ধূমপানকে না বলব সারা জীবন

অলংকরণ: জুনায়েদ

জীবনকে অর্থবহ করে সুন্দরভাবে বাঁচাই মানুষের লক্ষ। অন্যের জীবনও অর্থবহ করতে সবার সাহায্য করা উচিত। তাই সবার কর্তব্য, ধূমপানের মতো ক্ষতিকর অভ্যাস ত্যাগ করা। 

সে-ই সত্যিকার মানুষ, যে স্বপ্ন দেখতে পারে, স্বপ্ন দেখাতে জানে। কিন্তু ধূমপান মানুষের স্বপ্ন তিলে তিলে ধ্বংস করে। পরোক্ষ ধূমপানে নানা রোগে আক্রান্ত হয় প্রিয়জনেরা। এমনকি বাদ যায় না পোষা প্রাণীটিও। যাদের ছাড়া জীবন কল্পনা করা যায় না, সেই প্রিয়জনকে ধূমপানের ধোঁয়ায় বিষাক্ত করা মানবতাবিরোধী, ভালোবাসাবিরোধী।

ধূমপান প্রধানত সক্রিয় আর নিষ্ক্রিয় এ দুভাগে ভাগ করা হয়। যারা সরাসরি ধূমপান করে, তারা সক্রিয় ধূমপায়ী। আর অনিচ্ছায় তামাকজাত ধোঁয়া ফুসফুসে গেলে সেটি নিষ্ক্রিয় বা পরোক্ষ ধূমপান। অধিকাংশ মানুষই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। ধূমপান মানে নিজে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। আবার প্রিয়জনকে ঠেলে দেওয়া মৃত্যুর দিকে। নিজের প্রতি অন্যায় করা যেমন অনুচিত, তেমনি প্রিয়জনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়াও বোকামি। আমি কারও অসুস্থতা বা মৃত্যুর কারণ হতে চাই না। চাই না আমার জন্য কেউ অকালে মারা যাক বা ভবিষ্যত্ নষ্ট হোক। তাই আমি কোনো দিন ধূমপান করব না।

২০১০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন জানায়, পরোক্ষ ধূমপানে বছরে ছয় লাখ মানুষ মারা যায়, যার দেড় লাখই শিশু। পরোক্ষ ধূমপানে শিশুরা নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। এ ছাড়া ফুসফুস ক্যানসার, হূদেরাগসহ নানা রোগ দেখা দেয়। আমি ধূমপান করে কারও ক্ষতি করতে চাই না।

আমি স্বাধীনচেতা হতে চাই। কারও ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না। সিগারেট নিকোটিনের ওপর নির্ভরশীল করে। কোনো জটিল সমস্যা সমাধানের সময় কিংবা দুশ্চিন্তার সময় শরীরে নিকোটিনের চাহিদা সৃষ্টি হয়। এ আসক্তির কারণে ‘ধূমপান বিষপান’ জেনেও ধূমপান করে অনেকে।

আমি স্বপ্ন দেখতে চাই। ধূমপান করে আমাকে নিয়ে বাবা-মার স্বপ্নগুলোর অপমৃত্যু ঘটাতে চাই না। ধূমপান মানুষের মেজাজ খিটখিটে করে, অনিদ্রা, বিষণ্নতা সৃষ্টি করে। হতাশা আর মানুষের স্বপ্নের পথে বাধা সৃষ্টি করে। আমি আনন্দ, আশা আর উত্সাহ নিয়ে বাঁচতে চাই। ভালো কাজ করতে চাই। টাকা দিয়ে মৃত্যুব্যাধি আর হাহাকার কিনতে চাই না। তাই আমি কোনো দিন ধূমপান করব না। ধূমপানকে না বলব। সব সময়। সারা জীবন।