বই-বাতিকগ্রস্তের সঙ্গে সংলাপ

আমাদের বাসাভর্তি বই। বইয়ের র‌্যাকে তো বটেই, খাটের নিচে, রান্নাঘরের আলুর ঝুড়িতে, ফ্রিজের ভেতর, বারান্দায় সাজানো টব ঘেঁষে, ছাদের সিঁড়িঘরে, এমনকি বাথরুমে টুথব্রাশ-সাবান রাখার তাকেও বই! তো, বাড়ির সদস্যরা যখন এই বইয়ের ধাক্কায় ধাক্কায় সহ্যের সীমা পেরিয়ে যায়, তখন বাধ্য হয়েই আমাকে বইগুলো একটু সাজিয়ে রাখতে হয়। এই কাজে মহানন্দে সঙ্গী হয় আমার একমাত্র পুত্রধন, দুষ্টের শিরোমণি জুনিয়র ওসমান, ওরফে ‘গুটু’। এমনিতে আমাকে জ্বালিয়ে মারলেও, এই একটা কাজেই হাসিমুখে বাপের সঙ্গে হাত মেলায় সে।

গত সপ্তাহে তেমনই এক বই গোছানোর পর্বে গুটু বইয়ে জমা ধুলার তোড়ে হাঁচি দিতে দিতে জিজ্ঞেস করে, ‘বাবা, এই বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো বই কোনটা?’ আমি উত্তর দিতে পারি না। তাই আমতা আমতা করে বলি, ‘সেটা তো হিসাব করে দেখিনি, তবে দুনিয়ার সবচেয়ে পুরোনো বইয়ের খবরটা জানা আছে আমার।’

‘তাই? কত আগের বই সেটা?’

‘বইয়ের তো নানা ধরন রয়েছে। যদি ছাপানো বইয়ের কথা বলিস, তাহলে সবচেয়ে পুরোনো বইটা আজ থেকে ৫৬০ বছরেরও বেশি পুরোনো! জার্মানির জোহান গুটেনবার্গ সাহেবের হাত ধরে দুনিয়ার প্রথম বইখানা ছাপা হয়। ওটা ছিল লাতিন ভাষার বাইবেল। ১৪৫০ সালে ছাপার কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৪৫৫ সালে। বলা হয়, কাগুজে না ছাপা হয়ে যদি পার্চমেন্ট বা পশুর চামড়ায় লেখা হতো ওই বইটি, তাহলে নাকি জীবন দিতে হতো কমসে কম ২০০ ভেড়াকে! তবে, এ তো গেল কাগুজে বইয়ের কথা। যদি অন্য মাধ্যমে লেখা বইয়ের সমগোত্রীয় কিছুর খোঁজ করা হয়, তবে সেই ইতিহাস আরও অনেক পুরোনো।’

১৯৩৩ সালে জার্মানিতে পুড়ে ছাই হচ্ছে মহামূল্যবান ২০ হাজার বই

‘সেটা আবার কত আগের ঘটনা?’

‘একদম কাগজ-কলমে তো লেখা নেই কোথাও সন-তারিখ, তবে সবচেয়ে পুরোনো তেমন একটি নিদর্শন আজ থেকে কম করে হলেও ছয় হাজার বছর আগের!’

‘ছয় হাজার বছর? চোখ কপালে তুলে বলে গুটু।’

‘হ্যাঁ। তেমনই হবে। ১৯৮৪ সালে সিরিয়ার তেলবার্ক নামের এক জায়গায় সন্ধান মেলে দুটো ফলকের। পুরাতত্ত্ববিদদের মতে, ওটাই পৃথিবীর প্রথম বইয়ের দুটো পৃষ্ঠা। ওই ফলক দুটির সাংকেতিক চিহ্ন দেখে মনে হয়, হিসাবের খাতা ছিল ওটি। একটি ফলকে রয়েছে ১০টি ছাগলের ইঙ্গিত। অন্য ফলকে ১০টি ভেড়ার হিসাব। ফলক দুটি সংরক্ষিত ছিল ইরাকের বাগদাদে। আর দুঃখের ব্যাপার হলো, উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ওই সংগ্রহশালা লন্ডভন্ড হয়ে যায়।’

নিজের সব রচনা পুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন লেখক কাফকা

‘ইশ্! যুদ্ধ হলেই সব ধ্বংস হয় যায়, না?’

‘হ্যাঁ। যুদ্ধ যে কত কিছু ধ্বংস করে তার ইয়ত্তা নেই। তবে বইয়ের প্রতি বিদ্বেষ বরাবরই ছিল। বিশেষত, যারা চায় না বইয়ের মাধ্যমে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাক, স্বাধীন চিন্তা করতে শিখুক মানুষ—তারা সবাই ঘোরতর বইবিরোধী। এদিক দিয়ে কুখ্যাত হয়ে আছেন জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর জোসেফ গোয়েবলস। ১৯৩৩ সালে রীতিমতো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষের সামনে তিনি বক্তব্য দেন এবং পোড়াতে থাকেন বই। প্রায় ২০ হাজার বই পোড়ানো হয় ওই দিন। সিগমুয়েন্ড ফ্রয়েড, কার্ল মার্ক্স, এমিল জোলা, মার্সেল প্রস্তু, আইনস্টাইন, এইচ জি ওয়েলস্, টমাস শান, জ্যাক লন্ডনসহ আরও অনেক লেখকের বই পোড়ানো হয় ওই দিন।’

‘ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে এমন বাজে কাজ?’

‘হ্যাঁ রে বাপ।’ বলি আমি, ‘ইউটিউবে পাবি। জার্মান ভাষা বুঝি না। কিন্তু তার ওই সদম্ভ বক্তব্যটা শুনলেই বুঝবি বইয়ের বিরুদ্ধে তাঁর কত ক্ষোভ আর ঘৃণা।’

‘ইউটিউবে দেখা যাবে?’

‘যাবে। একটু খুঁজলেই পাবি। তবে, বইয়ের প্রতি অন্য ধরনের বিদ্বেষও ছিল অনেকের। এমনকি সক্রেটিসও বইবিরোধী ছিলেন!’

‘সক্রেটিস? মানে ওই বিখ্যাত দার্শনিক?’ চোখ কপালে তুলে জিজ্ঞেস করে গুটু।

‘হ্যাঁ, স্বয়ং সক্রেটিস। অবশ্য সক্রেটিসের বইবিরোধিতার বিষয়টা একটু অন্য রকম। তিনি লিখিত জ্ঞানে নয়, বিশ্বাস করতেন মৌখিক পরম্পরায় চলে আসা জ্ঞানে। তিনি বইকে মনে করতেন প্রাণহীন, যেখানে সব প্রশ্নের উত্তর মেলে না।’

‘কথাটা তো একদম ফেলনাও নয়’, দ্বিধায় পড়ে গেছে গুটু।

‘আপাতদৃষ্টিতে তেমন মনে হলেও, আসলে সব ক্ষেত্রে ব্যাপারটা তেমন নয়। যাঁরা সক্রেটিসের এই বক্তব্যকে খণ্ডন করেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম রিচার্ড ফার্নিভাল। তাঁর মতে, যেহেতু মানুষের জীবনকাল খুব সীমিত, তাই কেউ জ্ঞানের সন্ধানে শুধু নিজের অভিজ্ঞতার মধ্যে আটকে থাকলেই হবে না, অন্যের সঞ্চিত জ্ঞানের জন্য বইয়ের দিকে হাত বাড়াতেই হবে। আর সক্রেটিসের শিষ্যরাও কিন্তু গুরুর কথা মানতে পারেননি। প্লেটো, অ্যারিস্টটলরা যদি সক্রেটিসের কথামতো বইবিরোধী হয়ে উঠতেন, তাহলে তো পরবর্তীকালের মানুষেরা ওই সময়ের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে পারত না। তাই না? আবার বিখ্যাত লেখক ফ্রানত্স কাফকা তাঁর রচনাবলি নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। তাই বন্ধু ম্যাক্সব্রডকে বলে দিয়েছিলেন যে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সব রচনা আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে। ভাগ্য ভালো, বন্ধুর কথা শোনেননি ম্যাক্সব্রড! নইলে আমরা কোথায় পেতাম এমন সব লেখা!’

‘শুধু এটাই নয়, বইকে ঘিরে আরও নানা কাণ্ডই ঘটেছে। যেগুলো না ঘটলে হয়তো বইয়ের বর্তমান দুনিয়াটা এমন হতো না। যেমন ধর পেপারব্যাক বইয়ের কথা। পৃথিবীর সেরা সস্তা বই মানেই পেপারব্যাক। এর জন্ম ১৯৩৫ সালে। ওই সালে অ্যালেন লেইন নামের এক ভদ্রলোক গিয়েছিলেন রহস্যসম্রাজ্ঞী নামে পরিচিত লেখিকা অগাথা ক্রিস্টির বাড়িতে। ফেরার পথে রেলস্টেশনে খুঁজছিলেন সময় কাটানোর মতো কিছু বই। কিন্তু পেলেন না কিছু। ওই ব্যর্থতার রেশ ধরেই নাকি ওই বছরই পেঙ্গুইন প্রকাশনা সংস্থা থেকে তিনি বের করেন একসঙ্গে দশখানা পেপারব্যাক বই। আকারে ছোট। দামে কম। তাই বাজার জয় করতে দেরি হয়নি পেপারব্যাকের। সবাই লুফে নেয় ওই ধরনের বই। ভেবে দেখ, যদি অ্যালেন লেইন ওই দিন স্টেশনে বই না খুঁজতেন, তবে হয়তো জন্মই নিত না পেপারব্যাক বই!’

‘আচ্ছা, নানা রকম রেকর্ড হয় নানা কিছু নিয়ে। বই নিয়ে এমন রেকর্ড নেই?’

অগাথা ক্রিস্টির বাড়ি থেকে ফেরার পথেই পেপার ব্যাকের আইডিয়া পেয়েছিলেন অ্যালেন লেইন

‘নেই মানে! অনেক আছে। তবে সব তো মনে পড়ছে না, দু-চারটে আবছা মনে আছে। যেমন, শিল্পী লেওনার্দো দ্য ভিঞ্চির নিজের হাতে লেখা বিজ্ঞান-বিষয়ক রচনার পাণ্ডুলিপি ‘কোডেক্স লেইসেস্টার’ এক নিলাম থেকে কিনে নেন মাইক্রোসফটের বিল গেটস। ৪৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৩৯০ কোটি টাকার সমান! বই কেনায় এটিই মূল্যের দিক থেকে বিশ্বরেকর্ড। সবার, মাথাপিছু সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বই পড়ার রেকর্ডটি ভারতের দখলে—এক জরিপে দেখা গেছে যে ভারতীয় পড়ুয়ারা সপ্তাহে গড়ে ১০ ঘণ্টা ৪২ মিনিট বই পড়ে। বছরে সবচেয়ে বেশি বই বেরোয় চীনে—গড়ে যার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৪৪ হাজার। আমাদের দেশে বই প্রকাশের সঠিক হিসাব নেই, তবে আনুমানিক প্রায় ১০ হাজার বই বের হয় বছরে। একই সময়, একই জায়গায় ৯৯৮ জন মানুষ মাথায় বই রেখে ভারসাম্য বজায় রেখে রেকর্ড করেছে; অদ্ভুত এই কাণ্ডটি ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে, ২০১২ সালে।’

‘বাব্বাহ্! এ তো অনেক কাণ্ড। আচ্ছা এ তো গেল ভিনদেশি সব কাহিনি। বাংলা ভাষার বইয়ের শুরুটা কবে, সেটা তো বললে না।’

‘যদি ছাপা বইয়ের কথা বলিস তাহলে ১৭৭৮ সালটা বাংলা ভাষার জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড নামের এক ইংরেজ আ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ নামে একটি বই রচনা করেন। বইটি ইংরেজিতে লেখা হলেও তার সর্বত্র উদাহরণ হিসেবে রয়েছে বাংলা হরফ। বইটা লেখার উদ্দেশ্য ছিল, ইংরেজ কর্মচারীরা যেন বাংলায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে এবং রাজকর্ম ঠিকভাবে করতে পারে। তখন ভারতের গভর্নর ছিলেন ওয়ারেন হেস্টিংস। হ্যালহেড তাঁকে অনুরোধ করেন বইটা ছাপানোর ব্যবস্থা করতে। কিন্তু কেমন করে ছাপা হবে বাংলায়? তখন পর্যন্ত তো বাংলা হরফ ছাপার জন্য কোনো ব্লক কিংবা হরফ তৈরি হয়নি। হ্যালহেডের বন্ধু উইলকিনগন কাজে লেগে পড়লেন। এ কাজে জোসেফ শেফার্ড এবং পঞ্চানন কর্মকার নামের দুজন সহায়তা করেন। প্রথমবারের মতো ছাপা হয়ে বেরোয় বাংলা।’

মাথায় বইয়ের ভারসাম্য রেখে ২০১২ সালে অদ্ভুত এক রেকর্ড গড়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের বাসিন্দারা

‘কেমন দেখতে ছিল বইখানা?’

‘হাতে নিয়ে তো দেখিনি, তবে ছবিতে দেখেছি চমৎকার পরিণত কাজ; ছাপার মান রীতিমতো প্রশংসাযোগ্য। ইন্টারনেটে খুঁজে দেখিস—দেখে চমকে যাবি; মনেই হবে না যে ওটাই প্রথম ছাপার হরফে বাংলা হরফ। কিন্তু এ বইটি ছাপা হওয়ার প্রায় এক শ বছর আগে, মানে ১৬৮২ সালে প্রথম বাংলা বই ছাপা হয়েছিল বলে দাবি করেন অনেকে। বলা হয়ে থাকে, সে বছর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বইটি ছাপা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় কি জানিস?’

‘কী?’

‘পুরো বইটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধু কয়েকটি ছেঁড়া পাতা পাওয়া গেছে। আবার অনেকে বলেন, ১৭২৫ সালের দিকে জার্মানিতে আরেকটি বাংলা বই ছাপা হয়েছিল। সেটিও পাওয়া যায়নি।’

‘তাহলে আমরা জানলাম কেমন করে?’

‘এ ক্ষেত্রেও কয়েকটি ছেঁড়া পাতার নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রথম বাংলা হরফে বই ছাপার আগেও কিন্তু আরেকটি বাংলা ভাষায় লেখা বই ছিল। সেটি স্পেনের লিসবন থেকে ছাপা ১৭৪৩ সালের দিকে।’

‘এই বইটির নাম কী?’

‘বইটির নাম কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ। লিখেছিলেন মনোএল দ্য আসসুমপসাঁও নামের এক পর্তুগিজ। তবে ১৭৩৩ লেখা বইটি বাংলা হরফে নয়, মুদ্রিত হয়েছিল রোমান হরফে।’

‘কিন্তু ছাপা বইয়ের আগে কি বাংলায় লেখা কোনো বই ছিল না?’

‘অবশ্যই ছিল। ১৯০৭ সালের ঘটনা। বাঙালি পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সেবার কী এক কাজে গেছেন নেপালের রাজদরবারে। সেখানেই একদিন রাজার লাইব্রেরি থেকে তিনি আবিষ্কার করলেন একটি খণ্ডিত পুঁথি। আগে এ দেশে হাতে লেখা বইকে পুঁথি বলা হতো। যাহোক, সেই বইটিই ছিল বাংলা ভাষার সবচেয়ে পুরোনো বই। বইটির নাম চর্যাপদ।’

‘তাই নাকি! এই নামটি তো তোমার মুখে শুনেছি আগে।’

‘হতে পারে।’

‘আচ্ছা, লাইব্রেরিতে দেখেছি প্রতিটি বইয়ের গায়ে একটা বড়সড় নম্বর সাঁটা থাকে। ওই নম্বর থেকে বোঝা যায় কিছু?’

বাংলা হরফে প্রকাশিত প্রথম ছাপা বই

‘আলবত, ওটাই বইখানার পরিচয়চিহ্ন। একেক পাঠাগার একেক পদ্ধতি ব্যবহার করে বটে, তবে কয়েকটি পদ্ধতি খুব জনপ্রিয়। আমেরিকার নাগরিক জন মেলভিল ডিউই ১৮৭৬ সালে বই শ্রেণি বিভাগের দশমিক বর্গকরণ এক পদ্ধতি তৈরি করেন। এই পদ্ধতি ডিউই ডেসিমেল ক্লাসিফিকেশন; সংক্ষেপে ‘ডিডিসি’ হিসেবে পরিচিত। ডিউই তাঁর পদ্ধতিতে বিশ্বের সমস্ত জ্ঞানভান্ডারকে নয়টি ভাগে ভাগ করেছেন, আর একটি ভাষা রেখেছেন সাধারণ জ্ঞান। যেমন: ০০০ সাধারণ জ্ঞান, ১০০ দর্শন, ২০০ ধর্ম, ৩০০ সমাজবিজ্ঞান, ৪০০ ভাষা, ৫০০ বিজ্ঞান, ৬০০ কারিগরি বিজ্ঞান, ৭০০ চারুকলা ও বিনোদন, ৮০০ সাহিত্য এবং ৯০০ ইতিহাস। এসব নম্বরের আবার উপনম্বর আছে।’

‘বাহ্! চমৎকার পদ্ধতি তো!’

হ্যাঁ, আসলেই চমৎকার। যাক, অনেক গল্প হয়েছে—খিদে পেয়ে গেছে আমার। চল দোকান থেকে কিছু খেয়ে আসি।’

হাসি ফোটে জুনিয়র ওসমানের মুখে। ‘আচ্ছা যাব। তবে আমাকে চকলেট কিনে দিতে হবে কিন্তু।’

‘ঠিক আছে, দেব। তবে তার আগে কয়েকটা ইংরেজি শব্দ শিখে নে: Bibliobibule যে অনেক বেশি বই পড়ে; Bibliophile বইপ্রেমিক; Biblioklept বই চোর; Bibliopole বই বিক্রেতা Bibliomaniac বই বাতিকগ্রস্ত; Biblioclast যে বই নষ্ট করে।’

‘বাব্বাহ্! কঠিন সব শব্দ। তবে তোমার নামটা মনে থাকবে আমার।’

‘আমার নাম মানে?’ বুঝতে পারি না আমি। আকর্ণ বিস্তৃত হাসি হেসে জবাব দেয় আমার পুত্রধন, ‘Bibliomaniac, অর্থাৎ বই-বাতিকগ্রস্ত।’