বোকা চোর

শীতকাল। প্রায় মাঝরাত। পাশের জানালা গলে শিরশিরে বাতাস প্রবেশ করছে ঘরে। শীত শীত লাগছে রাহির। এমন সময় ঘুম ভেঙে গেল তার। গায়ের কম্বল পড়ে আছে মেঝেতে। কম্বল গায়ে জড়িয়ে শুতে যাবে, হঠাৎ মেঝেতে দেখতে পায় অচেনা এক মানুষের ছায়া। নির্ঘাত চোর! এ ভেবে রাহির তো প্রাণ শুকিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।

এ সময় তার মাথায় খেলে গেল একটা বুদ্ধি। সাবধানে জানালার সামনে থেকে মায়ের মোবাইলটা সরিয়ে, সেখানে রেখে দিল পেনসিলের বাক্স। বাক্সটা একেবারেই নতুন, মোড়ক পর্যন্ত খোলা হয়নি। চোর বাবাজি মোবাইল মনে করে নিয়ে যাবে একটা পেনসিলের বাক্স, এটা ভেবেই প্রচণ্ড হাসি পাচ্ছে রাহির। কোনোমতে হাসি চেপে একসময় ঘুমিয়ে গেল সে।

‘রাহি, এই রাহি! ওঠ এবার। এতক্ষণ কেউ ঘুমায়?’

রাহির মুখ হাসি হাসি। সে মায়ের সব কথা শুনতে পাচ্ছে, কিন্তু সাড়া দিতে পারছে না। কারণ, তার অবস্থান এখনো ঘুমের বিচিত্র অপার্থিব জগতে।

‘তাড়াতাড়ি ওঠ বাবা, বড্ড দেরি হয়ে যাচ্ছে যে!’

বিছানায় উঠে বসল রাহি। জানালার সামনের টেবিলটায় পেনসিলের বাক্স উধাও! সে কিছুই বুঝতে পারছে না। মাথায় রাতের ব্যাপারটাই বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। বেচারা চোরটার কথা ভেবে হি-হি-হি করে হেসে ফেলল রাহি।

প্রায় ধমকের সুরে মা বলল, ‘কিরে, তোর সমস্যাটা কী? এভাবে হাসছিস কেন?’

বোকা চোরের কথা ভেবে দুই হাতে মুখ চেপে হাসতে থাকে রাহি। যেন সে হাসির মাঝেই লুকিয়ে আছে রহস্যের চাবি।

মো. শাফকাত হোসেইন

দশম শ্রেণি, ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, ময়মনসিংহ