বিট্টু যেভাবে আমার হলো

একদিন আমি বারান্দা থেকে দেখলাম, একটি ছোট্ট বিড়ালের বাচ্চা মাঠের পাশে বসে আছে। আমি কাছে গিয়ে দেখি, বাচ্চাটির অবস্থা খুবই খারাপ। মনে হলো কোনো বড় বিড়াল ওকে আক্রমণ করেছে। চোখের এক পাশ এবং ঘাড় থেকে রক্ত ঝরছে। একটি পা ভাঙা। সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। আমার বন্ধুরা সবাই বলল ও আর বাঁচবে না। কিন্তু তাই বলে চোখের সামনে একটি বাচ্চাকে কি এভাবে মরতে দেওয়া যায়?

আমি আম্মুকে বলে ওকে নিয়ে এলাম ঘরে। তারপর গোসল করিয়ে কাটা জায়গায় ওষুধ লাগিয়ে দিলাম। প্রতিদিন দুধ ও মাছ খেতে দিলাম। ও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠল। ভাঙা পাটিও ঠিক হয়ে গেল। এখন সে দিব্যি বড় বিড়াল। ওকে দেখে মনেই হয় না ও এত বড় একটা বিপদ পার করে এসেছে।

এখন সারা দিন সে লাফালাফি, খেলাধুলা করে। আর আমাদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়। আমি যখন প্রাইভেট পড়তে যাই, বিট্টুও আমার সঙ্গে গিয়ে সে বাসার সামনে পুরো সময়টা চুপ করে বসে থাকে। আমরা ওকে চিন্টু, পিন্টু কত নামেই ডাকতাম। শেষ পর্যন্ত আমার ছোট ভাই ওর নাম দিল বিট্টু। এখন সবাই ওকে এই নামেই ডাকে।

আমার সব সময় একটি বিড়াল পোষার শখ ছিল, কিন্তু আম্মু কিছুতেই রাজি হতো না। বিট্টুকে বাঁচাতে গিয়ে আমার বিড়াল পালার শখও পূরণ হলো, বিট্টুও বেঁচে গেল।

(কিশোর আলোর জুলাই ২০১৪ সংখ্যায় প্রকাশিত)