‘মিসির আলির মতো চিন্তা করার ক্ষমতা চাই!’ — মো. হাসনাইন আলী

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ভীষণ আগ্রহ হাসনাইনের। কিন্তু বাবার বদলির চাকরির কারণে বিভিন্ন জায়গায় সে সেসব কর্মকাণ্ডে ভালোভাবে যোগ দিতে পারত না। এ জন্য খুব মন খারাপ হতো তার। ২০১২ সালে ছেলের মনের অবস্থা দেখে বাবা সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহীতেই স্থায়ী হওয়ার। রাজশাহীর সিরোইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে হাসনাইন যোগ দেয় বিদ্যালয়ের বিতর্ক ক্লাবে। স্কুলের উপস্থিত বক্তৃতায় প্রথম হয়ে শুরুতেই করে বাজিমাত। ২০১৩ সালে ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ আন্তস্কুল প্রতিযোগিতায় রানারআপ হয় তার দল। ক্লাবে আর টিভিতে বিতর্ক দেখে আরও চর্চা শুরু করে সিরোইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের এই এসএসসি পরীক্ষার্থী। সেই চর্চা কাজেও দেয়, ২০১৪ সালে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সে হয় চ্যাম্পিয়ন। ২০১৫ সালে সমকাল আয়োজিত জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রানারআপ হয় তার দল। পরের বছর হয় চ্যাম্পিয়ন। ধারাবাহিক গল্প বলা, আবৃত্তি ও রচনা লেখায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, রাজশাহী থিয়েটার, ফুলকুঁড়ি আসর থেকে এবং জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক বিভাগে পুরস্কার জিতে দেখিয়েছে নিজের সেরাটাই। ২০১৬ সালে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা এবং বিসিএসআইআর বিজ্ঞান মেলায় তার প্রকল্প জিতে হয় যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা। বর্তমানে নিজ স্কুলের বিতর্ক ক্লাবের সভাপতি সে।

হাসনাইনের সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন :

প্রিয় তিন লেখক—

হুমায়ূন আহমেদ, জে কে রাউলিং, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

প্রশ্ন :

পছন্দের বই—

হুমায়ূন আহমেদের সব—বিশেষ করে হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম

প্রশ্ন :

সম্প্রতি যে নতুন শখ হয়েছে—

কম্পিউটার প্রোগ্রামিং আর লেখালেখির ওপর আগ্রহ বেড়েছে।

প্রশ্ন :

সবচেয়ে উত্তেজিত থাকো—

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলা দেখার সময়।

প্রশ্ন :

ধরো, কোনো নির্জন দ্বীপে কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির সঙ্গে আটকা পড়লে। সেই ব্যক্তিটি কে হলে ভালো লাগবে?

হুমায়ূন আহমেদ।

প্রশ্ন :

স্কুলের প্রিয়-অপ্রিয় যা—

স্কুলের অপ্রিয় বলে কিছু নেই। সবই প্রিয়। আমার জীবনের সেরা সময় স্কুলজীবন। তবে স্কুলজীবনের সবচেয়ে প্রিয় বিষয় ছিল অসাধারণ বিতর্ক ক্লাব।

প্রশ্ন :

নিজের প্রিয়-অপ্রিয় যা—

আমার নিজের যে জিনিসটি সবচেয়ে ভালো লাগে সেটা হচ্ছে হার না মানা মনোবল। আমি বারবার পরাজিত হয়েও হাল ছেড়ে দিই না। আর অপ্রিয় বিষয় হচ্ছে আসক্তি। আমি খুব সহজেই কোনো জিনিসের ওপর আসক্ত হয়ে পড়ি। ধরো, গল্পের বই পড়তে শুরু করলাম, তাহলে দিন-রাত বই নিয়েই পড়ে থাকি। উঠতে ভালো লাগে না।

প্রশ্ন :

যে জিনিসটি খুব বেশি চাও—

মিসির আলির মতো চিন্তা করার ক্ষমতা চাই!

(কিশোর আলোর ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত)