চেহারার রকমফের

গোল্লা দিয়ে চেহারা না হয় আঁঁকা গেল। এবার? চেহারা তো আর গোল গোল হবে না। সেটা আঁঁকারও কিছু সহজ পদ্ধতি আছে। প্রথম সহজ পদ্ধতি হলো যাচ্ছেতাই বা যা-ইচ্ছা-তাই যেকোনো শেপ এঁকে নেওয়া। গোটা কাগজে বিভিন্ন রকমের এমন কিছু শেপ এঁকে মাঝেমধ্যেই একটা মজার খেলা হিসেবেও খেলা যেতে পারে। ধরা যাক প্রথমে নিচের এসব যা-তা শেপ আঁকলাম। সবগুলো অবশ্যই এক নয়। কিছু শেপ মোটা, কিছু চিকন, কিছু মোটামুটি চারকোনা। ব্যস, কাজ শেষ। এবার আগে শেখা সেই চেহারার স্মাইলিকে বিভিন্নভাবে শুধু বসিয়ে যাওয়া। সেই সঙ্গে এক্সপ্রেশন তো জেনে গেছিই (লিংক)। দেখা যাক ব্যাপারটা কী দাঁড়ায়।

এই শেপগুলো আসলে কোনো নিয়ম মেনে করা নয়। যা মাথায় আসে তাই, আসলে এগুলোই কার্টুন আঁকার ক্ষেত্রে বেশি মজার লাগে। তবে চাইলে আরও জ্যামিতিক শেপ দিয়েও আঁকা যায়। জ্যামিতিক শেপ বোঝার জন্য কাজে দেয় বেশি। মানে মাঝেমধ্যে এমন হয় যে চারটা চেহারা এঁকে ৫ নম্বরটা মাথায় আসছে না, সে সময় ব্যবহার করা হয়নি এমন শেপ এঁকে নিয়ে ৫ নম্বরটা আনা যেতে পারে।

শেপগুলোতে চেহারা বসানো হলো। আমরা ধরেই নিচ্ছি কিশোর আলো যারা পড়ে তারা এটুকু নাক-মুখ-চোখ আঁকতে জানে। এর পরেরটুকু কীভাবে আঁকা যায় সেটা আমরা আরেকটু পরের পর্বে দেখব, সময় তো আছেই। আচ্ছা জ্যামিতিক শেপের ব্যাপারে যা বলা হচ্ছিল সেটা একটু হাতে-কলমে করে দেখা যাক। একেবারে বেসিক যে কটা জ্যামিতিক শেপ আমরা চিনি সেগুলো হলো গোল, চারকোনা আর তিনকোনা (ভালো ছাত্রছাত্রীরা বলবে বৃত্ত, চতুর্ভুজ আর ত্রিভুজ—জিনিস একই।) এই তিনটি শেপ দিয়ে ক্যারেক্টার ডিজাইনে মজার তিনটি রকম চরিত্র আঁকা হয়। আসলে তিনটি শেপ আমাদের চোখে তিন রকমের অনুভূতি দেয়, সেটাই আঁকিয়েরা কাজে লাগান। যেমন গোল কিছু থেকে আর যাই হোক খোঁচা খাওয়া সম্ভব না। এটা দেখলে তাই একটু যাক বাবা বাঁচা গেল ধরনের অনুভূতি হয়। আবার তিনকোনা কিছু দেখলে মনে হয় এই বুঝি গায়ে বিঁধে গেল কাচের টুকরা, টিনের কোনা, যেকোনো ধাতবের টুকরা। ওদিকে চারকোনা বলতে আমরা বুঝি কোনো ভীষণ শক্ত কিছু। দেয়াল, ইট, দালান। দেখা যাক ইতিমধ্যে ক্যারেক্টার ডিজাইনে এগুলো কীভাবে এসেছে।

গোল—স্পাইডারম্যান: বন্ধুভাবাপন্ন, হাসিখুশি টিনএজার। কখনোই সে ডার্ক নৃশংস না। মজার ক্যারেক্টার। চারকোনা—হাল্ক: মানে খবরই আছে। দেয়ালের মতো নিরেট, বুদ্ধিশুদ্ধি কম কিন্তু রেগে গেলে তুমি শেষ! তিনকোনা—উলভারিন: নৃশংস স্পাইকি। কেটেকুটে শেষ। আসলে এই একেবারে বেসিকটা মাথায় রেখে বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্যারেক্টার ডিজাইনাররা এ ধরনের কার্টুন বা কমিকসের ক্যারেক্টার ডিজাইন করেন। দেখতে যতই সহজ সাধারণ মনে হোক, এটা দারুণ কাজে দেয়।

এ তো গেল একেবারে মৌলিক শেপগুলোর কথা, যদি এবার একাধিক শেপ জোড়া দিতে শুরু করি? দেখা যাক কী ঘটে।

যা ঘটে তা খারাপ না, বিভিন্ন শেপ মিলে তখন অসংখ্য শেপ তৈরি হতে থাকে। লেগো সেটের চেয়েও এই খেলাটা অনেক মজার হয়ে যায় তখন। পরের পর্বে নাক-মুখ-চোখের আরেকটু ডিটেইলে যাওয়ার আগে আমরা এই নতুন লেগো ব্লকের খেলাটা চালিয়ে যেতে থাকি।