‘জাদুর পাটিতে ভর করে পুরো বাংলাদেশ ঘুরে দেখব’ — আয়শা মাহজাবিন

একটু ভেবে দেখো তো, ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলপড়ুয়া মেয়ে তুমি। যার জন্য বিজেএমসি জাতীয় হ্যান্ডবল দল অধীর অপেক্ষায় বসে আছে। কবে তুমি আঠারোতে পড়বে আর তাদের দলের হয়ে খেলবে!

ব্যাপারটা আয়শার ভাবতে হয়নি। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ই তার ডাক পড়ল ভিকারুননিসা নূন হ্যান্ডবল দলে। পরমাণু আকারের আয়শাকে প্রথম প্রথম কত কথাই না শুনতে হতো! এতটুকু মেয়ে গোলপোস্ট সামলাবে? হ্যান্ডবল কি লুডু মনে করেছে?

তখন থেকেই আয়শার মনে জেদ, যে করেই হোক ভালো খেলতেই হবে! জীবনের প্রথম ম্যাচ ২০০৭ সালে ‘কেএফসি মিনি হ্যান্ডবল টুর্নামেন্ট’-এ ভিকারুননিসা নূন স্কুলের দশম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী। সেই ম্যাচ থেকেই সে সবার নজরে। এখন পর্যন্ত স্কুল দলের হয়ে আয়শার খেলা ম্যাচের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। স্কুল দলসহ অনূর্ধ্ব ১৪, ১৬, এমনকি ১৮ জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবেও খেলেছে সে। তার হাত ধরে দল হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। গোলকিপার পজিশনে খেলে ম্যাচসেরা হওয়াটা হ্যান্ডবলে কঠিন, বিরলও বটে। সেই কঠিন কাজটা বহুবার করে দেখিয়েছে সে। অনূর্ধ্ব ১৬ ‘পোলার স্কুল হ্যান্ডবল টুর্নামেন্ট’, ওয়ালটন আয়োজিত অনূর্ধ্ব ১৮ জাতীয় নারী লিগ, দ্বিতীয় বিভাগ নারী লিগ হ্যান্ডবল টুর্নামেন্ট ও অনূর্ধ্ব ১৬ জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সে হয়েছে সেরা খেলোয়াড়। বন্ধুমহলে সবার প্রিয় আয়শা। মাঠে নামতেই চারদিক থেকে ‘আ-য়-শা, আ-য়-শা’ রব পড়ে যায়। খেলার মাঠে প্রতিপক্ষ দলের জন্য ভীতি সৃষ্টিকারী আয়শা নাচেও পারদর্শী। অষ্টম শ্রেণি সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেতেও ভুল করেনি সে।

প্রশ্ন :

খেলায় অনুপ্রেরণা—

শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষিকা লিপি আপা

প্রশ্ন :

গোলকিপার ছাড়া অন্য যে পজিশনে খেলা হয়—

আমাকে ঠেললেও আমি অন্য পজিশনে খেলব না। মাথা খারাপ!

প্রশ্ন :

স্কুলে বন্ধুরা ডাকে—

ভিএনএস স্টার!

প্রশ্ন :

হঠাৎ একটা স্পেসশিপ এসে তোমাকে মঙ্গল গ্রহে নিয়ে গেলে—

সেখানে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে দিয়ে আসব।

প্রশ্ন :

এমন যদি হতো—

পরীক্ষা না দিয়েই উত্তীর্ণ হওয়া যেত।

প্রশ্ন :

আলাদিনের চেরাগ পেলে—

জাদুর পাটিতে ভর করে পুরো বাংলাদেশ ঘুরে দেখতাম।

(কিশোর আলোর মে ২০১৬ সংখ্যায় প্রকাশিত)