারের বড় বোনও কম যান কিসে! সুকুমারের পরবর্তী বোন পুণ্যলতার স্মৃতিকথার ভেতর দিয়ে সুকুমারসহ তাঁর ভাইবোনদের শৈশব ও কৈশোরের দুরন্তপনায়-ভরা দিনগুলোর ছবির পর ছবি দিব্য হয়ে ওঠে। সুকুমাররা ছিলেন ছয় ভাইবোন। সবার বড় সুখলতা, তারপর সুকুমার, তৃতীয় পুণ্যলতা, চতুর্থ সুবিনয়, পঞ্চম শান্তিলতা ও ষষ্ঠ সুবিমল। প্রত্যেকেই লেখালেখি বা সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত ছিলেন।

পৈতৃক নিবাস বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার মসুয়া গ্রামে হলেও, সুকুমার রায়ের জন্ম কলকাতার ১৩ নম্বর কর্নওয়ালিশ স্ট্রিস্টের ভাড়া-করা বাড়িতে ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর। মনে রাখা দরকার, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী মসুয়া গ্রাম ছেড়ে ১৮৮০ সালে কলকাতায় চলে এসেছিলেন। এই বাড়িরই নিচতলায় ছিল বিখ্যাত ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়। সুকুমার ও তাঁর ভাইবোনেরা অক্ষরজ্ঞান লাভ করেছিলেন এই স্কুলেই। শৈশব ও কৈশোরকালে একটা আনন্দময় পরিবেশ পেয়েছিলেন সুকুমার ও তাঁর ভাইবোনেরা। ঠিক ঠাকুরবাড়ির মতো। গানবাজনা, নাটকাভিনয়, লেখালেখি ও চিত্রাঙ্কন—এসবই ছিল তাঁদের নিত্যচর্চার বিষয়। লম্বা ছুটিতে মাঝেমধ্যেই ভাইবোন মিলে সুকুমাররা চলে যেতেন তখনকার পূর্ব বাংলার ময়মনসিংহের মসুয়া গ্রামে। দেশের বাড়িতে যাওয়া তাঁদের জন্য ছিল আনন্দজনক এক ঘটনা। যেতেন প্রথমে রেলগাড়ি, তারপর নৌকা, তারপর হাতির পিঠে চেপে পৌঁছাতেন গিয়ে মসুয়ার বিশাল বাড়িতে, যা পরিচিত রায়চৌধুরীদের জমিদার বাড়ি নামে। আরও কত জায়গা যে ভ্রমণ করেছেন সুকুমার, তার গোনাগুনতি নেই।

যাহোক, কলকাতার সিটি স্কুল থেকে এখনকার এসএসসি সমমানের এনট্রান্স পাস করে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেন সুকুমার। বিষয় পদার্থ আর রসায়নবিদ্যা। এখানে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেই শুরু হয় তাঁর কবিতা লেখা ও ছবি আঁকাআঁকির চর্চা। লিখছেন নাটক। হাত পাকাচ্ছেন ফটোগ্রাফিতেও।

এর মধ্যে সুকুমারদের বাড়ি বদল হয়েছে। তাঁরা সপরিবার উঠে এলেন ২২ নম্বর সুকিয়া স্ট্রিটে। বিখ্যাত ‘ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’-এর গোড়াপত্তন হয়েছিল এ বাড়িতেই ১৯১০ সালে। এক বছর পর তাঁরা উঠে এলেন গড়পাড়ের নিজস্ব বাড়িতে। বসল একতলায় প্রেস আর দোতলায় থাকার ব্যবস্থা। এদিকে সুকুমার তখন রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় ডাবল অনার্স নিয়ে বিএসসি পাস করেছেন। মুদ্রণশিল্পের সঙ্গে বাবার পাশাপাশি নিজেকেও জড়াচ্ছেন হাতে-কলমে। বাবা উপেন্দ্রকিশোরেরও সুনাম তখন গগনস্পর্শী হাফটোন ব্লক প্রিন্টিংয়ের উন্নত সংস্করণ উদ্ভাবন ও মুদ্রণে নতুন ধারার সূচনা করার সুবাদে।

১৯০৬ সালে কলেজজীবনের ইতি ঘটে সুকুমারের। এ সময়ই প্রতিষ্ঠা করেন ‘ননসেন্স ক্লাব’। মেতে ওঠেন নাটক লেখা ও অভিনয় নিয়ে। ভবিষ্যতে তাঁর লেখার চরিত্র বা ধারা কোন খাতে বইবে, তার সূচনা বলতে গেলে এই ননসেন্স ক্লাব প্রতিষ্ঠাগত প্রবণতার ভেতর দিয়েই।

২৪ বছর বয়সে ১৯১১ সালে সুকুমার যাত্রা করেন বিলেতের উদ্দেশে। গুরুপ্রসন্ন বৃত্তি লাভ করে। লক্ষ্য ফটোগ্রাফি ও প্রিন্টিং টেকনোলজিতে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ। বাবা উপেন্দ্রকিশোরের প্রবল স্বপ্ন তাঁর উদ্ভাবিত উন্নততর হাফটোনের কাজ ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞদের দেখানো। ছেলে সুকুমার তাতে সাফল্য লাভ করেন তো বটেই, নিজেও মৌলিক জ্ঞানের অধিকারী হন মুদ্রণসংক্রান্ত বিষয়ে। তাঁর কৃতিত্বের গুণে ১৯১২ সালে সুকুমার বিলেতে রয়েল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সদস্য হন। ১৯১৩ সালে নির্বাচিত হন সংস্থাটির ফেলো। মনে রাখা দরকার, এ সবই ঘটছে অফসেট মুদ্রণ ও ফটোগ্রাফি–শিল্পের সেই শৈশবকালে।

একটা মজার ঘটনা ঘটল বিলেতে ১৯১২ সালের ১৬ জুন। মিস্টার পিয়ারসনের বাড়িতে বাংলা সাহিত্য নিয়ে ইংরেজিতে একটা প্রবন্ধ পড়ার আমন্ত্রণ পেলেন সুকুমার। সুকুমার সেখানে গিয়ে তো একেবারে হতবাক! ঘরোয়া এই সভায় হাজির ব্রিটেনের সাহিত্য মহারথীদের মধ্য থেকে মিস্টার আর্নল্ড, মিস্টার রোদেনস্টাইন, ডা. পি সি রায় এবং রবীন্দ্রনাথ নিজে। হতভম্ব হয়ে গেলেন সুকুমার। চোখ-কান প্রায় বন্ধ করে পড়ে ফেললেন রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি ইংরেজিতে অনূদিত কবিতা। রবীন্দ্রনাথ এতটাই খুশি হলেন যে সুকুমারকে অন্যদের কাছে এই বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন, ‘সুকুমার আমার যুবক বন্ধু।’

ঘটনার শেষ এখানেই নয়। এই ঘটনার এক মাস পরেই একটি সভায় পড়লেন ইংরেজিতে লেখা নিজের প্রবন্ধ। শিরোনাম ‘দ্য স্পিরিট অব রবীন্দ্রনাথ’। কুয়েস্ট পত্রিকার সম্পাদক মি. মিড প্রবন্ধটি তাঁর পত্রিকায় ছাপিয়েছিলেন গুরুত্ব দিয়ে। এই প্রবন্ধই রবীন্দ্রনাথকে পাশ্চাত্যে প্রথম ব্যাপকভাবে পরিচিত করতে সাহায্য করে। আর ঠিক এর এক বছর পর, অর্থাৎ ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ পেলেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। এই ১৯১৩ সালেই আরও তিনটি ঘটনা ঘটল রায় পরিবারে। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সম্পাদনায় বের হলো এ বছরেরই মে মাসে সাড়া জাগানো শিশুসাহিত্য পত্রিকা সন্দেশ। এর কয়েক মাস পরেই বিলেত থেকে দেশে ফিরে এলেন সুকুমার এফআরপিএস, অর্থাৎ ‘দ্য রয়েল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির ফেলো’ হয়ে। বিয়েও করলেন এই সালেরই ডিসেম্বর মাসে সুপ্রভাকে। সুকুমার ও সুপ্রভার একমাত্র সন্তান বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়। জন্ম ১৯২১ সালে। তাঁদের বিয়ের ৮ বছর পরে জন্ম হয়েছিল তাঁর।

বলে রাখা ভালো, সুকুমার সন্দেশ-এর জন্য নানা ধরনের কাজ করলেও বাবা উপেন্দ্রকিশোরের জীবদ্দশায় তেমন বেশি লেখার সুযোগ হয়নি তাঁর। ১৯১৫ সালে যখন কিছুটা বৈভবের মুখ দেখছে রায় পরিবার, তখনই বহুমূত্র রোগে মারা গেলেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। মাত্র ৫২ বছর বয়সে। তখন সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব এসে চাপল সুকুমার আর ভাই সুবিনয়ের ওপর। পাশাপাশি পুরোনো ননসেন্স ক্লাবের বিকল্প হিসেবে সুকুমার গড়ে তুললেন ‘মণ্ডে ক্লাব’। প্রতি সোমবার এই ক্লাবের আসর বসত বলে তার এই নাম। প্রচুর খানাপিনা হতো বলে কেউ কেউ এর নাম দিয়েছিলেন ‘মণ্ডা ক্লাব’।

ব্রাহ্ম সমাজ নিয়েও মেতেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন কিছু ব্রহ্মসংগীতও। সুরও দিয়েছিলেন। গেয়েওছিলেন। এত কিছু করার পরও তাঁর রসবোধের ঘাটতি পড়েনি কোনো দিন। ৩৬ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে সামলেছেন বহুবিধ দায়িত্ব—সন্দেশ-এর সম্পাদনা, তাতে লেখা। শুধু ছড়া-কবিতা নয়, লিখেছেন নাটক—ছোটদের ও বড়দের জন্য, লিখেছেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মনীষীদের জীবনী, গল্প ও জীবজন্তুর পাশাপাশি আরও অন্যবিধ বিষয় নিয়ে। তাঁর ব্যক্তিগত পঠনপাঠনের ব্যাপ্তি ছিল দূরপ্রসারী। বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন বলে বাদ দেননি বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে লেখালেখির ব্যাপারটিও। ভেবে অবাক হতে হয়, স্বল্পায়ুর এই জীবনে তিনি এত কিছু লেখার সুযোগ পেলেন কী করে, বিশেষ করে পারিবারিক ব্যবসার নানা দিক দেখাশোনা করার পরও।

সুকুমার রায়ের জীবনী আলোচনা করতে গেলে যে বিষয়টি মনকে বিষণ্ন না করে পারে না তা হলো, তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর কোনো পাণ্ডুলিপি মুদ্রিত আকারে দেখে যেতে পারেননি তিনি। ছড়া-কবিতার বই আবোল তাবোল–এর ছবি আঁকা থেকে শুরু করে গেটআপ-মেকআপ সবই করেছিলেন তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে, কিন্তু বইটি প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর ৯ দিন পর। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। ছেলে সত্যজিৎ রায়ের বয়স তখন মাত্র আড়াই বছর। রেখে যান স্ত্রী সুপ্রভা রায় ও বৃদ্ধ বিধবা মাকে।

অসুস্থ হয়ে যখন মৃত্যুর প্রতীক্ষা করছেন সুকুমার রায়, তখনো তাঁর কাজের বিরাম ছিল না। তাঁর অসুস্থতার খবর পেয়ে রবীন্দ্রনাথ নিজে তাঁকে দেখতে আসছেন। শোনাচ্ছেন নিজের লেখা ও সুরারোপিত গান, কখনো নিজের প্রাণের তাগিদে, কখনো সুকুমার রায়ের কাছ থেকে অনুরুদ্ধ হয়ে।

এই তো সংক্ষেপে সুকুমার রায়ের ৩৬ বছরের জীবন।