আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ

৩ নম্বর স্কাইওয়ে দিয়ে যাচ্ছে জেট ২৯। এ সময়কার সবচেয়ে দ্রুতগামী ও সহজলভ্য আকাশযান। তার মধ্যে বসে আছি আমি, প্রধানমন্ত্রী তনিমা ইসলাম। যাচ্ছি একটি স্কুলের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। আশপাশ দিয়ে যাচ্ছে আরও অনেক জেট, নিচের রাস্তা দিয়ে কয়েকটি শিশু গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। আজকাল ১০ বছর বয়সেই সবাইকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। বাচ্চারা এত দক্ষ ও অ্যাডভান্সড যে আমি আইন করতে বাধ্য হয়েছি। আমার জেটটি একটি ১০ তলা বিল্ডিংয়ের ছাদে থামালাম। রোবটেরা আমাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে ভেতরে নিয়ে গেল। ছোট বাচ্চারা নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক করে আমাকে মুগ্ধ করে দিল। এরপর শুরু হলো পুরস্কার বিতরণ করা। প্রতিটি খেলার প্রথম পুরস্কার হিসেবে দিলাম কম্পিউটার ও বই, দ্বিতীয় পুরস্কার আইপ্যাড ও বই এবং তৃতীয় পুরস্কার ট্যাবলেট ও বই। তা ছাড়া সবাইকে আমার পক্ষ থেকে একটি সুবিধা দেওয়া হলো। যে যখন ইচ্ছা আমার কাছে যেকোনো সমস্যা নিয়ে আসতে পারবে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান থেকে হেডম্যান কপ্টার (মাথায় পরার এমন যন্ত্র, যার সাহায্যে ওড়া যায়) পরে গেলাম চকোল্যান্ড উদ্বোধন করতে। দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়ার সব বাচ্চার জন্য তৈরি করা এ স্কুলের বই-খাতা ও চেয়ার-টেবিল ছাড়া যাবতীয় জিনিসই চকলেটের তৈরি। তারা পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গেলে প্লে গ্রাউন্ডে খেলার ছলে খানিকটা চকলেটও খেতে পারবে। স্কুলের কমনরুমে থ্রিডি মুভি দেখতে দেখতে হঠাত্ বিদ্যুত্ চলে গেল। সব বাচ্চা ভয় পেয়ে গেল। আমি খবর পাঠালাম সমস্যা কোথায় দেখার জন্য। দেখলাম, আমার এক কর্মচারী ভুল করে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে দিলাম তাকে বরখাস্ত করে। কারণ, আমি যে আমার দেশের মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, এক মুহূর্তের জন্যও তারা লোডশেডিংয়ে কষ্ট পাবে না।

চকোল্যান্ড থেকে গেলাম এয়ারপোর্টে। আজকে বিকেল চারটায় স্পেনের উদ্দেশে আমার ফ্লাইট। সঙ্গে ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সফরমারটাও নিলাম, যেন সেখানকার স্বাক্ষর-নিরক্ষর সবার সঙ্গে কথা বলতে পারি। প্লেন ছাড়ার আগে আরেকবার তাকালাম আজকের বিশ্বের সর্বোন্নত দেশগুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকারী আমার বাংলাদেশের দিকে, যেখানে প্রতিটি ঘরের প্রতিটি মানুষ আজ সুখী।