তিন্নি বিন্নি তপুর করোনাকালের ঈদ

অলংকরণ: রাকিব

তিন্নি বলল, বিন্নি, ‘আমরা কালকে শাড়ি পরব, ঠিক আছে?’

বিন্নি বলল, ‘শাড়ি পাব কই?’

‘মায়ের দুটো নতুন শাড়ি আছে।’ বলল তিন্নি। ‘মা কোনো দিনও পরেননি। একটা কমলা রঙের। একটা সবুজ রঙের।’

‘তাহলে আমি কমলাটা পরব?’ বিন্নির প্রশ্ন।

‘আমি অবশ্য কমলাটা পরতে চেয়েছিলাম।’ জবাব দিল তিন্নি। ‘আচ্ছা আমি সবুজটাই পরব।’

বিন্নি বলল, ‘তোকে সবুজে খুব মানায়। একবার তুই আর আমি ঈদে সবুজ ফ্রক পরেছিলাম। সবাই তোকে বলেছিল, টিয়া পাখি।’

ঠোঁট ওলটাল তিন্নি। ‘আমাকে টিয়া পাখি বলেনি। সবাই বলেছে, একজোড়া টিয়া পাখি। ঠিক আছে, আমি সবুজ শাড়িটাই পরব।’

‘তুই মন খারাপ করিস না।’ বলল বিন্নি। ‘আমরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক শাড়ি পরব। দুপুরে শাড়ি দুটো বদলে নেব। তখন তুই কমলা, আমি সবুজ।’

তিন্নি হেসে বলল, ‘তোর মাথায় তো অনেক বুদ্ধি!’

‘বুদ্ধি না বুদ্ধির পাউডার।’ বলল বিন্নি। ‘আমি সব সময় অঙ্কে তোর চেয়ে কম নম্বর পাই কিনা!’

‘অঙ্কে কম পেলেও বাংলায় তো তুই বেশি নম্বর পাস!’

‘কবে যে আবার আমাদের স্কুল খুলবে!’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল বিন্নি।

তিন্নি আর বিন্নি ক্লাস ফাইভে পড়ে। তারা যমজ। তাদের একটা বড় ভাই আছে। নাম তপু। সে পড়ে ক্লাস এইটে। ভাইয়ার স্কুল আলাদা। বামনডাঙ্গা হাইস্কুল।

তিন্নি আর বিন্নির স্কুলের নাম বামনডাঙ্গা থ্রিস্টার কিন্ডারগার্টেন। তাদের বাবা শওকত আলী এই স্কুলের শিক্ষক। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স পাস করে নিজের উপজেলায় শিক্ষকতা করেন।

ঈদের আগের রাতে দুই বোন পরিকল্পনা করছে ঈদের দিন তারা কী করবে। টেলিভিশনে ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গান বাজছে। এই গানটা শুনলেই মন ভালো হয়ে যায়। তিন্নি আর বিন্নিরও মন ভালো হয়ে যাচ্ছে।

যদিও দুপুরবেলা তারা ঠিক করে রেখেছিল, এবার ঈদে কোনো রকমের আনন্দ করবে না। তাদের বাবা ছয় মাস ধরে বেতন পান না। ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে করোনা হামলা করেছে। সব স্কুল–কলেজ বন্ধ। তাদের থ্রিস্টার কিন্ডারগার্টেন স্কুলও বন্ধ। প্রথম কিছুদিন ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের মাসিক ফি জমা দিয়েছে। তারপর তারা স্কুলের বেতন-ফি দেওয়া বন্ধ করে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জমানো টাকা থেকে কয়েক মাস বেতন দিতে পেরেছে শিক্ষক-কর্মচারীদের। তারপর বেতন বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা খোদা বক্স মৃধা নিজেই প্রিন্সিপাল। তিনি শিক্ষকদের ডেকে বলেছেন, ‘বেতন দেব কোথা থেকে? এখন স্কুলের বাসাভাড়া দেবার টাকাই তো নাই। বাসা ছেড়ে দিতে হবে। আর বাসাটা যদি আটকে রাখতে হয়, আপনারা আমাকে চাঁদা দিন। কোনোরকমে স্কুলের বাড়িটা ধরে রাখি।’

বাসাওয়ালাও নাকি প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে গিয়ে কান্না করেছেন। ‘আপনারা বাড়ি ছেড়ে দিলে আমি নতুন ভাড়াটে কই পাব? এই করোনার মধ্যে কে বাসা ভাড়া নেবে? আমি বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে থাকতে বাধ্য হব।’

এই পরিস্থিতিতে মা–বাবা কীভাবে সংসার চালাচ্ছেন, তিন্নি-বিন্নি জানে না। জানে না তপুও। তারা শুধু বোঝে, আগে তারা রোজ দুবেলা মাছ বা মাংস বা ডিম খেতে পারত। যাকে বলে আমিষ। এখন প্রায়ই শুধু ডালভর্তা বা আলুভর্তা দিয়ে ভাত খেতে হয়। মা বড়লোকের মেয়ে। বাবার প্রেমে পড়ে এই রকম একটা অল্প বেতনের মাস্টারকে মা বিয়ে করেছিলেন। তিনি কোনো দিনও শুধু আলুভর্তা দিয়ে ভাত খাননি। ছেলেমেয়েকে খেতে দিয়ে তিনি নিজেই চোখের পানি ফেলেন। বলেন, ‘পৃথিবীতে কী দুর্যোগ এল! আমার ছেলেমেয়েকে শুধু আলুভর্তা দিয়ে ভাত খেতে হচ্ছে!’

শওকত আলী সাহেব বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া প্রকাশ করো। আমরা তবু খেতে পাচ্ছি। কত বাড়িতে চুলায় হাঁড়ি উঠছে না। আর বামনডাঙ্গায় করোনা আসেনি। ঢাকা শহরে কত লোক কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। একে তো লোকের আয়-ইনকাম নাই, তার ওপর করোনা হলে চিকিৎসার টাকা মানুষ দিচ্ছে কীভাবে?’

এই পরিস্থিতিতে এসেছে ঈদ। তিন্নি আর বিন্নি জানে, এবার নতুন জামা পাওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই। আর নতুন জামা চাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।

তপু ঘরেই ছিল। সে টেলিভিশনের চ্যানেল বদলাচ্ছে। সে খুঁজছে ক্রিকেট খেলা। কোনো চ্যানেলে পুরোনো ক্রিকেট ম্যাচ দেখালেও তপু সেটা দেখবে। সে ক্রিকেটের পাগল।

বাবা তার পাশেই বসে আছেন। বাবা বললেন, ‘তপু, বাংলাদেশের একটা চ্যানেল দাও। খবর দেখি। ঢাকায় কি এবার ঈদের জামাত হবে?’

তপু বলল, ‘শুধু মসজিদে হবে। মাস্ক পরে যেতে হবে। নিজের জায়নামাজ নিজেকে নিতে হবে। গ্যাপে গ্যাপে দাঁড়াতে হবে।’

বাবা বললেন, ‘আল্লাহর রহমতে বামনডাঙ্গায় করোনা নাই। আমাদের মসজিদের মাঠেই নামাজ হবে। সকাল সাড়ে আটটায় জামাত। কাল সাতটার মধ্যে গোসল সেরে নেব। সাড়ে সাতটার মধ্যে নামাজে যাব।’

বিন্নি বলল, ‘কিন্তু একটা প্রবলেম আছে?’

‘কী প্রবলেম?’ বলল তিন্নি।

‘ব্লাউজ? আমাদের তো কমলা আর সবুজ ব্লাউজ নাই।’

গম্ভীর হয়ে খানিকক্ষণ ভাবল তিন্নি। তারপর বলল, ‘কোনো অসুবিধা নাই। আমাদের দুইজনের দুইটা লাল রঙের ব্লাউজ আছে। আমরা সেটাই পরব। লাল–সবুজ তো মানাবেই। লাল আর কমলাও মানাবে।’

এই সময় ভীষণ কান্না পেতে লাগল তপুর। তিন্নি আর বিন্নি তো তাদের নতুন জামা না থাকার সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে। তারা মায়ের শাড়ি পরবে। কিন্তু কালকে কোন স্যান্ডেল পরে ঈদের নামাজ পড়তে যাবে তপু? তার যে চামড়ার স্যান্ডেল ছিল, সে দুটোর তলা ঝুরঝুর করে ঝরে পড়েছে। সে ভেবেছিল, স্পঞ্জের স্যান্ডেল পরেই নামাজে যাবে। দেড় বছর আগের পাঞ্জাবি আর পায়জামা ছোট হয়ে গেছে। তবু পরা যাবে। পাঞ্জাবিটাকে এবার সে বলবে, শর্ট পাঞ্জাবি। আর পায়জামা গোড়ালির ওপরে পরাই নামাজে যাওয়ার জন্য ভালো।

কিন্তু স্যান্ডেল! তার স্যান্ডেল শু ছিঁড়ে একেবারে ব্যবহারের অযোগ্য। স্পঞ্জের স্যান্ডেল জোড়ার একটা ফিতা একটু আগে, টিউবওয়েলের পাড়ে হাত-পা ধুয়ে ফেরার পথে, ঠিক ঈদের আগের দিন রাতের বেলা পটাস করে ছিঁড়ে গেছে। সব মুচি দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছে এতক্ষণে।

বাবাকে সে দেখাল, ‘বাবা, আমার স্যান্ডল শুর তলা আগে থেকেই গুঁড়া গুঁড়া। এখন স্পঞ্জের স্যান্ডেলের ফিতাও ছিঁড়ে গেল। কালকে নামাজ পরতে যাব কী পরে?’

বাবা বললেন, ‘দাঁড়াও। মোমবাতিতে ফিতা গলিয়ে জোড়া দিয়ে দিচ্ছি।’

বাবা তা–ই করলেন। মোমবাতি জ্বালালেন। স্যান্ডেলের ফিতা মোমের শিখার ওপরে ধরলেন। তারপর ছেঁড়া ফিতা গলিয়ে জোড়া লাগিয়ে ফেললেন।

কিন্তু তপুর মনটা খচখচ করতে লাগল। তিন্নি আর বিন্নি মায়ের নতুন শাড়ি পরবে। আর সে কিনা ছোট হয়ে যাওয়া পাঞ্জাবি, ছোট হয়ে যাওয়া পায়জামা, আর মোমবাতির আগুনে জোড়া দেয়া রবারের স্যান্ডেল পরে নামাজ পড়তে যাবে? না সে যাবেই না। সে যতই ভাবে, ততই তার বুক ঠেলে কান্না আসতে থাকে!

কান্না লুকানোর জন্য বাথরুম গেল সে।

বাথরুম থেকে বের হয়ে বারান্দায় এসে দেখল, বারান্দার লাইটের নিচে তিন্নি আর বিন্নি হাতে মেহেদি দিচ্ছে। তাদের টিনে ছাওয়া বাড়ির উঠানে মেহেদির গাছ আছে। মা একটা টুলে উঠে পাতা পেড়ে দিয়েছেন। সেই পাতা বেটে দুই বোন হাতে মেহেদি দিচ্ছে। তপুকে ওরা ডাকল, ‘ভাইয়া, আসো, তোমার হাতেও মেহেদি দেব।’

তপু বলল, ‘না রে। এবার পৃথিবীতে করোনা। এবার আমি মেহেদি দেব না।’

‘মেহেদি দিলে কি করোনা ধরবে?’ অবাক হলো তিন্নি।

‘তোর মাথায় কি মগজ বলতে কিছুই নাই রে তিন্নি?’ বিরক্ত হলো তপু।

একটা টুল নিয়ে বোনদের পাশে বসল সে। বর্ষাকাল। আকাশে মেঘ। একটু পরে বৃষ্টি হবে। কালকে নামাজের সময় বৃষ্টি হলে ভালো। সে বাবাকে বলতে পারবে, বৃষ্টির মধ্যে আমরা কেমন করে মসজিদে যাব। বাসাতেই নামাজ পড়ে নিই।

ভাবতে ভাবতে আবার তার চোখ দিয়ে পানি গড়াতে লাগল।

বিন্নি বলল, ‘ভাইয়া কাঁদছ কেন?’

‘ভাইয়া করোনায় মারা যাওয়া মানুষদের দুঃখে কাঁদছে। তাই না ভাইয়া?’ বলল তিন্নি।

বাইরে দুটো বাচ্চা কণ্ঠের আর্তি শোনা গেল, ‘আম্মা, না খায়া আছি আম্মা। আমরা দুইটা বাচ্চা মাইয়া আম্মা। দুইটা ভাত দেন আম্মা।’

তিন্নি–বিন্নি–তপুর মা শায়লা রান্নাঘর থেকে বের হলেন। শওকত আলী সাহেবের কাছে গেলেন। বললেন, ‘ওগো শুনছ। দুইটা বাচ্চা মেয়ে। আমার তিন্নি, বিন্নির সমান। বলছে, না খেয়ে আছে। ওদের ভাত খেতে দিই।’

শওকত আলী সাহেব বললেন, ‘দাও।’

‘তাহলে কিন্তু তোমাদের খেতে দিতে দেরি হবে। আবার চাল চুলায় চড়াতে হবে।’

‘তুমি আর আমি দেরি করে খাব। কত আর দেরি হবে? তুমি ওই বাচ্চা দুটোকে ভালো করে খাওয়াও।’

বাচ্চা দুটোকে বাড়ির ভেতরে বারান্দায় আনা হলো। বারান্দায় হাই বেঞ্চ লো বেঞ্চ আছে। শওকত আলী সাহেব এখানে টিউশনি করেন। ছাত্রছাত্রীরা প্রাইভেট পড়তে আসে। বারান্দায় টেবিল ফ্যানও আছে।

শায়লা বললেন, ‘তোমরা বেঞ্চে বসো।’

মেয়ে দুটো বলল, ‘আমরা মাটিতেই বসমো।’

তিন্নি বলল, ‘তোমাদের নাম কী?’

একটা মেয়ে বলল, ‘আমার নাম মায়া।’

আরেকটা মেয়ে বলল, ‘আমার নাম ছায়া।’

‘তোমরা কি যমজ?’ বলল বিন্নি।

‘হ্যাঁ। আমরা যমজ।’ একসঙ্গে জবাব দিল ওরা দুজন।

শায়লা গরুর মাংস রেঁধেছিলেন। পাঁচজনকে লো বেঞ্চে বসিয়ে হাই বেঞ্চে প্লেট বিছিয়ে শায়লা গরম ভাত আর গরুর মাংস পরিবেশন করলেন। তপু, তিন্নি, বিন্নি, মায়া আর ছায়া একসঙ্গে বসে ভাত খেল।

অনেক দিন পর মাংস পেয়ে তপুও আজ পেট ভরেই খেল। সে ভুলে গেল তার স্যান্ডেলের দুঃখও।

মা বললেন, ‘তিন্নি আর বিন্নি, তোমাদের দুটো জামা ছোট হয়ে গেছে। এদের দুজনকে দিয়ে দিই।’

‘অবশ্যই মা। অবশ্যই দেবে।’ বলল তিন্নি আর বিন্নি।

ওরা নিজেরাই আলমারি খুলে দুই বছর আগে ঈদে পাওয়া জংলা প্রিন্টের জামা দুটো বের করে এনে দিল মায়ের হাতে।

মায়া আর ছায়ার বাড়ি কান্দির পাড়। এখান থেকে আধা মাইল দূরে।

শওকত আলী বললেন, ‘তোমরা বাড়ি ফিরে যেতে পারবে?’

মায়া বলল, ‘পারমো। দুই বোনে এক দৌড় ধরমো। পাঁচ মিনিটে বাড়ি আসিয়া পড়িবে।’

ওরা চলে গেলে ঘুমুতে গেল তিন ভাইবোন।

শায়লা আবার চুলায় চাল চড়ালেন। ভাত হলে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে খেতে বসবেন।

তপুর ঘুম ভাঙল খুব ভোরে। সে বিছানা ছাড়ল। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখল, তখন আকাশ ফরসা হতে শুরু করেছে। রাতে খুব বৃষ্টি হয়েছে। আঙিনায় পানি জমে আছে। আকাশে বোধ হয় কোনো মেঘ নেই।

তার নিজের মনেও কোনো মেঘ নেই। ছায়া আর মায়াকে দেখে তার মনের মেঘও বৃষ্টি হয়ে ঝরে গেছে।

এই সময় একটা মোটরসাইকেল এসে থামল বাসার গেটে।

তপু দৌড়ে গেল গেটে। গেট খুলল। দেখল, তার ছোট মামা এসেছেন।

ছোট মামা বললেন, ‘বুবু মোবাইলে ফোন করছে রাত ১০টায়। তোর নাকি স্যান্ডেল নাই? তিন্নি, বিন্নিরও নতুন জামা নাই। রাতের বেলা ভাগ্যিস দোকানপাট খোলা ছিল। তাই নিজে গিয়ে কিনে আনলাম। দ্যাখ, তোর পছন্দ হয় নাকি! বাটার স্যান্ডেলের নম্বর বুবুর কাছ থেকে জেনেছি। সাইজে মিলবে।

পাঞ্জাবিটা একটু বড় কিনছি। যাতে তোর সামনের বছরের ঈদেও পরতে পারিস। বড় হলে পরা যায়। ছোট হলেই অসুবিধা...’

খুশিতে মামাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেল তপু।

বাড়ির ভেতরে গেলেন মামা। তপু দেখল, মা বের হয়ে এসেছেন বারান্দায়। ছোট মামা একটা খামও দিলেন মায়ের হাতে। মা সেটা আঁচলে বাঁধলেন। নানাভাই হয়তো টাকাও পাঠিয়েছেন। নানাভাই না থাকলে হয়তো এই করোনায় তাদের পরিবারটাকে অনেক বেলা একেবারেই না খেয়ে থাকতে হতো।

মা বললেন, ‘তপু দেখ তো, স্যান্ডেল পায়ে ফিট হয় কি না। পাঞ্জাবিটাও পরে দেখ। আর তিন্নি–বিন্নির জামাগুলো লুকিয়ে রাখ। নামাজ পড়ে ফেরার পর বের করে দিবি। সারপ্রাইজ!’

তপু পাঞ্জাবি লুকোতে গিয়ে দেখল, তিন্নি–বিন্নি বাম হাতে মেহেদি রেখেই ঘুমিয়ে আছে। তাদের হাত মাথার দিকে বালিশের ওপর। আশ্চর্য, মেহেদি বিছানাতেও লাগেনি। হাতে মাখামাখিও হয়ে যায়নি। পুবের জানালা দিয়ে ভোরের প্রথম আলো এসে পড়েছে তাদের হাতে।