বজলুভাই সুপারম্যান

অলংকরণ: রাকিব

গালিভারস টিম

আমি টুলু। মনোহরণ চৌধুরী মেমোরিয়াল বয়েজ স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমাদের ক্লাসের তিনজন আমার প্রাণের বন্ধু। আমরা চারজন একসঙ্গে বসি, একসঙ্গে পড়াশোনা করি (আসলে পড়াশোনার ভান করি), এমনকি পরীক্ষায় ফেল করলে চেষ্টা করি চারজন একসঙ্গে ফেল করতে। আমার নাম তো বলেছিই, বাকিদের নাম হলো মিশুক, পাভেল আর বজলুর রহমান। বাংলা স্যার আমাদের ছোট্ট এই দলটার নাম দিয়েছেন ‘গালিভারস টিম’। আমাদের মধ্যে অতি লম্বা একজন আছে বলেই নামটা গালিভারস টিম হয়েছে, তা ভাবলে ভুল করবে। স্যার এই নাম দিয়েছেন কারণ, আমাদের টিমে আছে...ওহ্ হো স্যার এসেছেন ক্লাসে! অঙ্ক স্যার। তাঁকে আমরা আড়ালে পটাশ স্যার ডাকি। এককথায় ‘মহা-অতি-বড়-ভারি-বদরাগী’। ক্লাস শেষ হোক, কথা হবে...

ক্লাসে ঢুকেই হুংকার দিলেন পটাশ স্যার, ‘কে কে হোমওয়ার্ক আনো নাই? ফটাফট দাঁড়ায়া পড়ো।’

মোটমাট চারজনের সঙ্গে গালি​ভারস টিমের বজলুর রহমানও দাঁড়াল। পটাশ স্যারের নজর পড়ল তার ওপরেই। স্যার এমনভাবে নাক কোঁচকালেন যেন ঘরে ঢুকেই মরা ইঁদুরের গন্ধ পেয়েছেন। সেই অবস্থায় ডানে-বাঁয়ে বার কয়েক মাথা ঝাঁকিয়ে বললেন, ‘বজলু মিয়া, কতবার বলছি, আপনার পড়াশোনা করে কোনো লাভ নাই। আপনি বরং বাসায় গিয়া নাতি দুইটার কাছে নামতা শেখেন! কি, বলছি না?’

বজলুর রহমান মাথা নাড়ে, ‘জি, বলেছেন। আসলে স্যার, গতকাল রাতে বউ বলল, “বড় নাতিটা বিছানায় পেশাব করে, তাবিজ নিয়ে আসো।” আমি গেলাম কালীগঞ্জে...।’

পটাশ স্যার হতাশার ভঙ্গি করে পাশের জনকে ধরলেন, ‘এই যে ছারপোকার ঠ্যাং, তোর সমস্যা কী’

ছারপোকার ঠ্যাং মানে ক্লাসের সবচেয়ে নিরীহ ছেলে আইনুল মাথা নিচু করে ক্লাসের মেঝের দিকে তাকিয়ে থাকল। দেখে মনে হলো যেন মেঝে নয়, রেনেসাঁ যুগের কোনো চিত্রকর্ম দেখছে সে।

ক্লাস শেষ। পটাশ স্যার আর বজলু ভাইয়ের কথাবার্তা শুনে কিছুই বুঝে উঠতে পারোনি, তাই তো? আমি আসলে বজলু ভাইয়ের কথাই বলতে চাইছিলাম তখন। বজলু ভাইয়ের বয়স ৬৫। ক্লাসে তাঁর রোল নম্বর ৬৪ (আমাদের ক্লাসে ছাত্রের সংখ্যাও ৬৪)। বজলু ভাই ছেলেবেলায় পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন বলে শক্ত পিটুনি দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। তারপর রাগে-দুঃখে আর পড়াশোনাই করেননি বজলু ভাই। কিন্তু দুই নাতির দাদা হওয়ার পর তাঁর মনে হয়েছে, ‘পড়াশোনা ছাড়া লাইফ ইমপসিবল!’ আর তাই তিনি এখন আমাদের ক্লাসে। এবং তাঁর কারণেই বাংলা স্যার আমাদের দলটার নাম দিয়েছেন ‘গালিভারস টিম’।

পটলকুমার গ্রুপ

আমি পটল। মনোহরণ চৌধুরী মেমোরিয়াল বয়েজ স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমাদের ক্লাসের দুজন আমার প্রাণের বন্ধু। আমরা তিনজন একসঙ্গে বসি, একসঙ্গে বাঁদরামি করি আর একসঙ্গে স্টার জলসায় ‘পটলকুমার গানওয়ালা’ সিরিয়ালটা দেখি। আমার নামের সঙ্গে মিল আছে বলেই হয়তো সিরিয়ালটা দেখে আবেগে চোখে পানি এসে যায়। বাকিরাও আমার সঙ্গে হাপুস নয়নে কাঁদে। আমার নাম তো বলেছিই, বাকিদের নাম হলো সুজন আর জিকো।

আগামীকাল আমাদের স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হবে। আমরা কোনো খেলাধুলার আশপাশে ঘেঁষি না। অযথা দৌড়ঝাঁপ করে কী লাভ! এই যে ক্রিকেটের কথাই ধরা যাক, কোনো মানে হয় সারা দিন ধরে ব্যাট-বল নিয়ে ছোটাছুটি করার? তার থেকে সিরিয়ালের একটা পর্ব দেখলেও তো হয়!

​যাহোক, খেলাধুলায় অংশ নেব না বলে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছি আমরা। তবে এখনো বুঝতে পা​রছি না, কী সাজব। তাই আমরা গালিভারস টিমের গোপন মিটিংয়ে আড়ি পেতে বসে আছি। যদিও এই টিমটাকে আমরা ‘ছয় চোখে’ দেখতে পারি না। সুযোগ পেলেই ওদের নাকাল করে আরাম পাই। আর ওই যে বুড়ো বজলুর রহমান, তাঁকে জ্বালাতন করলে ফুল প্লেট বিরিয়ানি খাওয়ার মতো মজা পাই আমরা! খিক খিক খিক! তারপরও দেখি, ওরা কী করছে...

পাভেল যখন নবাব

পাভেলের নাকের নিচে গোঁফলাগানোর​ পর হাসতে হাসতে বেঞ্চ থেকে পড়ে গেল মিশুক। বজলু ভাই মাথাটা ডানে কাত করে দাঁড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন, ‘দেখতে তো নবাব সিরাজউদ্দৌলার বনসাইয়ের মতো লাগছে! হা হা হা!’

পাভেল চোখ পাকিয়ে বলল, ‘বেশি হাসাহাসি করলে আমি কিন্তু সব খুলে ফেলব।’

মিশুক মেঝে থেকে উঠতে উঠতে বলল, ‘ভালো হবে, দিগম্বরের ভূমিকায় ভালো মানাবে তোকে! হা হা হা!’

মিশুকের পেটে ভুম করে একটা ঘুষি বসিয়ে দিল পাভেল। আমি না থামালে নবাব সিরাজউদ্দৌলার হাতে মিশুকের প্রাণ গেলেও যেতে পারে; তাই ওকে সেখান থেকে টেনে বের করে চলে গেলাম স্যারদের সঙ্গে কথা বলতে। পাভেল মানে বাংলার নবাবকে কখন বাইরে নিয়ে আসব, সেটা জানা দরকার।

নবাবের ওপর নবাব

গতকালই প্ল্যান করে রেখেছি আমরা। গালিভারস টিমের পুঁচকে পাভেল সাজবে নবাব, আর আমরা দিব্যি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াব। ঠিক সময়মতো ওদের কাছ থেকে সব কেড়ে নিয়ে আমাদের জিকোকেই সাজাব নবাব হিসেবে। গত দুই বছর গালিভারস টিম যেমন খুশি তেমন সাজোতে ফার্স্ট প্রাইজ পেয়েছে। ওরা জানে, কী করলে ফার্স্ট হতে পারবে। তাই আমরা কী সাজব, তা নিয়ে মাথা খাটাতে যাইনি। ওই যে রুমের ভেতর পুঁচকে পাভেল নবাব সেজে বসে আছে। ​সঙ্গে আছেন বুড়ো বজলুর রহমান। তাঁকে সামলানো কঠিন কিছু নয়। টুলু আর মিশুক এইমাত্র রুম থেকে বেরিয়ে গেছে। এই তো সুযোগ।

আমরা রুমে ঢুকেই দরজা দুটো আটকে দিলাম। চাপা গলায় একটা শাসানি দিলাম পুঁচকেটাকে, ‘এই যে নবাব, ঝটপট মাথার মুকুট থেকে পায়ের নাগড়া—সব খুলে দে!’

পুঁচকে নবাব আর বজলুর রহমান একে অপরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। এবার সুজন দিল কঠিন ধাতানি, ‘হাতে কিন্তু বিছুটি পাতা আছে। বেশি তেড়িবেড়ি করবি তো গায়ে ঘষে দেব।’

তোতলাতে লাগল পাভেল, ‘দে দে দেখ, স্যার জানলে কিন্তু তোদের টিসি দেবে!’

‘টি টি টিসি দিলে বাদামঅলার কাছে বেচে দেব।’ আমি আবার কড়া হুমকি দিলাম, ‘এক্ষুনি সব দিয়ে দে, গাধার বাচ্চা!’

বজলুর রহমান হাঁ করে তাকিয়ে আছেন। পাভেল প্রায় কাঁদো কাঁদো মুখে মাথার মুকুট থেকে পায়ের নাগড়া—সব খুলে দিল। জিকো সেসব হাতে পেয়ে সব কটা দাঁত বের করে হাসছে। মিশুকের মাথায় একটা চাটি মেরে রুম থেকে ঝটপট বের হতে গেলাম। দরজার কাছে গিয়ে সুজন বলল, ‘আচ্ছা, নবাবের হাতে একটা কিছু থাকা দরকার না?’

জিকো আর আমি মাথা নাড়লাম, ‘অবশ্যই দরকার!’

সুজন বজলুর রহমানের কোমরের দিকে আঙুল তাক করল, ‘দাদাজানের কোমরের বেল্টটা কিন্তু চাবুক হিসেবে খুব ভালো কাজে দেবে!’

‘শাবাশ!’ সুজনের পিঠ চাপড়ে দিয়ে বজলুর রহমানের দিকে তাকালাম, ‘দাদাজান, বেল্টটাও দিয়ে দেন।’

পাভেলের মতো বজলুর রহমানও তোতলাতে লাগলেন, ‘কি কি কিন্তু...!’

‘আবার কিন্তু কী?’ আমরা তাঁর আরও কাছে চলে গেলাম।

‘বেল্ট খুলে দিলে প্যান্ট তো খুলে যাবে! প্যান্টটা অনেক ঢোলা।’

সুজনের মাথায় সব সময় চিকন বুদ্ধি খেলা করে। ও সব কটা দাঁত বের করে বলল, ‘আধা ঘণ্টার জন্য ওয়াশরুমে বসে থাকতে পারবেন না?’

বজলুর রহমানের মুখটা কাঁদো কাঁদো হয়ে গেল, ‘ওয়াশরুমে! আধা ঘণ্টা!’

সুজন ততক্ষণে মরিয়া হয়ে উঠেছে, ‘হ্যাঁ, আধা ঘণ্টা। না হলে এই যে হাতের বিছুটি পাতা...’

‘থাক থাক!’ বজলুর রহমান নিজেই ওয়াশরুমের দিকে হেঁটে গেলেন।

বুদ্ধি হলো তলোয়ার

ক্লাসরুমটায় ঢুকেই দেখি, পাভেল মুখ গোঁজ করে বসে আছে। তার গায়ে টি-শার্ট। বিষয়টা আমাদের মাথার এক শ হাত ওপর দিয়ে চলে গেল, ‘ব্যাপার কী?’

জোরে লাথি দিয়ে একটা সিট বেঞ্চ ফেলে দিল পাভেল, ‘পটলকুমার গ্রুপ সব নিয়ে গেছে। বিছুটি পাতা নিয়ে এসেছিল।’

‘বজলু ভাই কোথায়?’

‘তাঁর বেল্ট খুলে নিয়ে গেছে। প্যান্ট ঢোলা বলে ওয়াশরুমে বসে আছেন।’

আমার মাথায় আগুন ধরে গেল। কিছুক্ষণ ঝিম মেরে বসে থাকলাম। পাভেলের দিকে একবার তাকাতেই হঠাৎ​ আমার মাথার আগুন যেন নিভে গেল! তুড়ি বাজিয়ে উঠে দাঁড়ালাম, ‘আইডিয়া!’

মিশুক ভুরু কুঁচকে জানতে চাইল, ‘কিসের আইডিয়া?’

‘পাভেলের টি-শাটর্টা দেখ। সুপারম্যানের লোগোঅলা টি-শার্ট।’

‘তো?’

কথা না বাড়িয়ে পাভেলকে বললাম, ‘তুই টি-শাটর্টা খোল তো।’

পাভেল অগ্নিদৃষ্টিতে তাকাল আমার দিকে, ‘ঘুষি মেরে তোর দাঁত ফেলে দেব কিন্তু!’

‘আরে গাধা, তোর এই টি-শার্ট বজলু ভাইকে পরাব। তাঁকে আমরা সুপারম্যান সাজাব। চল, কথা না বলে কাজ করি।’

আমার কথায় পুরোপুরি আশ্বস্ত না হলেও ওরা দুজন আমার সঙ্গে ওয়াশরুমের দিকে চলল। দরজার এপাশ থেকে ঠক ঠক করে ডাকলাম, ‘বজলু ভাই, আছেন?’

ওপাশ থেকে উত্তর এল, ‘কে, টুলু?’

‘হ্যাঁ, আমরা এসেছি। বজলু ভাই, ইয়ে মানে...আচ্ছা আপনার আন্ডারওয়্যারের রং কী?’

‘ভাই, তুমি ​কি আসলেই টুলু? যাকে আমি চিনি?’

‘জি, বজলু ভাই, আমি আসলেই টুলু। মজা করছি না। জরুরি দরকার। আমরা আপনাকে সুপারম্যান সাজাব।’

‘সুপারম্যান কী?’

‘সেটা পরে জানলেও চলবে। আগে জবাব দেন। আপনার আন্ডারওয়্যারের...’

‘দেখতে হবে, দাঁড়াও।’ বলে কিছুক্ষণের বিরতি নিলেন বজলু ভাই। খানিক পরে বললেন, ‘খয়েরি না কী যেন বলে। ইটের মতো রংটা।’

‘সুপারম্যানের আন্ডারওয়্যারের রঙের কাছাকাছি এটা! ইয়াহু!’

ওদিকে বজলু ভাইয়ের জ্ঞান-তৃষ্ণা আরও বেড়ে গেল, ‘ভাই টুলু, সুপারম্যান-আন্ডারওয়্যার—এই সব কী?’

‘সুপারম্যান প্যান্টের ওপর আন্ডারওয়্যার পরে। আপনিও পরবেন। ব্যস! আর প্যান্টের ওপর আন্ডারওয়্যার পরলে আপনার ঢোলা প্যান্টটা আটকেও থাকবে।’

‘ও আচ্ছা। কিন্তু তুমি কি ভাই আসলেই টুলু?’

মিশুক বজলু ভাইয়ের কথায় কান না দিয়ে প্রশ্ন রাখল, ‘কিন্তু সুপারম্যানের পেছনের ঝালরটার কী হবে?’

‘কেপ কেপ, ওটাকে বলে কেপ।’ সুযোগ পেলে জ্ঞান ঝাড়তে দেরি করে না পাভেল।

আমার মাথায় খেলে গেল আরেক বুদ্ধি, ‘কেন, ডেকোরেটরের কাছে লাল পর্দা আছে না!’

সু সু সু সুপারম্যান!

বেশ কসরত করতে হলো গোঁফটা লাগাতে গিয়ে। এ ছাড়া নাগড়া জোড়াও সাইজে ছোট। ফলে খানিকটা সময় লাগল সেজেগুজে নবাব হতে। নিজেকে সত্যি সত্যিই বাংলার অধিপতির মতো লাগছে। হাতের বেল্টটা চাবুকের মতো মারতে মারতে স্কুলের মাঠে নেমে পড়লাম আমি। দুপাশে পাখা নিয়ে হাঁটছে সুজন আর জিকো। দারুণ একটা হইচই পড়ে গেল। কেউ কেউ তো অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে আমাদের দিকে। যত হাঁটছি, হার্টবিট তত বাড়ছে। এত ঘামছি যে মনে হচ্ছে জামাকাপড়ের নিচে অনেকগুলো শাখা নদী কুলকুল করে প্রবাহিত হচ্ছে। সুজন আর জিকোকে ধাতানি দিলাম দাঁতে দাঁত ঘষে, ‘জোরে বাতাস কর, গাধার দল!’

কিন্তু ওরা দেখি নবাবের কথা না শুনে উল্টো বাতাস করাই বন্ধ করে দিল! আড়চোখে তাকাতেই খেয়াল করলাম, ওরা তাকিয়ে আছে মাঠের উল্টো দিকে। আমিও নজর ফেরালাম সেদিকেই। এবং তাকাতেই চোখ কপালে উঠে গেল। গালিভারস টিম না ওটা? চোখ কচলে নিলাম বার দুয়েক।

সুজন তোতলাচ্ছে, ‘সু সু সুপারম্যান!’

ওর দেখাদেখি জিকোও, ‘গা গা গালিভারস টিম!’

আমার মাথা থেকে মুকুটটা পড়ে গেল স্যাঁৎ​ করে!

বজলু ভাই সুপারম্যান

দিনের আলো কমে আসছে। আমরা বসে আছি স্কুলের কৃষ্ণচূড়াগাছটার নিচে। সারি সারি বেঞ্চ পেতে দেওয়া হয়েছে। সামনের মঞ্চে স্কুলের স্যার আর গণ্যমান্যরা। আমাদের চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে এলাকাবাসী। একের পর এক ইভেন্টের ফল ঘোষণা হচ্ছে। আমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ উঠে দাঁড়াতেই উল্লাসে ফেটে পড়ছে সবাই। কিন্তু আমি যেন সেসব দেখেও দেখছি না, শুনেও শুনছি না! কখন ঘোষণা করবে যেমন খুশি তেমন সাজো কম্পিটিশনের ফল! বুক ঢিপঢিপ ঢিপঢিপ ঢিপঢিপ...কতক্ষণ এভাবে চলেছে জানি না। একসময় মিশুক কনুই দিয়ে গুঁতো মারতেই হুঁশ ফিরে পেলাম। আর শুনলাম, ‘যেমন খুশি তেমন সাজো বিভাগে প্রথম হয়েছে...না না হয়েছেন...বজলুউউউর রহমান! আমাদের বজলুর রহমান...!’

আর কিছু শোনার সময় আছে? বজলু ভাই সুপারম্যানকে কাঁধে তুলে আমরা যেন উড়ে চলেছি মঞ্চের দিকে। চারপাশ থেকে সবাই চিৎ​কার করছে, ‘বজলু ভাই! সুপারম্যান! বজলু ভাই! সুপারম্যান...!’