‘বুঝতে যখন শিখেছি, তখন থেকে আমি লিখছি’ — মীম নোশিন নাওয়াল খান

মা-বাবার শত আদরের মেয়ে মীনা, শিক্ষা দিয়ে যে সব কুসংস্কার দূর করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। মীনার মতোই ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মীমও স্বপ্ন দেখে দেশের মানুষের জন্য কিছু করার। স্বপ্ন পূরণের পথে তার এগিয়ে যাওয়া লেখালেখির মাধ্যমে। ইউনিসেফ আয়োজিত ‘মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে ২০১০ সালে প্রথম আর ২০১৩ সালে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে সে। ২০১৪ সালে আবারও অর্জন করে প্রথম স্থান। মীমের প্রথম বই প্রকাশিত হয় মাত্র আট বছর বয়সে। ঐতিহ্য-গোল্লাছুট গল্পলেখা প্রতিযোগিতায় ২০০৯ সালে অন্যতম সেরা ও ২০১১ সালে ‘ক’ বিভাগে প্রথম স্থান লাভ করে সে। ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত ২০১৩ সালের ‘হে ফেস্টিভ্যালে’ অংশগ্রহণ করে ‘ক্রিয়েটিভ রাইটিং’ বিভাগে পেয়েছে পুরস্কার। ছবি তোলা, আবৃত্তি, ছবি আঁকাসহ বিভিন্ন কাজেও তার সমান আগ্রহ। এত কাজ করতে গেলে তো অবশ্যই বুদ্ধির দরকার। সেদিকেও পিছিয়ে নেই মীম। ‘টেনসা হাই আইকিউ সোসাইটি’র একমাত্র বাংলাদেশি সদস্য সে। গাছের সঙ্গে কথা বলার এক অদ্ভুত স্বভাব আছে মীমের। বড় হয়ে সে বিজ্ঞানী হতে চায়।

মীমের সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন :

মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়ে নিজেকে কখনো ‘মীনা’র মতো মনে হয়েছে?

মীনাকে ভালোবাসি, তবে আমি সব সময় মীমই হতে চাই।

প্রশ্ন :

এত ছোট বয়সে বই প্রকাশের ব্যাপারটা সবাই কীভাবে নিয়েছিল?

ভালো-মন্দ দুভাবেই। সবাই অনেক বেশি উৎসাহ দিয়েছে। প্রিয় লেখকেরা চোখ কপালে তুলে মজার মজার কথা বলেছেন।

প্রশ্ন :

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বুকার পুরস্কার পেয়ে গেলে কী করবে?

একটা লাফ দিয়ে মায়ের কোলে গিয়ে পড়ব।

প্রশ্ন :

ইশ্! এমন যদি হতো—

আমি যদি সারা দিন ফুলের সঙ্গে গল্প করে, পাখির সঙ্গে উড়ে আর বাতাসের সঙ্গে দিনগুলো কাটাতে পারতাম!

প্রশ্ন :

রবীন্দ্রনাথের আগে যদি তোমার জন্ম হতো, তবে—

পরীক্ষার হলে রবীন্দ্রনাথের নাটক-উপন্যাসের নাম ভুলে গিয়ে বিপদে পড়তাম না।

প্রশ্ন :

সুযোগ পেলে যা করতে চাও?

বিশাল এক প্রতিষ্ঠান করতে চাই, যেখানে বাংলাদেশের কয়েক কোটি লোক কাজ পাবে।

প্রশ্ন :

লেখালেখির শুরুটা কবে?

বুঝতে যখন শিখেছি, তখন থেকে আমি লিখছি।

প্রশ্ন :

অবসরে যা করো?

সবার খোঁজখবর নিই, ঘুরে আসি প্রকৃতির কাছ থেকে।

প্রশ্ন :

কোন রেজাল্টের সময় বেশি টেনশন কাজ করে? পরীক্ষার, নাকি মীনা অ্যাওয়ার্ডের?

নিঃসন্দেহে পরীক্ষা! মীনাটা তো অপশনাল ব্যাপার, পড়াশোনা আসল।

(কিশোর আলোর অক্টোবর ২০১৪ সংখ্যায় প্রকাশিত)