এলিয়েন-কাহিনি

অলংকরণ: মাহাতাব রশীদ

অনেক অনেক দিন আগের কথা। এক দেশে এক রাজা ছিলেন। তাঁর ছিল বিশাল বড় সাম্রাজ্য। সাম্রাজ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছিল একটা বড় মন। দেশের মানুষ অনেক সুখে-শান্তিতে বসবাস করছিল। কিন্তু হঠাৎ ঘটল এক আজব ঘটনা।

রাতের খাবার শেষে বাগানে হাঁটছিলেন রাজা। হঠাৎ দেখলেন, তারার মতো একটা জিনিস আকাশ থেকে এসে পড়ল পাহাড়ে। তিনি গেলেন সেখানে। গিয়ে যা দেখলেন, তাতে তাঁর চোখ উঠল কপালে। একটা অদ্ভুত ঘর থেকে তিনটি সবুজ রঙের প্রাণী! তাদের মাথা অনেক বড়। হাত নেই, অক্টোপাসের মতো অনেকগুলো পা। রাজা বুঝলেন, এরা পৃথিবীর নয়।

রাজা এগিয়ে এসে বলেন, পৃথিবীতে আপনাদের স্বাগত। আমার রাজ্যে আপনারা আসায় নিজেকে ধন্য মনে করছি।

একটা প্রাণী সামনে এসে বলল, হোয়াটস আপ ব্রো?

রাজা বুঝলেন না কেন তিনি বুড়ো হতে যাবেন। তবু তর্ক না করে বললেন, আপনারা কারা? কেন এখানে এসেছেন?

তারা বলল, আমাদের তুমি করে বলো। আমরা বকরবকর। এলিয়েনও বলতে পারো। তোমাদের গ্রহ দখল করতে এসেছি। সাত দিন পর আমরা যুদ্ধ করব। যারা জিতবে, পৃথিবী তাদের।

রাজা দ্রুত বিষয়টা জানাল প্রজাদের। কিন্তু তারা বিশ্বাস করল না। উল্টো ভাবল, রাজার মাথায় নিউরন না কী যেন একটা থাকে, তা বোধ হয় ছিঁড়ে গেছে।

সেই রাতে মনের দুঃখে এলিয়েনদের কাছে গিয়েই এসব কথা বলল রাজা।

শুনে তারা বলল, আচ্ছা, আমরা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে দিচ্ছি।

রাজা বলল, এটা আবার কোন বুক?

এলিয়েন বলল, ম্যান! তোমরা ফেসবুকও চালাও না? আচ্ছা দাঁড়াও।

তারপর এলিয়েনরা রাজার সঙ্গে সেলফি তুলে প্রিন্ট করে দিল। এবার সবাই বিশ্বাস করল। তৈরি হলো যুদ্ধের জন্য।

শেষমেশ এল যুদ্ধের দিন। ঠিক হলো, দুই পক্ষের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই যোদ্ধা যুদ্ধ করবে। রাজার সেনাপতি যুদ্ধ করতে গেল। তার নাম জ্বলন্ত খলিল। বিশাল দেহ। লোহার বর্ম, ঢাল-তলোয়ার নিয়ে সে প্রস্তুত। অপর পক্ষ থেকে এল ছোট্ট একটা এলিয়েন।

তাকে দেখে জ্বলন্ত খলিল হাসতে লাগল। হঠাৎ এলিয়েনটা একটা যন্ত্র দিয়ে মারতেই ছোট আঙুলের সমান হয়ে গেল খলিল। আর কি যুদ্ধ হয়? এলিয়েনরা জিতে গেল। আরেকটি সুযোগ চাইল রাজা।

রাজি হলো এলিয়েনরা। তখন একটা পাঁচ বছরের বাচ্চা রাজাকে এসে বলল, আমি এলিয়েনকে হারাতে পারব। রাজা কী মনে করে তাকে পাঠাল। আবার শুরু হলো যুদ্ধ। এলিয়েন এগিয়ে আসতেই বাচ্চাটা তাকে কাতুকুতু দিতে লাগল। হাসতে হাসতে এলিয়েনটার অবস্থা খারাপ। একসময় সে হার মেনে নিল। চলে গেল এলিয়েনরা। অতঃপর সবাই সুখে-শান্তিতে বাস করতে লাগল।