পাখির বাসা খাসা

নিজের বাসাবাড়ি নিয়ে একবার ভীষণ তর্কে নেমেছিল দুটি পাখি। তর্কের বিষয়—কার বাসা সেরা। বাবুই আর চড়ুই পাখির সে তর্কের কথা কে না জানে। কিন্তু পাখির বাসা নিয়ে কখনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলে নিঃসন্দেহে সেরা পুরস্কারটি ছিনিয়ে নেবে বাবুই পাখিই। অবশ্য অন্য পাখিদের বাসাও হেলাফেলা করার মতো নয়। কারণ, প্রত্যেকটি পাখিই খুব যত্নে নিপুণভাবে বাসা বোনে। এই বাসাতেই তারা বসবাস করে, ডিম পাড়ে। একসময় ডিম ফুটে হয় ছানা। ছানারা উড়তে শিখে বাসা ফেলে চলে যায়। উড়ে যায় বাবা-মা পাখিও। একেক পাখির বাসা দেখতে একেক রকম। কোনোটা ইয়া বড়। কোনোটা ছোট্ট বাটির সমান। কোনোটা সাজানো-গোছানো আর আরামদায়কও। কোনোটা একেবারেই এলোমেলো। বাকিটা নিজেই দেখে নাও নিচের ছবিগুলোতে।
১ / ১০
এক বেলিফুল গাছে বাসা বেঁধেছে সিপাহি বুলবুলি। ছোট্ট বাটির মতো সুন্দর গোছানো বাসা। খড় আর গাছের শিকড় দিয়ে বানানো বাসায় ঘুমিয়ে আছে দুটি ছানা। ওপরের ছবিতে সিপাহি বুলবুল।
২ / ১০
পুকুর, নদী কিংবা খালের খাড়া পাড়ে মাটিতে গর্ত করে বাসা বানায় মাছরাঙা। সাপ, কিংবা বেজির সাধ্য নেই খাড়া পাড় বেয়ে বাসায় ঢোকে। দুষ্টু ছেলেরাও হাত ঢুকিয়ে ডিম কিংবা ছানার নাগাল পায় না। ওপরের ছবিতে ধলাগলা মাছরাঙা।
৩ / ১০
অসাধারণ শিল্পী পাখি বাবুই। এত সুন্দর বাসা আর কোনো পাখি বানাতে পারে না। শূন্যে ভেসে ভেসে খড়-শিকড় দিয়ে বাসা বানায়। সুই-সুতো ছাড়াই একটার সঙ্গে আরেকটা খড় বুনে চলে নিপুণভাবে। তাল ও নারকেলগাছের পাতায় বানানো বাসার ভেতরটা তুলোর মত গদিতে মোড়ানো। ওপরে বাবুই পাখি।
৪ / ১০
দূর থেকে দেখলে মনে হয়, একগুচ্ছ পাতা আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। আসলে এটা কানাকুয়া পাখির বাসা। শুকনো তালপাতা সাজিয়ে হাঁড়ির মতো বাসা করে এরা। আকাশের দিকে মুখ করা বাসায় তিনটি বড়সড় ডিম। ওপরে কানাকুয়া পাখি।
৫ / ১০
বিশাল আকারের পাখি শামুকখোল। তাই অনেক বড় বাসা বানাতে হয়। একটা বাসার দৈর্ঘ্য প্রায় এক মিটার। শামুকখোল বড় বড় কলোনিতে বাস করে। অশ্বত্থ, বট, বড় শিরীষগাছে একসঙ্গে ১০০-২০০টি পর্যন্ত বাসা দেখা যায়।
৬ / ১০
কারও চুল এলোমেলো দেখলেই আমরা বলি কাকের বাসা। এমন এলোমেলো বাসা আর নেই। বাসায় নানান জিনিস থাকে। বিদ্যুতের তার, স্প্রিং, নাটবল্টু, প্লাস্টিক, কী নেই! কিন্তু এসব জিনিস কাক কোন কাজে লাগায় কে জানে!
৭ / ১০
ছোট্ট টুনটুনির বাসা খুব পরিপাটি। এই ছবিটা বর্ষাকালে পরিত্যক্ত বাসার। তাই একটু এলোমেলো লাগছে। গাছের শিকড়, খড়, শুকনো পাতা ইত্যাদি দিয়ে বাসার বাইরের দিকটা তৈরি। ভেতরে তুলো দিয়ে তৈরি গদি। ছানাদের বড্ড আরামে রাখে টুনটুনিরা। বামে টুনটুনি।
৮ / ১০
নারকেলগাছ খুব পছন্দ টিয়াদের। উঁচু নারকেলগাছে বাসা বাঁধে টিয়াপাখি। সাপ, শিয়াল, বেজি, দুষ্টু ছেলের দল এত উঁচুতে উঠে টিয়ার বাসায় হামলা করতে পারে না। ডানে টিয়া পাখি।
৯ / ১০
কাঁচা পাতার সঙ্গে মাকড়সার জাল মিশিয়ে বাসা বানায় ছোট্ট পাখি ফটিকজল। বাবলাগাছে পেয়ে গেছে মাকড়সার জাল। সঙ্গে বাবলার পাতাও কাজে লাগাতে চায়। সে জন্যই পাখিটার এই উল্টোবাজি। উপরে ফটিকজল পাখি।
১০ / ১০
ফিঙে হলো মেঠোপাখিদের রাজা। ফিঙের বাসা থেকে ডিম কিংবা ছানা চুরির ক্ষমতা কোনো শিকারি পাখির নেই। লড়তে জানে পাখিটা। তাই বাসা বানায় ফাঁকা জায়গায়। পাখির তুলনায় বাসা ছোট। বাঁশের শুকনো পাতা, শিকড় ইত্যাদি দিয়ে বাসা বানায় ফিঙেরাজা।