তারা তিনজন

তিন গোয়েন্দার সঙ্গে তোমরা নিশ্চয়ই পরিচিত। সেবা প্রকাশনী থেকে ১৯৮৫ সালের আগস্ট মাসে যাত্রা শুরু হয় তিন গোয়েন্দা সিরিজের। এ বছর আগস্ট মাসে তিন যুগ পার করল তিন গোয়েন্দা। তিন গোয়েন্দার কিশোর, মুসা ও রবিনকে নিয়ে দু'লাইন জেনে নিই চলো।

কিশোর পাশা

রহস্য ঘনীভূত হলে বা গভীর কিছু ভাবতে হলে বুড়ো আঙুুল আর তর্জনী দিয়ে নিচের ঠোঁটে চিমটি কাটতে শুরু করে গোয়েন্দা প্রধান কিশোর পাশা। মাথায় কোঁকড়ানো চুল, তীক্ষ চোখে বুদ্ধির ঝিলিক, ক্ষুরধার মস্তিষ্ক। বড় বড় রহস্যরাও নিরুপায় হয়ে হার মানে তার বুদ্ধির কাছে। পেটে বোমা মারলেও প্রয়োজনের আগে মুখ খোলে না সে কখনো। বাংলাদেশি বাবা জাহেদ পাশার একমাত্র ছেলে কিশোর। সেই সুবাদে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। মাত্র ৭ বছর বয়সে এক ঝড়ের রাতে গাড়ি দুর্ঘটনায় তার মা-বাবা দুজনেই মারা যান। এরপর মেরি চাচি আর রাশেদ চাচার কাছেই বড় হয় কিশোর।

ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি নাড়াচাড়ার কাজে ভীষণ পটু কিশোর পাশা। স্যালভিজ ইয়ার্ডের জঞ্জাল থেকে বাতিল জিনিস দিয়ে উদ্ভট যন্ত্র বানাতে ওস্তাদ সে। তাই তাকে ইলেকট্রনিক্সের জাদুকরও বলা হয়। কিশোর একজন অভিনেতাও বটে। ছেলেবেলায় টিভিতে পাগল সংঘ নামের এক কমেডি সিরিজে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছিল সে। তার চরিত্রের নাম ছিল মোটুরাম। এখান থেকে জানা যায়, ছোটবেলায় ভীষণ নাদুসনুদুস ছিল কিশোর পাশা।

মুসা আমান

সর্বদা ভূতের ভয়ে থরহরি কম্প মুসা আমান তিন গোয়েন্দা সিরিজের সবচেয়ে মজার চরিত্র। ভীষণ ভোজন রসিকও মুসা। কথায় কথায় ‘খাইছে’ আর ‘ইয়াল্লা’ বলে ওঠা মুসা হলো তিন গোয়েন্দার মধ্যে গোয়েন্দা সহকারী হিসেবে পরিচিত। তার আদি বাড়ি আফ্রিকা। বাবা রাফাত আমান আর মায়ের সঙ্গে সে থাকে রকি বিচে। তার বাবা হলিউডের বড় টেকনিশিয়ান। আর মা গৃহিণী।

মাথায় তারের মতো প্যাঁচানো চুল আর ঝকঝকে সাদা দাঁত। কুচকুচে কালো গায়ের রঙের মুসা আমানকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যায়ামবীর হিসেবে। ভূতের ভয়ে কাবু থাকলেও পেশিশক্তিতে সবল সে। বিপদে পড়লে কোনোকিছু পরোয়া করে না। প্রচণ্ড শক্ত মাথা দিয়ে শত্রুর পেটে আঘাত করতে তার জুড়ি নেই। কুংফু-কারাতেও সে সমান পারদর্শী। বিমান চালাতেও বেশ দক্ষ। তবে বই পড়ায় ভীষণ অপছন্দ তার। তারচেয়ে খাওয়াদাওয়া আর খেলাধুলাতেই তার যত আগ্রহ মুসা আমানের।

রবিন মিলফোর্ড

তিন গোয়েন্দার সব কেসের রেকর্ড রাখা বা নথি সংরক্ষণ করা রবিন মিলফোর্ডের কাজ। এ জন্য তাকে গোয়েন্দা দলের নথি গবেষক বলা হয়। রহস্য সমাধান করতে গিয়ে প্রয়োজনে বইপত্র বা জার্নাল ঘাঁটাঘাঁটি করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করে রবিন।

বইয়ের প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা তার। তাকে বলা হয় চলমান জ্ঞানকোষ। রকি বিচ লাইব্রেরিতে খণ্ডকালীন চাকরিও করে রবিন। আয়ারল্যান্ড বংশোদ্ভূত রবিনের বাবা মিস্টার মিলফোর্ড সাংবাদিক আর মা গৃহিণী। পাহাড়ে উঠতে ওস্তাদ সে। অবশ্য সেজন্য কয়েকবার পা ভেঙেছে তার।