পালোয়ান ভাই

আমাদের বাড়িতে মেহমান আসছেন। ঢাকা থেকে আসছেন। বাবা বললেন, তপু, যাও তো একটু কালিতলা বাসস্ট্যান্ডে। ঢাকার কোচে রুস্তম পালোয়ান আসবে। তোমার সম্পর্কে বড় ভাই হন। তাকে নিয়ে এসো।

আমি বললাম, ওনার নামই কি রুস্তম পালোয়ান?

বাবা বললেন, না। ওনার নাম রুস্তম আলী। তবে বিখ্যাত ব্যায়ামবীর। বডিবিল্ডার। ওয়েট লিফটার। এলাকার লোকে তাকে সম্মান করে রুস্তম পালোয়ান ডাকে।

আমি বললাম, বাবা, উনি কখন নামবেন?

কাল ১০টার বাসে গাবতলী থেকে ঢাকা ছাড়বেন। বিকেল ৫টার সময় কালিতলা দিয়ে বাস যখন যাবে, উনি নেমে পড়বেন।

আমি ওনাকে চিনব কী করে?

মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে যাও। এখনই ওনার সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিচ্ছি।

বাবা ফোন করলেন, হ্যালো...রুস্তম। আমি তোমার ফুলপুরের আংকেল বলছি। তুমি রওনা দিচ্ছ তো কালকে সকাল ১০টায়?...হ্যাঁ। তোমাকে বাসস্ট্যান্ড থেকে আনতে যাবে তপু। হ্যাঁ। তোমার ছোট ভাই তপু...নাও কথা বলো।

আমি ফোন কানে দিলাম। বললাম, হ্যালো রুস্তম ভাইয়া...

উনি বললেন, আমাকে সবাই পালোয়ান ভাই বলে ডাকে। তুমিও তা–ই বলবে।

আমি বললাম, জি ভাইয়া।

আবার ভাইয়া! বলো, পালোয়ান ভাই!

জি পালোয়ান ভাই।

শোনো, ঠিক সাড়ে চারটা থেকে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকবে।

জি আচ্ছা। আমি আপনাকে চিনব কী করে? আপনি কী রঙের কী ড্রেস পরে থাকবেন?

আমাকে চিনবে কী করে মানে? আমার বাইসেপ দেখে। এই রকম বডি এই বাংলাদেশে আর একটাও আছে নাকি! শোনো, আমার ভয়ে ঢাকার রাস্তায় বাঘ আর হরিণ একঘাটে পানি খায়। আমাকে না চিনতে পারার কোনোই কারণ নাই। তবে তোমাকে চিনব কী করে, সেইটা বলো!

আমি বললাম, আমি আপনার কাছে চলে আসব। আমার হাতে মোবাইল ফোন থাকবে। কোনো অসুবিধা হলে আমাকে ফোন দেবেন।

এক থাপড়ে বত্রিশটা দাঁত জাপানে এক্সপোর্ট করে দেব!

ভাইয়া, বুঝলাম না কথাটা!

ফের ভাইয়া। বলো পালোয়ান ভাই।

পালোয়ান ভাই, এক্সপোর্টের ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না!

তোকে বুঝতে হবে না, বেয়াদব, ছেঁড়া স্যান্ডেল, ভাঙা চশমা, পচা ডিম কোথাকার! আপনার অসুবিধা হলে আমাকে ফোন দেবেন...আমার অসুবিধা হবে কেন? আমি হলাম রুস্তম পালোয়ান। আমার ভয়ে বাঘে হরিণে একঘাটে কোল্ড ড্রিংকস খায়। আর তুই আমার অসুবিধা করবি? আর আমাকে ফোন করতে হবে তোকে?

আমি বললাম, সরি ভাইয়া।

এক থাপড়ে তোকে হনুলুলুতে এক্সপোর্ট করে দেব!

আবার কী করলাম, ভাইয়া?

ভাইয়া বলতে নিষেধ করেছি। বলবি ভাই। পালোয়ান ভাই।

জি পালোয়ান ভাই...

আমার চোখে পানি এসে গেল। আমার নাম তপু। আমি পড়ি পাকুড়গাছা উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে। ক্লাসের ফার্স্ট বয় ছিলাম। ছিলাম মানে এখনো আছি। করোনার কারণে পরীক্ষা হয় না ম্যালা দিন। সেই কারণে ছিলাম বললাম।

আমার আব্বা নিজে বাংলার শিক্ষক। আমাদের স্কুলেই পড়ান। আমরা গ্রামে থাকি।

আমাদের গ্রামে কেউ কোনো দিন আমাকে ধমক দিয়ে কথা বলেনি। স্কুলে শিক্ষকেরা আমাকে আদর করেন। আর আমার সঙ্গে এই রকমের ব্যবহার! এ কী রকমের পালোয়ান।

আজ পালোয়ান ভাই আসবেন। আমি সাড়ে তিনটা থেকে কালিতলা বাসস্ট্যান্ডে হাজির রয়েছি। তার ফোন নম্বর আমার কাছে আছে। বাড়ির মোবাইল ফোনটাও বাবা আমাকে দিয়েছেন। আমি তাকে ফোন করতে পারি। তবে ভয়ে ফোন করছি না। যার সঙ্গে কথা বললেই ঝাড়ি খেতে হয়, তাকে ফোন করতে কি ইচ্ছা করে, বলো!

আমি অপেক্ষা করছি। চারটা আগে বাজুক।

চারটা বাজল। পাঁচটা বাজল। ঢাকার কোনো বাস তো সামনে দিয়ে গেলও না। এই বাসস্ট্যান্ডে থামলও না। বগুড়া-রংপুর চলাচলকারী কতগুলো লোকাল বাস এসে দাঁড়াচ্ছে। যাত্রীরা উঠছে, নামছে।

আমি বাসস্ট্যান্ডের পাশে একটা চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে বসে আছি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে এল। পালোয়ান ভাইয়ের প-টুকুও দেখা যাচ্ছে না।

আঁধার হয়ে এসেছে। বাসস্ট্যান্ড ফাঁকা। টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। আমি চায়ের দোকানের ঝাঁপের নিচে মাথা গুঁজলাম।

বাবা ফোন দিচ্ছেন। কই রে তপু?

বাবা, আমি তো বাসস্ট্যান্ডে বসে আছি। কেউ তো এল না।

তুই ফোন কর।

তুমি ফোন করো, বাবা।

বাবা একটু পরে ফোনে আমাকে জানালেন, বাস যানজটে পড়েছে। আসতে দেরি হবে।

পকেটে টাকা ছিল। চায়ের দোকানে বসে শিঙাড়া খেয়ে নিলাম। টিউবওয়েলের পানি খেয়ে পেট ভরানোর কাজটা সারা গেল।

একটু পরে চায়ের দোকানি বলল, বাবু, আমি তো বাড়ি যাব। দোকানে ঝাঁপ ফেলব। আপনি কী করবেন?

আমি বললাম, আমি ওই বটগাছটার নিচে দাঁড়াব।

চায়ের দোকানি বললেন, আমার ছাতাটা নেন। পরে পাঠায়া দিবেন।

আমি বললাম, না না, লাগবে না।

লাগবে না কেন? লাগবে! বৃষ্টিতে ভিজবেন নাকি।

দোকানি আংকেল চলে গেলেন। পুরা কালিতলায় আমি ছাড়া আর কোনো জনমনিষ্যি নেই। শিয়াল ডাকছে দূরে—হুক্কা হুয়া। সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডেকে উঠছে কুকুরের দল।

আকাশে মেঘ। মনে হয় আজ অমাবস্যা। একটা তারাও দেখা যাচ্ছে না। রাস্তা দিয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে মাঝেমধ্যে গাড়ি ছুটে যাচ্ছে। হেডলাইটের আলোয় বৃষ্টির ঝরে পড়া দেখা যাচ্ছে খাড়া খাড়া সাদা রেখার মতো।

রাত ১০টার পরে একটা বাস এসে থামল।

একজন নামলেন। তার পিঠে একটা ব্যাকপ্যাক। বাস চলে গেল। আমি অন্ধকারে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তবু ছায়ামূর্তির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে আমি চিৎকার করে উঠলাম, পালোয়ান ভাই!

তিনি চিৎকার করে উঠলেন, এই আমাকে নিতে কে এসেছিস? জায়গাটা অন্ধকার করে রেখেছিস কেন? বৃষ্টি পড়ছে, দেখছিস না? মাথায় ছাতা ধর। আর আলোর ব্যবস্থা কর।

আমি তার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। বললাম, আমি এসেছি। আমার নাম তপু। আমার ছাতাটা নিন।

আমি কেন ছাতা নেব? আমার মাথায় ছাতা মেলে ধর।

ধরলাম।

আলো কই?

আমি বললাম, হাতের মোবাইলে টর্চ আছে। জ্বালাব?

অমনি মাথার ওপরে পড়ল একটা গাড্ডা। আমি চিৎকার ওরে উঠলাম, ওরে বাবা রে!

কে তোর বাবা? টর্চ জ্বালা!

মোবাইল ফোনের টর্চ জ্বালালাম।

তিনি বললেন, কত দূরে তোদের বাড়ি?

এই এক কিলোমিটার দূরে!

কিসে চড়ে যাব?

আমি বললাম, বর্ষাকাল। রাস্তার অবস্থা খারাপ। হাঁটা ছাড়া উপায় নাই।

হেঁটে যাব?

জি।

পাঠাও–উবার কোনো কিছু নাই?

আমি বললাম, জি?

খুব খিদে পেয়েছে। এতক্ষণে আমার গোটা আটেক নানরুটি, গোটা তিনেক মুরগি, এক কেজি ছোলা, কিলোখানেক টক দই সাবাড় করে দেবার কথা! চল, তাহলে হাঁটি।

হাঁটতে শুরু করলাম।

রাস্তার অবস্থা আসলেই খারাপ। একটা জায়গা বর্ষার ঢলে ভেঙে গেছে। জায়গাটা পার হওয়া রীতিমতো কঠিন।

আমি বললাম, পালোয়ান ভাই, জায়গাটা পিচ্ছিল। স্লিপ করতে পারেন। সাবধানে পা ফেলে আমার পেছনে পেছনে আসুন।

আমি তো কারও পিছে যাই না। সবাই আমার পিছে পিছে যায়। তুই আলোটা ধর। আমি নামছি।

তখনই ঘটে গেল প্রথম ঘটনাটা। খুবই পিচ্ছিল এঁটেল মাটি এত মহান মানুষের ওজন ধারণ করতে পারল না। তার পা পিছলে গেল। তিনি ধপাস করে পড়লেন। প্রথমে নিচের দিকে গেল পা। তারপর আছড়ে পড়ল তার কোমর। এরপর তিনি গড়াতে গড়াতে পড়ে গেলেন একেবারে নিচে। নিচে খানিকটা পানিও জমে আছে। কতগুলো কচুরিপানা জায়গাটায়। কতগুলো ব্যাঙ লাফিয়ে উঠল।

তিনি বললেন, ওরে আমারে তোল। মাটি ব্যথা পাইতাসে।

যাক, তার মুখের আসল ভাষা বেরিয়ে গেল।

আমি গিয়ে তাকে তুলে ধরলাম। তিনি বললেন, আমার মতো মানষের পায়ের নিচে লাগে শক্ত জমিন। এইহানে জমিন নরম। আমার ভার মাটি সইতে পারল না। ক্যান যে আমি গেরামে আসতে রাজি হইলাম!

আমরা গাড়া থেকে উঠে আবারও রাস্তায় উঠলাম। তার মাথায় আবার ছাতা ধরলাম।

তখন দেখি একটা রিকশা–ভ্যান।

আমি বললাম, রিকশা–ভ্যানওয়ালা চাচা, আপনি কি ফুলপুর যাবেন?

কেডা? কই যাইবা? স্যারের বাড়ি?

জি। আমি তার ছেলে তপু।

ও। উঠ্যা বসো।

আমি বললাম, পালোয়ান ভাই, সামনের দিকে বসেন। পেছনে বসলে ভ্যান ঢেঁকির মতো উল্টে যাবে।

পালোয়ান ভাই বললেন, আমার ভর কি তোদের গ্রামের এই দুর্বল ভ্যান নিতে পারবে? এই ভ্যানওয়ালা। বল, পারবে?

ভ্যানওয়ালা বললেন, তা পাইরতেও পারে, না–ও পারে। আপনে আগে উঠ্যা দেখেন, পারে কি পারে না।

পালোয়ান ভাই ভ্যানওয়ালার মাথায় একটা চাটি বসিয়ে বললেন, আমার নাম পালোয়ান ভাই। আমার সাথে কথা বলার আগে সাবধান।

আমরা ভ্যানে উঠে বসেছি। ভ্যান চলেছে।

ঘুটঘুটে অন্ধকার। একটু একটু বৃষ্টি পড়ছে। আমি তার মাথায় ছাতা ধরে আছি। আমার নিজের মাথা ভিজে যাচ্ছে।

কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না।

ভ্যানওয়ালা বললেন, ভাইজান, আল্লাহর নাম নেন। সামনের রাস্তাটা খারাপ।

খারাপ মানে কী রকম খারাপ? পালোয়ান ভাই উদ্বিগ্ন স্বরে বললেন।

ওইখানে তেঁতুলগাছটা খারাপ। তারপর আছে শেওড়াগাছ।

গাছ থাকলে কী ক্ষতি?

গাছে তেনারা থাকেন।

তেনারা মানে কী?

তেনারা মানে...ওই যারা মানষের ওপরে আসর করে। সেদিন তো ওঝা আসচিল। ফকিরপাড়ার মেজ ফকিরের ছোট বউরে জিনে ধরছিল। ঝাড়ফুঁক করয়া জিনরে বোতলে ভরয়া মাটিত পুঁত্যা রাখার পর বউটা একটু সারছে। কিন্তু আরও আরও তেনারা আছেন।

পালোয়ান ভাই কথা বলছেন না। আমরা একটা বাঁশঝাড়ের ভেতরে ঢুকলাম। তেঁতুলগাছ, শেওড়াগাছে এই জায়গাটা দিনের বেলাতেই অন্ধকার থাকে। অমাবস্যার রাতে আরও অন্ধকার জেঁকে বসেছে। এই সময় আমার মোবাইলের টর্চ নিভে গেল।

কী হলো?

ব্যাটারির চার্জ শেষ। আমি বললাম। বাঁশঝাড়ের নিচে সবাই চুপচাপ। ঝিঁঝির ডাক শোনা যাচ্ছে। একটা শকুনি কোনো গাছের ডালে বসে মানুষের বাচ্চার কণ্ঠে কেঁদে উঠল।

ওই ওখানে একটা ক্লাবঘর আছে। সেখানে রাতের বেলা যুবকেরা টেলিভিশনে িক্রকেট খেলা দেখেন। খেলা শেষ হলে নাটকের রিহার্সাল করেন।

দূর থেকে তাদের রিহার্সালের সংলাপ শোনা যাচ্ছে।

এই সময় পল্লী বিদ্যুৎ চলে গেল। ঘুটঘুটে অন্ধকার।

ওই ক্লাবঘরটা আর দেখা যাচ্ছে না। আমাদের ভ্যান তার পাশ দিয়ে যাচ্ছে।

ক্লাবঘর থেকে নাটকের সংলাপ সত্যিকারের বিপন্ন মানুষের কণ্ঠস্বরের মতো করে ভেসে আসছে। এই সংলাপ অবশ্য আমি অনেকবার শুনেছি। আমার বাবার লেখা নাটক। আমি শুনতে লাগলাম।

বাঁচাও বাঁচাও

হি হি হি হি আমি শেওড়াগাছে থাকি...আগুনের শরীর আমার...যাকে ধরব, তাকে আমি ছাড়ব না...

হি হি হি...

বাঁচাও বাঁচাও...

না। আমি ধরব ওই তাজা মোটা বলদটাকে। হি হি হি...আয়...আয়...

এমন সময় আমােদর ভ্যানের চাকার নিচে একটা পুরোনো বাঁশ পড়ল। বাঁশটা ঠাস করে ফেটে গেল। ভ্যানটা েবশ একটা ঝাঁকুনি খেল। আমার নিজের বুকই কেঁপে উঠল।

চাকা ফাটা শব্দে গাছের ডালে বসা বাদুড়, কাক, প্যাঁচা যাবতীয় পাখি পাখা ঝাপটাতে ঝাপটাতে অন্ধকারের মধ্যে একটা লন্ডভন্ড ঝড় তুলে ফেলল।

ভ্যানওয়ালা চাচা বলে উঠলেন, সর্বনাশ হয়া গেছে, এইখানে তুলা রাশির কেউ আছেন নাকি বাহে, তেনারা তো দেখি এই দিকেই আইতাছেন...

নাটকের ডায়ালগ তখন নাকি গলায় বলছে, ধর, এই বলদটারে ধর...(ওরা ধুপধুপ পায়ের আওয়াজ করছে)

ঢাকা থেকে আসা আমাদের পালোয়ান ভাই ভ্যান থেকে নেমে সামনের দিকে দৌড় ধরেছেন। তার পেছনে দৌড় ধরলাম আমি আর ভ্যানওয়ালা চাচা। ঝরা বাঁশপাতা কাদায় পচে আছে, পায়ের নিচে পড়ে প্যাচ প্যাচ শব্দ করছে। পালোয়ান ভাই চিৎকার করছেন: ভূত ভূত।

আমি আর ভ্যানওয়ালা চাচা বলতে লাগলাম: ভূত নই ভূত নই।

তিনি উল্টা বুঝলেন, বলতে লাগলেন, ভূতনি, ভূতনি।

পালোয়ান ভাই ভয় েপয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে নেমে পড়লেন কােছর এক েডাবায়। অল্প পািনর েডাবায় মুখ থুবড়ে পড়েলন িতনি। আমরা এসে বুঝলাম, পালোয়ান ভাই অজ্ঞান হয়ে গেছেন।

পােলায়ান ভাইকে ওঠাতে আমাকে আর ভ্যানওয়ালা চাচাকে ভীষণ কষ্ট করতে হলো। তাকে কি আর সহেজ েতালা যায়? আমাদের চিৎকারে ক্লাবের সদস্যরা চলে এলেন টর্চলাইট নিয়ে। পালোয়ান ভাইকে তুলে তারা নিয়ে গেলেন ক্লাবঘরে। টেবিলের ওপরে তাকে শোয়ানো হলো। ভেজা কাপড়চোপড় খুলে নেওয়া হলো। এই সময় চলে এলে বিদ্যুৎ। আর পালোয়ান ভাইয়ের জ্ঞান ফিরে এল। তিনি উঠে বসে বললেন, আমি কোথায়?

যুবকেরা ইয়ার্কি করে বললেন, ভূতের রাজ্যে।

আমার গায়ে কাপড় নাই ক্যান?

ভূতের রাজ্যে মানুষের গায়ে কাপড় থাকে না।

পালোয়ান ভাই আবার অজ্ঞান হয়ে গেলেন।

পুরো ঘটনাটা মোবাইল ফোনে ধারণ করলেন একজন ক্লাব সদস্য তরুণ।

পালোয়ান ভাই আমাদের বাড়িতে যাওয়ার পরের দিন সকালবেলা তিনি এলেন। বললেন, তপু, তোমার পালোয়ান ভাই কই? এই ভিডিওটা ওনাকে দেব। ওনার মোবাইল নম্বরটা দাও তো...

পালোয়ান ভাইয়ের মুখ আমসি হয়ে গেছে।