লেগোর দুনিয়া

লেগোর নামে সারা দুনিয়ার শিশু-কিশোরেরা পাগল। তোমরা ছোটবেলায় ব্লক নামক একধরনের খেলনা দিয়ে নিশ্চয়ই খেলেছ। একটার সঙ্গে আরেকটা জোড়া লাগিয়ে লাগিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে খেলতে। হ্যাঁ, ওগুলোই লেগো। আর ওই ধরনের ব্লক নিয়েই গড়ে উঠেছে ‘লেগো’ নামক এক ব্লক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।

লেগো এখন প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হলেও শুরুর দিকে তা মোটেও এমন ছিল না। ডেনমার্কে ১৯৩২ সালে লেগোর যাত্রা শুরু হয়েছিল কাঠের তৈরি ছোট ছোট খেলনা দিয়ে। তখন জোড়া লাগানোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। বাজার থেকে খেলনা কিনে ডেনমার্কের শিশু-কিশোরেরা তখন খেলত। এই খেলনাগুলো তৈরি করতেন কির্ক ক্রিস্টিয়ানসেন নামের এক কাঠমিস্ত্রি। তাঁর তৈরি এই খেলনাগুলো ডেনমার্কের শিশু-কিশোরদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় ছিল। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু সহযোগী নিয়ে তিনি পূর্ণোদ্যমে খেলনা প্রস্তুত শুরু করেন। ১৯৩৪ সালে তিনি তাঁর এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করেন ‘লেগো (Lego)’। ‘লেগো’ শব্দটি এসেছে ডেনিশ দুটি শব্দ ‘লেগ (Leg)’ এবং ‘গট (godt)’ থেকে, যার অর্থ ‘ভালোভাবে খেলো’। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্লাস্টিকের খেলনা তৈরি করতে শুরু করে। এর পরই ধীরে ধীরে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে লেগো। বিভিন্ন দেশের শিশু-কিশোরদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয় লেগো। শিশুদের কাছে এ এক আনন্দের নাম। বড়দিনের উপহার কি জন্মদিনের উপহার, সর্বক্ষেত্রেই অভিভাবকদেরও প্রথম পছন্দ লেগো।

বর্তমানে লেগোর জনপ্রিয়তা এতই বেশি যে ছোট ছোট ব্লক দিয়ে একটার সঙ্গে আরেকটা জোড়া লাগানোর খেলায় ছোটদের পাশাপাশি এখন বড়রাও মেতে উঠেছেন। দিনরাত ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাথা ঘামিয়ে তাঁরা লেগো ব্রিক দিয়ে একের পর এক বিশাল বিশাল বাড়িঘর তৈরি করে চলেছেন। কি না করা যায় এই লেগো দিয়ে! বাড়ি-গাড়ি এমনকি চাইলে কোনো গল্পের চিত্রনাট্যও তৈরি করে ফেলতে পারো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন প্রায়ই লেগো নিয়ে প্রতিযোগিতাও হয়ে থাকে।

(কিশোর আলোর ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সংখ্যায় প্রকাশিত)