পাঁচহাতি ভূত

তখন সন্ধ্যা হয় হয়। পাঁচুইপুরের রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এসে থামল দিনের একমাত্র ট্রেনটা। ট্রেন থেকে নামলেন একমাত্র যাত্রী। প্ল্যাটফর্মে পা দিতেই ক্যাঁচ করে উঠল। পরের পা ফেলতেই আরেকবার ক্যাঁচ করল প্ল্যাটফর্ম।

কাঠের প্ল্যাটফর্ম। বয়সও হয়েছে। নব্বই বছর, অনেক বয়স! এ বয়সেও পায়ের চাপ সইতে পারে যদিও, তবে আওয়াজ তোলে। আগে চুপচাপ চাপ সইতে পারত। ১৫-২০ বছর ধরে শব্দ না করে সইতে পারে না। এখন পা ফেললেই শব্দ হয়। ক্যাঁচ, ক্যাঁচ।

বড্ড বিরক্ত হলেন যাত্রী। বিড়বিড় করলেন, কী বিদঘুটে শব্দ রে বাবা! মনে হলো যেন ভূত ডেকে উঠেছে।

ছয়বার ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ তুলে প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে এলেন রাস্তায়। ওই তো একটা গরুর গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। আশপাশে তাকালেন। নেই। আর কোনো বাহন নেই। একমাত্র গরুর গাড়ি।

গাড়িতে কোনো আলো নেই। তবু সন্ধে-পরবর্তী আঁধারি আলোয় গাড়ির অবয়বটা বুঝতে কষ্ট হলো না একটুও।

গাড়োয়ানের কাছে গিয়ে বললেন, ‘ঘটনা কী! আর কোনো বাহন নেই দেখছি।’

গাড়োয়ান বলল, ‘কী করে থাকবে? এ স্টেশনে তো যাত্রীই থাকে না। গেল তিন সপ্তাহে একমাত্র যাত্রী আপনি। তা বাবু, এখানে? বেড়াতে এসেছেন বুঝি?’

—অনেকটা তা-ই।

—কার বাড়িতে যাবেন?

—কারও বাড়িতে নয়। বাঁশজঙ্গলে যাব।

ভিরমি খেল গাড়োয়ান, ‘বাঁশজঙ্গলে! বলেন কী বাবু? ওটা তো...’

—জানি। ওটা ভূতের আখড়া। আমি ভূতের আখড়াতেই যাব। নিয়ে চলো। যেতে আপত্তি নেই তো?

—না, না। কী যে বলেন! আপনি হলেন গিয়ে যাত্রী। যেখানে বলবেন, সেখানেই নিয়ে যাব। কিন্তু দুনিয়ায় এত জায়গা থাকতে ওখানে কেন?

মুচকি হাসলেন যাত্রী। কেউ দেখতে পেল না। কিংবা হয়তো অনেকেই তাঁর সে হাসি দেখেছে। কে জানে! বললেন, ‘কারণ ওখানে ভূত আছে।’

—বাবু কি ভূত দেখতে এসেছেন? নাকি ভূতের ওপর রিপোর্ট করতে এসেছেন?

—রিপোর্টাররাও আসে নাকি এখানে?

—এসেছিল কয়েকজন।

—একা একা, নাকি দল বেঁধে?

—একাও এসেছিল। আবার দল বেঁধেও এসেছিল। কিন্তু দল বেঁধে এলে ভূতের দেখা পাওয়া মুশকিল। তা ওখানে কী কাজ বাবু?

—আমি ভূততাড়ুয়া। ভূত তাড়াই। খবর পেয়ে এসেছি। ওখানকার ভূতগুলো নাকি বড্ড উত্পাত শুরু করেছে। ওদের শায়েস্তা করতে এসেছি।

খ্যাক খ্যাক করে হেসে উঠল গাড়োয়ান। বলল, ‘আপনারা শহুরে মানুষরা কী স্মার্ট নাম দিতে পারেন! ডিমভাজির নাম দিলেন ওমলেট না মামলেট। ভাতভাজিকে বলেন ফ্রায়েড রাইস। এখন ভূতের ওঝার নাম দিলেন ভূততাড়ুয়া। তবে নামকরণটা সুন্দর হয়েছে।’

—ধন্যবাদ।

—জীবনে কতগুলো ভূত তাড়িয়েছেন বাবু?

কথাটার জবাব দিলেন না ভূততাড়ুয়া।

—বাবু! ও বাবু!

উফ। বড্ড বেশি কথা বলে গাড়োয়ান। ভীষণ বিরক্ত হলেন যাত্রী। গাড়োয়ান আবার নাপিতের স্বভাব পেল কোত্থেকে? যতক্ষণ চুল-দাড়ি কামায়, হাতের সঙ্গে সমানতালে নাপিতের মুখও চলতে থাকে। আর আছে ডেন্টিস্ট। দাঁতের কাজ করতে করতে মুখ চালায়। তবে সবচেয়ে অস্বস্তিকর অবস্থা হয়, যখন মুখের মধ্যে যন্ত্র ঢুকিয়ে কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য মুখটা আঁইঢাই করে, কিন্তু কথা বলার সুযোগ নেই। দাঁত আর জিহ্বা তখন বন্দী। আর দেখলেন এই গাড়োয়ানকে। ভীষণ বকবকিয়ে!

হঠাৎ একটা ঝাঁকি খেলেন যাত্রী। গরুর গাড়ির চাকাগুলো যেন লাফিয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে তিনিও লাফিয়ে উঠেছেন। ঝিমুনি চলে এসেছিল এতক্ষণে। ওই ঝাঁকিতে তন্দ্রা ছুটে গেল।

বড্ড বিরক্ত হলেন যাত্রী, ‘রাস্তাটা তো দেখছি সমান। কোনো উঁচুনিচু নেই। ঝাঁকি খেলে কিসে?’

খিক খিক করে হেসে উঠল গাড়োয়ান। বলল, ‘বাবু কি অন্ধকারেও দেখতে পান নাকি?’

এটারও জবাব দিলেন না যাত্রী। কিন্তু গাড়োয়ান নাছোড়বান্দা—‘বাবু! ও বাবু! ঘুমুচ্ছেন নাকি?’

সব কথার জবাব না দিয়ে থাকা যায় না। জবাব দিলেন, ‘চেষ্টা করছি।’

—বলি অন্ধকারেও দেখতে পান নাকি?

—তা মাঝেসাজে পাই।

—এবার একটু বাইরে তাকান তো দেখি!

ঢুলুঢুলু চোখে বাইরে তাকালেন যাত্রী। গাঢ় অন্ধকার চারদিকে। ওই অন্ধকারেও তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন...

তাঁর চোখ থেকে তন্দ্রা ছুটে গেল। চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল। কথা বলতেও ভুলে গেলেন।

ওদিকে হাঁক দিল গাড়োয়ান, ‘কী দেখতে পেলেন, বাবু?’

—আমরা কি বাঁশজঙ্গলে ঢুকে পড়েছি?

—সীমানায় ঢুকেছি। জঙ্গল এখনো একটু ভিতরে। কিন্তু কী দেখতে পেলেন বাবু?

—ও...ওরা কারা?

—কাদের কথা বলছেন বাবু? গাছে গাছে ঝুলছে যারা?

—না। গাড়ির পেছন পেছন যারা ছুটে আসছে।

—ওদের চেনেন না?

—না। কারা ওরা?

—ওরা বাবু একহাতি ভূত।

চমকে উঠলেন যাত্রী, ‘একহাতি ভূত!’

—হ্যাঁ বাবু। ওরা একহাতি ভূত। বাঁশজঙ্গলে ঢোকার মুখেই ওদের আবাস।

—বেশ। কিন্তু ওরা পেছন পেছন আসছে কেন?

—এটা ওদের অভ্যাস।

বলতে না বলতেই গাড়িটা এবার একটা বাঁক নিল। গাড়োয়ান বলল, ‘বাঁশজঙ্গলে ঢুকেছি বাবু।’

আর বাঁশজঙ্গলে ঢুকতেই হঠাৎ দেখলেন, একহাতি ভূতদের পেছন পেছন আরও একদল ছুটছে।

—ওই একহাতিদের পেছনে কারা?

—ওরা বাবু দুইহাতি ভূত।

—দুইহাতি ভূত!

—হ্যাঁ বাবু, ওদের গজিভূতও বলে কেউ কেউ।

—গজিভূত!

—হ্যাঁ বাবু। গজিভূত। দুই হাতে এক গজ হয় না? লেখাপড়া সব ভুলে গেলেন!

আপত্তি জানালেন যাত্রী, ‘না, না। কিছুই ভুলিনি। সব মনে আছে। আচ্ছা যা–ই হোক। তারপর সামনে কাদের দেখব? তিনহাতি ভূত?

—না বাবু। তিনহাতি ভূতেরা মাটিতে ঘুরে বেড়ায় না। ওরা উড়ে বেড়ায়।

—উড়ে বেড়ায়! কোথায় ওড়ে? আকাশে? যাত্রীর চোখ দুটো ততক্ষণে কপালে উঠে গেছে। অন্ধকারে দেখা যাচ্ছে না।

—নাহ। ভূতদের কখনো আকাশে উড়ে বেড়াতে শুনেছেন?

—তাহলে কোথায় উড়ে বেড়ায়?

—গাছে গাছে। এ–গাছ থেকে ও–গাছে উড়ে বেড়ায়। উড়ন্ত কাঠবিড়ালির মতো।

—বুঝেছি। উড়ন্ত ভূত।

বলতে না বলতেই হঠাৎ গরুর গাড়ির ছাউনিতে খচর খচর শব্দ শুনতে পেলেন যাত্রী। কেউ যেন ছাউনি আঁকড়ে ধরতে চাইছে।

—শব্দ কিসের?

গাড়োয়ান বলল, ‘উড়ন্ত ভূতগুলো মাঝে মাঝে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। ও কিছু না। আপনি চুপ করে বসে থাকুন।’

—ভেতরে ঢুকে পড়বে না তো?

আর তখনই হঠাৎ গাড়ির ভেতরে কিছু একটা দেখতে পেলেন যাত্রী। ভূত!

একটা খোঁচা খেলেন যাত্রী। চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘উড়ন্ত ভূতগুলো দেখছি বড্ড দুষ্টু। খোঁচাখুঁচি শুরু করে দিয়েছে।’

এবার খিক খিক করে হেসে উঠল গাড়োয়ান। বলল, ওদের দুষ্টুমি তো কিছুই না। সবচেয়ে দুষ্টু হচ্ছে পাঁচহাতি ভূত।

—পাঁচহাতি ভূত! বলো কী?

—হ্যাঁ বাবু। পাঁচহাতি ভূতের নাম শুনেছেন কখনো? ওরাই ভয় দেখিয়ে সবচেয়ে বেশি মজা নেয়।

—তা ওদের দেখা পাওয়া যাবে?

—তা তো জানি না বাবু। ওদের কি ঠিক আছে? অনেক বছর ধরে ওদের দেখা নেই। বিলুপ্ত হয়ে গেল কি না কে জানে!

গাড়ির পেছনে তাকালেন যাত্রী। হুম। একহাতি আর দুইহাতি ভূতগুলো ছুটে ছুটে আসছে গাড়ির পেছন পেছন।

হঠাৎ থেমে গেল গরুর গাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে এলেন যাত্রী। দীর্ঘ যাত্রায় শরীরের গিঁটে গিঁটে ব্যথা হয়ে গেছে। চালকের আসন থেকে নেমে এল গাড়োয়ান।

যাত্রী জানতে চাইলেন, ‘এখানে থেমেছ কেন?’

—অনেকক্ষণ বসে আছেন তো, তাই ভাবলাম একটু হাত–পায়ের জট ছোটানোর সুযোগ পেলে খুশি হবেন।

মুচকি হাসলেন যাত্রী, ‘সত্যিই খুশি হয়েছি।’

—কিন্তু আপনার খুশিটা বোঝা যায় না। আপনি খুব চাপা স্বভাবের।

—তা যা বলেছ। কিন্তু একহাতি, গজি আর উড়ন্ত ভূতগুলো কোথায় গেল? এতক্ষণ তো পেছন পেছন আসছিল।

আবার খিক খিক করে হেসে উঠল গাড়োয়ান। বলল, ওরা আর এমুখো হবে না।

অবাক হলেন যাত্রী, ‘কেন?’

—এখানে একটা বিশাল বাড়ি আছে। শুনেছি, ওটা পাঁচহাতি ভূতদের আদি বাসস্থান ছিল। তারপর তো পাঁচহাতি ভূতেরা কোথায় ছড়িয়ে পড়ল কে জানে! পাঁচহাতি ভূতদের বাড়ির ত্রিসীমানায় ওদের আসা নিষেধ।

—ওই বাড়িতে এখন কেউ থাকে না?

—কে থাকবে? এককালে তো ভূতের আখড়া ছিল। কবে মানুষের আখড়া হয়ে যায়, তার কি ঠিক আছে?

—কোথায় বাড়িটা?

—যাবেন?

—হ্যাঁ।

—চলুন। হাঁটতে হাঁটতেই যাওয়া যাবে। দুই মিনিটের রাস্তা।

ডান পাশ দিয়ে ঘন ঝোপ মাড়িয়ে এক মিনিট এগোতেই...হঠাৎ চোখের সামনে যেন মাটি ফুঁড়ে একটা বাড়ি বেরিয়ে এল। ধবধবে সাদা। অন্ধকারেও ফুটে আছে বাড়িটা।

বাড়ির সামনে পায়ে হাঁটা দীর্ঘ একটা পথ। পাশাপাশি দুজন হাঁটতে পারে সে পথে।

ধীরে ধীরে বাড়ির সামনে এগোতে লাগলেন যাত্রী। কিন্তু যতই বাড়ির সামনে এগোচ্ছেন, ততই যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছে। কারণটা ঠিক বুঝতে পারছেন না। বুঝতে পারলেন বাড়ির একেবারে সামনে এসে।

অন্ধকারে ভালো দেখতে পান তিনি। কিন্তু ধবধবে সাদা বাড়িটা তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছে। তাই এতক্ষণ দেখতে পাননি। এখন দেখতে পেয়েই চমকে উঠলেন। গাড়োয়ানের কাছে জানতে চাইলেন, ‘ওরা কারা?’

—কোথায় বাবু?

—ওই যে বাড়ির বারান্দায় বসে আছে। কার্নিশে ঝুলে আছে। বাড়ির ছাদে হাঁটাহাঁটি করছে। ওরা কারা?

—আমি তো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না বাবু!

অবাক হলেন যাত্রী, ‘বলো কী! দেখতে পাচ্ছ না মানে?’

আর বলতে না বলতেই, হঠাৎ...

এ কী দেখছেন যাত্রী! তাঁর চারপাশে এসে জড়ো হচ্ছে, এরা কারা? ভূত!

চেঁচিয়ে উঠলেন যাত্রী, ‘এ তুমি আমাকে কোথায় নিয়ে এলে?’

আবারও খিক খিক করে হেসে উঠল গাড়োয়ান, ‘বাবু তো এখানেই আসতে চেয়েছিলেন।’

—না। আমি কেবল বাঁশজঙ্গলটা ঘুরে বেড়াতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমাকে এখানে আনলে কেন?

বলেই উল্টো পথে ছুট দিতে চাইলেন যাত্রী। কিন্তু তার আগেই অনেকগুলো ভুতুড়ে হাত কবজা করে ফেলল তাঁকে। কেউ তাঁর হাত ধরল, কেউ বাহু, কেউ পা। কয়েকটা হাত আবার তাঁকে জাপটেও ধরে রেখেছে। ভূতের কবলে পড়ে আটকে গেলেন তিনি।

বুড়ো একটা ভূত এগিয়ে এল তাঁর দিকে। তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, ‘শেষ পর্যন্ত!’

ভূতটার দিকে তাকালেন যাত্রী। কিন্তু চেহারা বোঝা গেল না। কেমন যেন ঝাপসা ঝাপসা লাগছে। জানতে চাইলেন যাত্রী, ‘শেষ পর্যন্ত কী?’

—তোমার দেখা মিলল।

—তাতে কী হয়েছে?

—অনেক কিছুই হয়েছে।

পাশ থেকে এক ভূত বলল, ‘বলেছিলাম না কত্তা, ঠিক অমাবস্যা তিথিতে সে আসবে। আমার কথা মিলল তো?’

ভূতটার দিকে তাকালেন যাত্রী। এ ভূতেরও চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। তবে ডান হাতে একটা বিশাল ঝাঁটা। ঝাঁটার মাথায় শুকনা মরিচ। দেখে মনে হচ্ছে, গাছে শুকনা মরিচ ধরে আছে।

চমকে উঠলেন যাত্রী। ওঝা! ভূতদের মধ্যেও ওঝা আছে। ওরা কি মানুষ তাড়ায়?

ওঝা বলল, ‘ওর নাকে দুটো শুকনা মরিচ ডলে দেব কত্তা?’

নাকে শুকনা মরিচের ডলা? আরও ঘাবড়ে গেলেন যাত্রী। অসহায় ভঙ্গিতে শুকনা মরিচগুলোর দিকে তাকিয়ে রইলেন।

কিন্তু ওঝার কথায় কান দিলেন না বুড়ো ভূত। হাঁক দিলেন, ‘এই কে আছিস! ওকে বেঁধে রাখ।’

এবার আর ঘাবড়ানো নয়, ভয় পেলেন যাত্রী। ভূত তাড়াতে এসে শেষ পর্যন্ত ভূতের হাতে বন্দী! ভূতেরা তাঁকে বেঁধে রাখবে?

সঙ্গে সঙ্গে হইহই করতে করতে ছুটে এল অসংখ্য পাঁচহাতি ভূত। কোত্থেকে এল কে জানে! কোথায় ছিল তা–ই বা কে জানে! সাদা বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গায় অসংখ্য পাঁচহাতি ভূত জড় হলো। তাদের মধ্য থেকেই কয়েকটা ভূত এগিয়ে এল যাত্রীর দিকে। কত্তা ভূতের হুকুমে মানুষটাকে বাঁধতে হবে।

কিন্তু এ কী! কাকে আর বাঁধবে ওরা। দেখতে দেখতে সে যাত্রী চোখের পলকে একটা পাঁচহাতি ভূত হয়ে গেলেন। তারপর ঢুকে পড়লেন পাঁচহাতি ভূতদের জটলায়।

এবার গাড়োয়ানের দিকে তাকালেন বুড়ো ভূত। বললেন, ‘তুমি খুব ভালো কাজ দেখিয়েছ হে চারহাতি। গাড়লটাকে ঠিকঠাকমতোই পাকড়াও করে হাজির করেছ। এই নাও তোমার পুরস্কার।’

বলেই একটা হাড় ছুড়ে দিলেন গাড়োয়ানের দিকে। হাড়টা পেয়েই চাটতে শুরু করল গাড়োয়ান।

তাহলে গাড়োয়ানটাও ভূত! চারহাতি ভূত!

হাড়টা চাটতে চাটতে ফিরে এল গরুর গাড়ির কাছে। চালকের আসনে বসল। তারপর ফিরতি পথ ধরল। আবার সেই রেলস্টেশনে গিয়ে আরও একটা পাঁচহাতি ভূতের জন্য অপেক্ষা করবে সে।