সেকালের ফিনিক্স একালের এমটিবি

হালফ্যাশনের কেতাদুরস্ত বাইকগুলো এই সেদিন রাস্তায় নামল। কিন্তু যুগ যুগ ধরে বাংলার পথেঘাটে, গ্রামে-গঞ্জে এমনকি মফস্বল শহরে দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে দ্বিচক্রযান। সেগুলো আমাদের অতিপরিচিত ফিনিক্স (বাংলাদেশে অনেকের কাছেই এটি ফনিক্স নামে পরিচিত), হিরো বাইসাইকেল। মজবুত ফ্রেমের ওপর বসানো যেন একেকটা লোহার ঘোড়া। এগুলোর পিঠে সওয়ার হয়ে লোকে নিত্যদিনের কাজ সারছে। কেউ পণ্য পরিবহনের কাজেও ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ বলছে, গণপরিবহনের পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্যক্তিগত যানবাহনের মধ্যে বাইসাইকেলের ব্যবহার বেশি। বাংলাদেশে ১০০ পরিবারের মধ্যে ৩৯টিই সাইকেল ব্যবহার করে।

অবশ্য এখনকার অনেক শহুরে তরুণেরা এমটিবি চালাতে স্বচ্ছন্দবোধ করে। অনেকে রোড বাইকও চালায়। মোটা টায়ার, সোজা হাতলের সাইকেলগুলো এমটিবি। এগুলো উঁচু-নিচু কিংবা পাহাড়ি পথে চলার উপযোগী। এই সাইকেল চালানো তুলনামূলক সহজ। আর রোড বাইকের টায়ার থাকে চিকন। হাতল সামনের দিকে বাঁকানো আর নিচু। তাই চালানোর সময় সামনের দিকে অনেকটা ঝুঁকে চালাতে হয় এই সাইকেল। রোড বাইক সমতল রাস্তায় চালানোর উপযোগী। সাইকেল চালনায় একটু দক্ষ যারা সাধারণত তারাই রোড বাইক বেছে নেয়।

বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এখনো দাপিয়ে বেড়ায় চীনের ফিনিক্স সাইকেল

এমটিবি ও রোড বাইক দুটোই ওজনে হালকা। এ সাইকেলগুলোয় গিয়ার থাকে। সাইকেলের গতি বাড়াতে-কমাতে কিংবা উঁচু-নিচু স্থানে ওঠা-নামা করতে গিয়ার খুব সহায়ক। এগুলোর আরেকটা বৈশিষ্ট্য সামনে ও পেছনের চাকার শক্তিশালী ব্রেক। তাই যেমন খুশি সাইকেলকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর এ জন্যই এ ধারার বাইকগুলো তরুণদের মাঝে এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি এক তরুণ সাইক্লিস্ট ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আগে স্বপ্নে দেখতাম পাখি, পায়রা, পরি। আর এখন দেখি ব্রেক, শিফটার, রোটার। হায় রে সাইক্লিং।’

এমন মজার সব উক্তি আরও আছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কোনো কোনো সাইক্লিস্টকে মজা করে বলতে দেখা যায়, ‘ঢাকা শহরে দুই শ্রেণির মানুষ আছে। একদল ট্রাফিক জ্যাম আর শহরের ওপর বিরক্ত। আরেক দল সাইকেল চালায়।’

তরুণ প্রজন্মের কাছে এমটিবির কদর বেড়েছে

তবে একা একা সাইকেল চালাতে বুঝি কারোরই ভালো লাগে না। সঙ্গী-সাথি না হলে ঠিক যেন জুত হয় না, চালিয়ে সুখ পাওয়া যায় না। তাই অনেক সময় সামাজিক ওয়েবসাইটে সঙ্গী খুঁজেও স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায় অনেককে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে সাইকেল চালাতে ভালোবাসেন। শুধু নিজের সুস্থতা নয়, পরিবারের সুস্থতার কথাও ভাবেন তাঁরা।